, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

সীমাহীন ব্যাটিঙ ব্যর্থতায় কপালে জুটেছে লজ্জার হার

প্রকাশ: ২০২১-০২-১৪ ১৭:৪১:৫২ || আপডেট: ২০২১-০২-১৪ ১৭:৪৪:৪৫

Spread the love

ঢাকা টেস্ট জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হাতো ২৩১ রান। লক্ষ্যটা ছোট হলেও এমন স্কোর তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই বাংলাদেশের। নতুন করে সেই রেকর্ড আর গড়তেও পারেনি মুমিনুল শিবির। সীমাহীন ব্যাটিঙ ব্যর্থতায় কপালে জুটেছে লজ্জার হার। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২১৩ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ঢাকা টেস্টে ১৭ রানের দারুণ জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম টেস্টে তিন উইকেটে জয় পেয়েছিল সফরকারীরা। ফলে দুই ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল ব্র্যাথওয়েট শিবির। ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা পেল টিম বাংলাদেশ।

প্রথম ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছিল ৪০৯ রান। জবাবে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করে ২৯৬ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভালো করতে পারেনি। অল আউট হয় ১১৭ রানে। তাতেই বাংলাদেশের জয়ের টার্গেট দাড়ায় ২৩১ রানে। সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ গুটিয়ে যায় ২১৩ রানে।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা দারুণ। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ছন্দপতন স্বাগতিক শিবিরে। ইতোমধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে অনেকটাই ধুকছে বাংলাদেশ।

উদ্বোধনী জুটিতে দারুণ করেন তামিম ও সৌম্য। এই জুটিতে পঞ্চাশ পার করে বাংলাদেশ। দলীয় ৫৯ রানের মাথায় দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট। আউট করেন সৌম্য সরকারকে। কর্নওয়ালের হাতে ক্যাচ দেয়ার আগে সৌম্য করেন ৩৪ বলে ১৩ রান।

এর ১৯ রানের মধ্যে দুটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। দলীয় ৭০ রানে বিদায় নেন হার্ড হিটার ওপেনার তামিম ইকবাল। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৮তম ফিফটি করে তিনিও ব্র্যাথওয়েটের শিকার। ৪৬ বলে নয় চারে ৫০ রান করেন তামিম। ব্র্যাথওয়েটেরই নিরীহ এক বলে আলতো ড্রাইভ করে ক্যাচ দেন শর্ট কাভারে, যে ফাঁদটি পেতে রাখা স্রেফ ওই শটের জন্যই!

এরপর কর্ণওয়ালের আঘাত। বিদায় করেন অফ ফর্মে থাকা নাজমুল হোসেন মান্তকে। চা বিরতির ঠিক আগে কর্নওয়ালের বল ফ্লিক করতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্তও। ৩১ বলে দুই চারে ১১ রান করা শান্ত ক্যাচ দেন মোজলির হাতে।

সেখান থেকে মুশফিক-মুমিনুলকে দলকে সাময়িক স্বস্তি দেন। দল পার করে একশ। ১০১ রানের মাথায় নেই এবার অভিজ্ঞ মুশফিক। ওয়ারিক্যানের বলে উইকেটের পেছনে ডি সিলভার হাতে ক্যাচ দেন তিনি। অথচ এই বিপদ মূহুর্তে মুশফিকের থাকাটা খুব জরুরি ছিলেন। ৩০ বলে এক চারে ১৪ রান করে ফেরেন তিনি। এই জুটিতে আসে ২৩ রান।

বড় জুটির খুব দরকার ছিল। কিন্তু সেটাই হচ্ছিল না। জুটি বড় হয়নি মুমিনুল-মিঠুনেরও। দলীয় ১১৫ রানের মাথায় কর্নওয়ালের দ্বিতীয় শিকার হন মিঠুন। ১২ বলে ১০ রান করে তিনি ক্যাচ দেন বনারের হাতে।
৫ উইকেট যাওয়ার পর লিটন-মুমিনুল আস্থার সাথে খেলতে থাকেন। আশা ছিল এই জুটিকে নিয়ে। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর এই জুটিতেও ছন্দপতন। দলীয় ১৪৭ রানের মাথায় এই জুটি ভাঙেন ওয়ারিক্যান। ফিরিয়ে দেন অধিনায়ক মুমিনুলকে। ৬৮ বলে তিন চারে ২৬ রান করে ফেরেন মুমিনুল। অনেকটাই শঙ্কায় তখন বাংলাদেশ।

শঙ্কা আরো গভীর হয় লিটন ও তাইজুলের বিদায়ে। অথচ শেষ জুটি হিসেবে ভরসা লিটন-মিরাজে। কিন্তু এই জুটি থেকে আসে মাত্র ৬ রান। ৩৫ বলে ২২ রান করে কর্নওয়ালের বলে আউট হন লিটন। দায়িত্ব বর্তায় তখন মিরাজ। স্বীকৃত ব্যাটসম্যান বলতে তখন শুধু তিনিই।

নাইটওয়াচম্যান হিসেবে তাইজুলের বেশ সুনাম আছে। ভাবা হচ্ছিল মিরাজের সঙ্গে পুরোনো তাইজুলের দেখা মিলবে। কিন্তু বিধিবাম। সেই তাইজুলও কর্নওয়ালের বলে এলবির শিকার। ২৫ টি বল মোকাবেলা করে তার সংগ্রহ ৮ রান। ১৬৩ রানে বাংলাদেশের নেই আট উইকেট। হারের শঙ্কা তখন প্রবল টাইগার শিবিরে।

নবম জুটিতে নাঈম হাসানের সঙ্গে এগিয়ে চলেন মিরাজ। টানটান উত্তেজনায় চলে ব্যাটিং। এই জুটিতে রান আসে ২৫, ৩৩ বলে। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট। খুব বোকার মতো আউট হন নাঈম। কোন ব্যাখ্যা ছাড়াই। ব্র্যাথওয়েটের নিরীহ বল খেলারই চেষ্টা করেন নাই নাঈম। বল আঘাত হানে নাঈমের প্যাডে। আঙুল তোলেন আম্পায়ার। ২০ বলে ১৪ রান করে ফেরেন নাঈম।

শেষ জুটিতে রাহীর সাথে মিরাজের কিছু ছক্কা চার টাইগার ভক্তদের নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করে। স্কোর বাড়তে থাকে সময়ের তালে তালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। মেহেদী হাসান মিরাজকে কর্নওয়ালের ক্যাচ বানিয়ে দারুণ জয়ে মাতেন ওয়ারিক্যান। ২১৩ রানে অল আউট বাংলাদেশ। রোমাঞ্চের জয়ে উল্লাসে মাতে ক্যারিবীয় শিবির।

৫৬ বলে ৩১ রান করেন মিরাজ। ১৪ বলে কোন রান না করেও অপরাজিত ছিলেন রাহী। বল হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৪ উইকেট নেন কর্নওয়াল। তিনটি করে উইকেট নেন ব্র্যাথওয়েট ও ওয়ারিক্যান। সুত্র: নয়া দিগন্ত”

Logo-orginal