, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন ভারতের আবারো বিরোধীতা”

প্রকাশ: ২০২১-০১-০৩ ০০:৩২:৩৯ || আপডেট: ২০২১-০১-০৩ ০০:৩২:৪১

Spread the love

রোহিঙ্গা প্রশ্নে ভোটাভুটিতে আগের অবস্থানেই থাকলো চীন ও ভারত। রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের সংখ্যালঘু ইস্যুতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের কর্ম অধিবেশনে
উত্থাপিত প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন আর বরাবরের মতো নীবর থেকেছে ভারত। তবে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আফ্রিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নয়টি দেশ তাদের অবস্থানে নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন এনেছে। অতীতে সেশনে উপস্থিত তবে ভোট প্রদান থেকে বিরত থাকলেও (এবস্টেইন) এবার ক্যামেরুন, ইকুয়েটরিয়াল গিনি, নামিবিয়া, কেনিয়া, লেসেথো, মোজাম্বিক, তানজানিয়া, পালাউ ও সলোমন দ্বীপপুঞ্জ প্রায় জোটবদ্ধভাবে নীরবতা ভেঙে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। আগে তাদের নীরবতাকে মিয়ানমারের পক্ষে পরোক্ষ অবস্থান বলে বিবেচনা করা হতো। গত বৃহস্পতিবার রাতে নিউ ইয়র্কস্থ জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ওই ভোটাভুটি হয়। এতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১৩০ আর বিপক্ষে পড়ে ৯ ভোট। ওই ভোটাভুটি অর্থাৎ জাতিসংঘে রোহিঙ্গা বিষয়ক রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার বিষয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা, বিচার-বিশ্লেষণ, হিসাব- নিকাশ চলছে।
জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন রাখাইন-বিষয়ক পরামর্শক কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করা ডাচ্‌ কূটনীতিক লেটেশিয়া ভ্যান্ডেন অ্যাসাম শুক্রবার এক টুইট বার্তায় ভোটাভুটির বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। সেখানে তিনি ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে উত্থাপিত একটি প্রস্তাবের ভোটাভুটির সঙ্গে এবারের ভোটের তুলনা করেন। তার বিশ্লেষণে উপরোল্লিখিত আফ্রিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় নয় দেশের অভূতপূর্ব পরিবর্তন অর্থাৎ মিয়ানমারের বিপক্ষে ভোট দেয়ার ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে উঠে এসেছে। কূটনৈতিক সূত্র মতে, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য গঠিত কমিটি আইআইএমএম’র জন্য তহবিলসহ আরো কিছু বিষয়ের কারণে জাতিসংঘের ভোটাভুটি পিছিয়ে যায়। যার প্রেক্ষিতে ২০২০ সালের শেষদিন, একই সঙ্গে জাতিসংঘের শেষ কর্ম অধিবেশেনে রোহিঙ্গাসহ মিয়ানমারের থাকা সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার সুরক্ষা বিষয়ক প্রস্তাব নিয়ে ভোট হয় এবং এটি ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে পাস বা গৃহীত হয়। বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩১শে ডিসেম্বরের ওই ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের বিপক্ষে অর্থাৎ মিয়ানমারের পক্ষে ছিল চীন, রাশিয়া, বেলারুশ, কম্বোডিয়া, লাওস, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম এবং জিম্বাবুয়ে। আর ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার তিন দেশ শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও জাপানসহ ২৫টি দেশ প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে নিজেদের বিরত অর্থাৎ উপস্থিত তবে নীরব (অ্যাস্টেইন) থেকেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) গত বছরের নভেম্বের জাতিসংঘের তৃতীয় কমিটিতে একটি প্রস্তাবটি আনে। ইইউ এবং ওআইসি’র প্রস্তাবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) অন্তবর্তীকালীন আদেশ, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) তদন্ত শুরুর প্রসঙ্গ এবং রোহিঙ্গা ও সংখ্যালঘু অন্য জনগোষ্ঠীর মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অব্যাহতভাবে বঞ্চিত করার মতো বিষয়গুলো ছিল। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়া, প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টিসহ আরো কিছু বিষয়ে মিয়ানমারকে পদক্ষেপ নেয়ার কথাও ছিল ওই প্রস্তাবে। কূটনীতিক সূত্র বলছে, গত নভেম্বরে সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে মিয়ানমারের বিরোধিতা সত্ত্বেও ইইউ এবং ওআইসি’র প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। সেই প্রস্তাবের ওপর এবার বছরের শেষদিনের কর্ম অধিবেশনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময়ও মিয়ানমার বিরোধিতা করে। জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ পরিষদের কর্ম অধিবেশনে প্রস্তাবটি নিয়ে সিদ্ধান্তের আগে মিয়ানমার এ নিয়ে ভোটাভুটির আহ্বান জানায়। তাদের আহ্বানেই কর্ম অধিবেশনে ভোট হয়। যাতে থার্ড কমিটিতে প্রাপ্ত ভোটের চেয়েও কম ভোট পায় মিয়ানমার। সুত্রঃ মানবজমিন।

Logo-orginal