admin
প্রকাশ: ২০২১-০১-২২ ১৮:৫৮:৪১ || আপডেট: ২০২১-০১-২২ ১৮:৫৮:৪৩
বগুড়ার গাবতলীতে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে প্রবাসীর সাত বছরের শিশু হানজালাকে হত্যা করেছে অপহরণকারীরা। উপজেলার রামেশ্বরপুর ইউনিয়নের নিশুপাড়া গ্রামে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। ঘটনার ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফোনে শিশুটির লাশের সন্ধানও দেয় অপহরণকারীরা।
পরে বাড়ির পাশে পুকুর থেকে হাত-পা ও মুখ বাধা পঁচন ধরা লাশ উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার শিশুর বাবা গাবতলী থানায় হত্যা মামলা করেছেন। এর আগে শিশুর বাবা-মা অপহরণকারীর ফোন নম্বর নিয়ে গাবতলী থানায় গেলেও তারা সন্তান উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, লাশ বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। শিশুটি অপহরণ ও হত্যায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে অভিযান চলছে। শিশুটির মৃত্যুতে আত্মীয়-স্বজনসহ পুরো গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তারা অবিলম্বে ঘাতকদের গ্রেফতার ও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
শিশু হানজালা গাবতলী উপজেলার নিশুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মালয়েশিয়া প্রবাসী পিন্টু মিয়ার ছেলে। সে নিশুপাড়া বটতলা হাফেজিয়া মাদ্রাসায় হেফজ বিভাগে পড়তো।
গত ১৩ ডিসেম্বর বিকাল ৩টার দিকে শিশু হানজালা বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ওইদিনই গাবতলী থানায় জিডি করা হয়। ছেলেকে অপহরণের খবর পেয়ে পিন্টু মিয়া দুদিন পর বাড়িতে ফেরেন। অপহরণকারীরা মা তাসলিমা বেগমকে ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে তিন লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না পেলে ছেলেকে হত্যা করা হবে বলে জানিয়ে দেয়।
শিশুর বাবা-মা ফোন নম্বর নিয়ে গাবতলী থানায় গেলেও তারা সন্তান উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা পাননি। ৪০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে অহরণকারীরা শিশুর মাকে জানায় তার ছেলের লাশ পলিথিনে মুড়িয়ে ইট বেঁধে বাড়ির পাশে পুকুরে ডুবিয়ে রাখার কথা।
অপহরণকারীর দেওয়া তথ্য মতে রাতেই ওই পুকুর থেকে শিশু হানজালার লাশ উদ্ধার করা হয়। গাবতলী থানা পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে দেয়। পিন্টু মিয়া বিদেশ থাকায় এর আগেও দুর্বৃত্তরা তার স্ত্রীকে ফোন করে দুই লাখ টাকা ধার চেয়েছিল।
গাবতলী থানার ওসি নুরুজ্জামান রাজু জানান, শিশুর বাবা শুক্রবার অপহরণ ও হত্যা মামলা করেছেন। তিনি জানান, শিশুটিকে উদ্ধারে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। প্রথমে অপহরণকারী জিআরপি পুলিশের এসআই ফারুক সেজে ফোন দিয়ে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। তদন্ত করে জানা যায়, জিআরপি পুলিশে ওই নামে কোনো কর্মকর্তা নেই। এরপর থেকে ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অপহরণকারী ফোনে হত্যার কথা ও লাশের সন্ধান দেয়। পুলিশ কর্মকর্তারা আশা করেন, এ নম্বরের সূত্র ধরেই শিগগিরই ঘাতককে শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হবে।
সুত্রঃ যুগান্তর ।