, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

নো অ্যানসার

প্রকাশ: ২০১৫-০৬-০৭ ০৬:১৮:০০ || আপডেট: ২০১৫-০৬-০৭ ০৬:১৮:০০

Spread the love
 – জোহরা উম্মে হাসান
Add-rtmnews24 copy
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পদত্যাগের খবরটা বেশ মনে ধরেছে আমিন খান ব্যাপারির । সবাই তাঁকে বলে চলেছে , বিনা ভোটের মন্ত্রী । এসব কথা শুনে শুনে নাকি কান ঝালা পালা হয়ে গেছে তার । সকলকে কিছু একটা দেখিয়ে দেয়ার জন্য তিনি এক্ষণে একটা রেজিগনেশন লেটার হাতে নেতার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন !
নেতা তাঁকে যদিও খুব স্নেহ করেন , তবুও তাঁর এহেন হটকারিতায় বেশ ক্ষুব্ধ হলেন তিনি । জিজ্ঞাসু নয়নে বললেন , তোমার বউ জানে , তুমি যে ইস্তাফা দিতে এসেছো ?
আমিন ব্যাপারি নাক মুখ চুলকিয়ে মাথা নাড়িয়ে দশ বছরের অনুগত পোলার মত মিন মিন করে যা বল্লেন তাঁর অর্থ গিয়ে দাড়াল , না , কিছুই জানে না সে ।
তাহলে ? নেতা অবাক হয়ে আবারও তাকে প্রশ্ন করলেন ।
আমিন ব্যাপারি এবার একটু বেশ খোলা মেলা ভাবেই বললেন , স্যার আপনি তো জানেন সবই । ইদানীং শরীরও ভাল যাচ্ছে না । প্রেশার , ডায়াবেটিক !
তো এখন কি করবে ? তোমার বউয়ের সাথে মিলে মিশে গরু ছাগল এর ব্যবসা করবে ? নেতা একটু মশকরার সুরেই কইলেন ।
আমিন ব্যাপারি একটা ক্লিষ্ট হাসি টেনে বলল , জি স্যার , বউ ছেলে মেয়েদেরও তো কিছু পাওনা আছে ! তবে কার জন্যই বা কার ঠেকে থাকে ! আমাকে ছাড়াও যে তারা বেশ চলতে পারবে , জানি বটে ।
তা বটে । নেতা মহাবিজ্ঞের মত মাথা নাড়ালেন । আর মনে মনে বললেন , অসম্ভব । কারো জন্য নাকি কারো কিছু ঠেকে থাকে না । থাকে , থাকে ! ও ব্যাটা ব্যাপারি বুদ্ধু তার কি বোঝে ! তারপর আপন মনে একটা গভীর আত্নতীপ্তির ভাব নিয়ে বললেন , এই আমি গদিতে আসীন না থাকলে এই দেশটা কি আর আগের মত চলবে হে ?
নেতাকে তো শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবলে চলে না । অনেককে নিয়েই ভাবতে হয় । তিনি ব্যাপারির এই স্বেচ্ছায় সোনার গদি ছেঁড়ে ছুড়ে দিয়ে বনবাসি হওয়ার ব্যাপারটাকে অত সহজ চোখে দেখলেন না । বিষয়টা কি রকম ? ব্যাপারির কথায় আর কাজের মধ্যে মিল হচ্ছে আবার হচ্ছেও না ।
দীর্ঘক্ষণ বাদে আমিন ব্যাপারি মাথা চুলকাতে চুলকাতে বলে উঠলেন, হুজুর , আমি কেজরিওয়ালের মতো হতে চাই । দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল । চলে গেলে তার মত তামাম জনগন আমার যেন জন্য হায় হায় করে ! আমার সেই খায়েস ! আর এখনি সেই সময় !
নেতা তৎক্ষণাৎ অতি রুষ্ট মুখে বললেন , কোথায় সে আর কোথায় তুমি ? তার হাজারো এজেন্ডা । আম জনতার খেদমত । আর তোমার কি ? তোমার তো কোন এজেন্ডা ফেজেন্ডা নাই হে । নিজের খেদমত ছাড়া ।
ব্যাপারি যদিও নেতার চেয়ে কম করে হলেও বছর পনেরোর বড় , তবুও নেতা তাকে তুমি করেই ডাকেন । তাতে এত দিন মনে কিছু নেন নি ব্যাপারি । নেতার তুই তোকারি মানে শীতের রাতে মুগ ডাল খিচুরি আর মুরগি ভুনী ! কিন্তু আজ মনে হচ্ছে , নেতা তাঁকে এমন তুই তোকারি না করলেও পারেন । মন্ত্রী করেছেন বলে কি তিনি তাঁর মাথাটা কিনে নিয়েছেন ! নিজের খেদমত ? কি এমন ধন সম্পদের মালিক হয়েছে সে ? অন্যদেরটা দেখলে—–।
তবে হাঁ , এ মুহূর্তে কেজরিওয়ালের সাথে সরাসরি নিজের তুলনা করাটা ঠিক হয় নাই তার । তুলনা যে করতেই হবে তার কি মানে আছে । তুলনা ছাড়া মানুষ বাঁচে না , নাকি ? নেতা বোধহয় বেশ একটু বেজারই হলেন । যাগগে যাক , সে নিজেই যখন নিজের ইচ্ছায় চলে যাচ্ছে , তখন কে কি ভাবল তা নিয়ে মাথা না খাটালেই চলবে ।
তাইতো , তার এজেন্ডা কি । ব্যাপারি মনে মনে ভাবতে লাগলেন । জীবনের প্রথমে খুলনা জেলার এক প্রত্যন্ত গায়ে চিংরি মাছের চাষ করতেন । প্রথমে নিজের হালের জমিতে । তারপর একটু একটু করে জমি লিজ নেয়া। এরপর নিজের নগদ টাকা দিয়ে জমির পর জমি কেনা ।
এই যে তিন তিন বার মন্ত্রী তিনি নিজের এলাকার , তারপরও স্থানীয় লোকজন তাঁকে ‘মাছুয়া’ বলেই ডাকে । এই সব মূর্খ , বেইমান লোকের উন্নতির জন্য আর কি নতুন পরিকল্পনা থাকবে তার মাথায় । সরকারি টাকায় রাস্তা , ঘাট, স্কুল , কলেজ ও তো কম হোল না তাঁর অঞ্চলে । তারপরও নাকি তারা খুশী না। চাই আরও চাই । ব্যাটারা বোঝেনা যে , নিজের ট্যাঁকের টাকা খরচ করে কোন নেতাই দেশের উপকার করে না । সরকারি টাকা না মিললে , সে কি গাছ থেকে বড়াই ফল পারার মতো ঝাঁকি মেরে উঠোনে রাশি রাশি টাকার ছয়লাব ঘটায় দেবে ?
যা হোক সেদিন নেতার কাছ থেকে এরকম রিক্ত হাতেই ফিরতে হোল আমিন ব্যাপারিকে । ইস্তাফা পত্রটা হাতেই ধরা । তবে নিজের আলিসান বাড়ীটার অন্দরমহলে ঢুকবার আগে কি মনে করে তিনি পত্রটা সযত্নে বুক পকেটে রেখে দিলেন ।
মন্ত্রী মহোদয়ের গাড়ির শব্দ পেয়ে বয় বেয়ারা দারোয়ান সব মোটামুটি সজাগ হোল । এখনো তো তাঁর হাতে অনেক ক্ষমতা । কানা ঘুষা শোনা যাচ্ছে বটে মন্ত্রিত্ব ইস্তাফা দিতে চলেছেন তিনি । কিন্তু এসব রাজনীতিবিদদের কথার কি সত্যতা আছে ? আজ এ কথা তো কাল সে কথা । সে যাই হক, ব্যাপারির আগমনে বিন্দু মাত্র সচেতন হোলনা তাঁর বউ মোসাম্মদ আলেয়া বেগম ওরফে মনি ।সে কি যেন একটা ছোটখাট ব্যাপার নিয়ে ব্যস্ত ছিল , স্বামীকে দেখে সে ব্যস্ততা আরও বেড়ে গেল ।
বউ এর দিকে একবার আড় চোখে চেয়ে ব্যাপারি বেড রুমের দিকে এগোলেন । রুমে গিয়ে আগে তিন মিনিট বিছানায় আধ শোয়া অবস্থায় বিশ্রাম নিলেন। মন্ত্রীর গাড়ী ! তবুও চলতি পথে ট্রাফিক জ্যামের হ্যাফা কম সামলাতে হয় না । আজও হোয়েছে তেমনি । যা হোক আর কদিন পর থেকে তো সাধারণ পাবলিক হয়ে যাবেন তিনি । আগে পিছে পুলিস গাড়ির বহর ভেপু বাজিয়ে গোল্লা ছুট খেলবে না । সব খেলাই শেষ । তাও ভাল । নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো । একটা নির্ভেজাল প্রেমময় জীবন তিনি উপভোগ করতে চান । জীবনের এই প্রায় শেষ সময়গুলোতে ।
বিশ্রাম নেয়া শেষ হলে ব্যাপারি তাঁর ধরা চূড়া ছাড়লেন । ডিসেম্বরের শেষ । জানুয়ারীর শুরু । শীতের তবুও যেন চিলতে গরজ নেই যাবার । বাতাস আটা গাড়ীতেও কেমন যেন শীত শীত লাগে । এটা নাকি বয়সের ব্যারাম।
তবে বয়স বাড়ার কথা মনে করলে মনের ভিতর থেকে কেমন যেন একটা তীব্র ব্যথার খোঁচা অনুভব করেন তিনি । বয়স যদি বেড়েই গেল , তবে সালমাকে আর নুতুন করে কি দেবেন তিনি । তাকে তো কিছু দিতেই হবে , নাকি সে খালি খালি হাতে ফিরে যাবে আগের মতোই ।
প্রায় পঁচিস বছর পরে দেখা পাওয়া ছেলেবেলার প্রেমিকাকে এবার কোনক্রমেই নিরাশ করতে চান না তিনি । এখন পর্যন্ত নতুন সম্পর্কটা কেবল ফোনে ফোনেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বটে , কিন্তু তা জেঁকে বসার আর বোধ হয় বেশিদিন বাকি নেই ।
ফিরতি পথে অবশ্য ব্যাপারির তাঁর গার্ল ফ্রেন্ড সালমার সাথে বার তিনেক মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে । কিন্তু তা অত্যন্ত চুপিসারে। গাড়ীর ড্রাইভার বা সামনের কর্তব্যরত পুলিস যেন মনে করে , স্যার ম্যাডামের সাথে আলাপ করেছেন।দু দূ বার তাঁকে সালমাই কল করেছিল । একবার তিনি নিজে। মন মানে না তাই !
কয়েক মাস আগে এভাবে অতি সঙ্গোপনে ফোনে ফোনে সালমার সাথে কথা কইতে গিয়েই স্ত্রী আলেয়া বেগমের হাতে ধরা পড়ে গিয়েছিলেন তিনি । এরপর আর কি ? গেরস্তের সামনে চোর ধরা পড়লে সব চোরের যা হয় , তারও তাই হয়েছে । এখন আলেয়ার সাথে তার যেটুকু ভাব ভালবাসা আছে তার সবটাই লোক দেখানো । মেকী !
তবে ভাব ভালবাসা নেই বলে অবশ্য আলেয়া তাকে এখনও একেবারে নিঃস্বত্ব মুক্তি দেয় নাই । একটা রফা দফা চলছে । এবং তা অত্যন্ত সূক্ষ্মতার সাথে । এ সময়টা ব্যাপারির মনে হচ্ছে আলেয়া যেন আগের সেই গেয়ো মূর্খ মেয়ে মানুষটি নেই । তাঁর জীবনশক্তি আর মনোবলও বেড়েছে ঢের । বিপদকালে মানুষের যেভাবে বাড়ে , সেভাবেই কি ?
ব্যাপারি যদিও আলেয়াকে এখন তার পহেলা শত্রু মনে করছেন , তবুও তো এখনো সব শেষ হয়ে যায় নি । হারজিতের খেলা তো এখনো চলছেই । চলুক । দেখা যাক কে হারে , আর কে জেতে ।
এ বাড়ীর এখনকার পরিস্থিতি অন্য রকম । বাড়ীর ড্রাইভার থেকে শুরু করে দারোয়ান , মালি, গরু ছাগল হাস মুরগি দেখার তাগড়া জোয়ান লোকটা , কিচেনের বাবুর্চি , আয়া এরা এখন যেন সবাই বেগম সাহেবারই লোক। কিন্তু মাত্রর কদিন আগের অবস্থা ছিল ঠিক এর বিপরীত । বাড়ীর প্রত্যেকটা কিট পতঙ্গ থেকে শুরু করে প্রতিটা প্রানি ব্যাপারির ভয়ে থরথর করে কাঁপত । এমনকি আলেয়া বেগম ওরফে মনিও তাঁর সাথে হিসাব করেই কথা বলত ।
বউ এর এত জড়তা টরতা অবশ্য কোন দিনই ভাল লাগেনি ব্যাপারির । বিশেষত মন্ত্রী হবার পর থেকেই । আর তার সহকর্মীরা সবাই যখন ফিট ফাট বউ নিয়ে ঘুরতো , আর তখন ব্যাপারির বঊ কোন পাটি ফারটিতে তো যেতই না , আর গেলেও এমন করে নিকাব এর ফাঁসে নিজেকে জড়িয়ে রাখতো যে কারো পক্ষে তাঁর মুখের চিলতে আদল দেখারও জো ছিল না । দেখতে শুনতে এমনিতে আলেয়া মন্দ না । বাপ মার পছন্দ করা মেয়ে । প্রেমিকা সালমার ব্যাপারে তাঁর পরিবারের প্রথম থেকেই আপত্তি । বেশী সাজ গোঁজ করা মেয়েরা নাকি ভাল হয় না । সেকেলে সব দৃষ্টিভঙ্গি ! আর যত সব আজগুবি কথা ।
ব্যাপারির নিজেরও তো তিন তিনটে মেয়ে আছে । তাঁর মেয়েরা সব নাম করা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । সাজগোঁজও তো তারা ভালোই করে । তাদের সাজাগোঁজা নিয়ে আজ তো আর কারো আপত্তি নেই । কিন্তু তাদের সময়ে ? ওরে বাবা , যত দোষ যেন মেয়ে মানুষের !
যা হোক মেয়েদের পর , ব্যাপারির পর পর তিনটা ছেলে । ছেলেগুলো সবার ছোট । ওরা ছোট বলে আগে আক্ষেপ হত তার । এখন হয় না । হলে যে কি হতো । মনে মনে শিউড়ে ওঠে সে এক চোট । পেটাতো , মায়ের হয়ে নির্ঘাত মার দিত তারা তাকে । বাপের এই বুড়ো বয়সে ভীমরতি । মেয়েদের বোধ করি , এ পযন্ত তেমন কিছুই বলেনি তার মা । তারা তো আগের মতোই ঘুরছে, ফিরছে ।
সালমার ভালবাসায় যে এক্ষণে দিওয়ানা ব্যাপারি , তা কেবল আলেয়া জানে । আর সালমা তো জানেই । অনেক কথা হয় পুরান দিনের ভালবাসার বান্ধবীর সাথে । কথা যেন ফুরায় না দু জনের । সেই প্রেমের সময়কার কথা । ব্যাপারি টেনে টেনে পুরানো কথা তোলে । আর অন্য পাশ থেকে সালমা যখন তাকে অহ , নো ডারটি বয় বলে সম্বোধন করে , তখন তাঁর এ কথাগুলো যেন মুগ্ধ ভালবাসায় ব্যাপারির দম বন্ধ করে দেয় । মনে মনে ভাবে , আহা, কি করেই যে সালমা এত স্মার্ট হল , বলনে , চলনে । তাঁর যে বয়স পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই , তা তাঁকে দেখে কে বললে ? আর হিসাব নিকেশেও তো দারুন পোক্ত হয়ে উঠেছে সে । ব্যাপারির সব আয় ব্যয়ের কথা তার জানা। ব্যাপারি অবশ্য এতে কোন দোষ দেখে না । মেয়েরা জন্মেই একটু হিসেবী হয় । আর তাছাড়া প্রায় বছর পাঁচেক হয় , স্বামী হারিয়েছে বেচারী । সে একটু হিসেবি হবে না তো আর কে হবে ।
ব্যাপারি মনে মনে অবশ্য ভেবেই রেখেছেন , বিয়ের পরে তাঁর প্রোপার্টির একটা বড় অংশ তিনি সালমার নামে লিখে দেবে । যেমন , বনানীর সাড়ে তিন হাজার স্কয়ার ফিটের এপার্টমেন্টটা । তবে হ্যাফাও আছে । মেয়ে, কেবলই মেয়ে হওয়াতে আগের সব প্রোপার্টির সিংহ ভাগের মালিক এখন আলেয়া । সালমাকে এত কথা বলা হয় নি বটে । আর প্রেম মধুরতার ক্ষণে এসব হিসাব টিসাবের কথা এতো মানায়ও না ।
ব্যাপারি ভাবে , নেতাকে সাহস করে বললেই হতো তার মিশনের কথা ! তাঁর নিজের ব্যক্তিগত এজেন্ডার কথা । তাহলে তো অনেকটাই চুকেবুকে যেত । সে যে সপ্তম এডওয়ার্ডের মত রাজ সিংহহাসন ছেড়ে লেডী সিমসনকে নিয়ে উধাও হচ্ছে , তা নেতাকে বলা উচিত ছিল তার । তবে এই রাজপুত্রের গল্পটা তার অন্যের কাছ থেকে শোনা । আগে সেই রাজকুমারকে ভীষণ গদ্ভব মনে হতো তাঁর । এখন মনে হয় , আহা , এই না হলে প্রেম ! এ রকম নিখাদ প্রেম আছে বলেই তো পৃথিবীটা চলছে ।
অবশ্য এখন এ সংসারে প্রেম ট্রেম বলে কিছু নেই । নেই কারো ইচ্ছে অনিচ্ছের কোন মূল্য । আসল কথা হোল তার কথায় কিছুই চলছে না আর । সব কলকাঠি এখন আলেয়া বেগমের হাতে । কোথা থেকে সে যে পেয়ে গেল এমন অসুর শক্তি !
ব্যাপারি ঝিমুচ্ছিল আর ভাবছিল । এরপর কি হবে । ভাবনার বেশীর ভাগ অংশই সালমাকে ঘিরে । যা বলতেও লজ্জা লাগে আর ভাবতেও । তারপরও আহা কি মধুর মধুর সে ভাবনাগুলো !
আলেয়ার হিসাব গোনা । ব্যাপারিকে গো টো বলা সেই সব মধুর সম্ভাষণ , সে তো আজ পাচ ছ মাস আগে থেকেই ছেড়ে দিয়েছে । লোকজন যাতে না বোঝে , তাই তো এক ঘরে এক বিছানায় কাল কাটানো । এক্ষণে সব বাদ ছাদ দিয়ে আলেয়া তাঁর রেজিগনেশন লেটারের কথাটাই জিজ্ঞেস করলো । কি বললেন নেতা ঐ ব্যাপারে ?
ব্যাপারি ভাব করা হাসি মুখে ধরে বলল , হবে , আর একটু ভাববার সময় দিয়েছেন তিনি ।
আলেয়া বলল , জানোতো মন্ত্রিত্ব না ছাড়লে আমি কিন্তু কোন মতেই তোমাকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি দেব না ।
এই দ্বিতীয় বিয়ের সাথে ইস্তাফা পত্রের কি সম্পর্ক তা আজতক ব্যাপারির বোধগম্য হোল না । কি লাভ এতে আলেয়ার । হয়তো মেয়েলি ঈর্ষা । আরেকজনকে মন্ত্রীর বউ হতে দেবে না সে , কেবল বউ হতে দেবে । তাতে আপত্তি নেই । আহা এতদিনের ভালবাসার কি নমুনা ! আসলে আলেয়া হয়তো তাঁকে কোনদিনই ভাল বাসেনি । কেবল স্ত্রীর দায়িত্বই পালন করেছে হিসাব নিকেশ করে । যাক , এখন এসব অতীত । সালমার ভালবাসার কাছে সব মিথ্যে , সব ঠুনকো ।
আশ্চর্য ! একটু পরে ব্যাপারির লাল ফোনটা বেজে উঠলো । নেতা তার ইস্তাফা পত্র নিজে চেয়ে পাঠিয়েছেন । শুনে সামান্যতর মন খারাপ হোল না তার । যাক যা গেছে তা যাক । এবার নতুন প্রেমময় জীবন ।
ব্যাপারি সাহেব পরম নিশ্চিতে ঘুমোচ্ছিলেন । পরম আদরের সে ঘুম । চরম ভালোলাগার । বিছানার একদিকে রাখা টিভির নবটা ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে কে যেন অন করেই রেখেছিল আগে ভাগে !
এবারে একটা খবরে দারুন চমকিত আর আতংকিত হলেন তিনি । আর সে সাথে মহাঅবাকও হলেন , এমন অবাক তিনি জন্মেও হন নি ।
এই মাত্র আলেয়া বেগম —— মন্ত্রিত্বের ভার গ্রহণ করলেন। উল্লেখ্য তাঁর স্বামী — ব্যাপারী স্ব- ইচ্ছায় শারীরিক কারণে মন্ত্রির দায়িত্ব থেকে ইস্তাফা দিয়েছেন।
ব্যাপারি ঢূলু ঢূলু চোখে বার বার , অন্তত ২৫ বার তাঁর প্রেমিকা সালমার চেনা নাম্বারটার প্প্রানপণে টিপ দিলেন । ওপাশ থাকে কেবলই ভেসে এল নো অ্যানসার ।