n_carcellar1957
প্রকাশ: ২০১৫-০৬-২৫ ২৩:১৪:২২ || আপডেট: ২০১৫-০৬-২৬ ০০:১৪:২০
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম,চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়া ও চন্দনাইশের তিন লক্ষাধিক মানুষ। এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া শঙ্খ ও ডলু নদীর ভাঙনে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় এসব এলাকার অনেক মানুষ অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। বান্দরবান-কেরানিহাট মহাসড়কের মাহালিয়া ও বাজালিয়া বড়দুয়ারা এলাকা ডুবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বান্দরবানের সঙ্গে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া, জনার কেওচিয়া, তেমুহনী, বাজালিয়া, মাহালিয়া, বড়দোয়ারা, কাটাখালির কূল, পশ্চিম বাজালিয়া, হিন্দুপাড়া, পুরানগড়, ধর্মপুর, কালিয়াইশ, কাঠগড়, নলুয়া, খাগরিয়া, পশ্চিম আমিলাইষ, পূর্ব আমিলাইষ, হিলমিলি, কাঞ্চনা, দক্ষিণ চরতি, মধ্যম চরতি, উত্তর ব্রাহ্মণডেঙ্গা, উত্তর তুলাতলি, দক্ষিণ ব্রাহ্মণডেঙ্গা, দ্বীপ চরতি, কাঞ্চনা, সোনাকানিয়া, এওচিয়া, পশ্চিম ঢেমশা, ঢেমশা, মরিচ্চা পাড়া, উত্তর ঢেমশা, বিল্লাপাড়া, ছগীর মোহাম্মদ পাড়া, বড়ুয়াপাড়া, হিন্দুপাড়া, উত্তর ছদাহা ও লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি, বড়হাতিয়া, কলাউজান, পদুয়া এবং চন্দনাইশ উপজেলার ধোপাছড়ি, দোহাজারী, বৈলতলী, বরমা, হাশিমপুর ও বরকল এলাকার প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পরেছে।
সাতকানিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সারোয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, সাতকানিয়ার আমিলাইষের প্রায় ১৫ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। প্রায় শতাধিক বসতঘর শঙ্খ ও ডলু নদীর পানিতে ডুবে গেছে। এলাকার বসতবাড়ি হারানো মানুষগুলো অত্যন্ত মানবেতর দিনযাপন করছে।
ঢেমশার চেয়ারম্যান রমজান আলী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ জানান, এলাকার প্রায় বিশ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে ঘরে পানি প্রবেশ করায় অনেকে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।চরতির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, তার এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি। গত তিন দিনে দক্ষিণ চরতী, মধ্যম চরতী, উত্তর তুলাতলী, ব্রাহ্মণ ডেঙ্গা এলাকার শতাধিক বসতবাড়ি শঙ্খ নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। মানবেতর জীবনযাপন করছে এসব মানুষ।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, টানা বর্ষণে পাহাড়ি ঢলের পানিতে বান্দরবান কেরানিহাট মহাসড়কের অংশ তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। রাস্তার ওপর দিয়ে লোকজন পারাপাড় হচ্ছে নৌকায় করে। ভেসে গেছে মৎস্য খামারের কয়েক কোটি টাকার মাছ।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে পড়ায় অনেক স্কুল ও মাদ্রাসায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। উপজেলার বেশীরভাগ এলাকার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দুর্ভোগের কারণে স্থানীয়ভাবে তাদেরকে বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী বিতরণ চলছে। এ ছাড়া পানিতে বান্দরবান সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় উভয় পাশে আটকা পড়েছে অসংখ্য যাত্রীবাহী গাড়ি।
লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়ার চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী চৌধুরী জানান, আন্ধারমানিক, ধলিবিলা, জঙ্গল পদুয়া, মালি পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় বিশ হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়া চুনতিরও প্রায় পনের হাজারের অধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
তাছাড়া চন্দনাইশ-সাতকানিয়া এলাকার কয়েক হাজার একর সবজিখেত পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় পাঁচকোটি টাকার মৌসুমি সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী, দিয়াকুল, জামিজুরী, চাগাচর, বরমা, বাইনজুরীর ১০ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়ে পরেছে।
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে