, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

লালখানবাজারের সেই লাশ কার : রাব্বির না খোকনের !

প্রকাশ: ২০১৫-০৬-০৫ ০৫:০০:৩৭ || আপডেট: ২০১৫-০৬-০৫ ০৬:০৩:২৭

Spread the love

imageপুলিশের উদ্ধার করা লাশ নিজের ছেলে রাব্বির বলে দাবি করে তা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করেন হেলাল মন্ডল। কিন্তু খুনীরা বলছে, লাশটি রাব্বির নয়, খোকনের। রাব্বিকে নয় , তারা খুন করেছে খোকনকেই।

চমক এখানেই শেষ নয়। খুনীরা আরো জানালো, লাশটি যেই রাব্বির বলে দাবি করা হয়েছে সেই রাব্বি ছিলো খুনীদেরই দলে।
এ নিয়ে মাহা ফাঁপরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। লাশটি আসলে কার, রাব্বির না খোকনের-এই রহস্যের জট খুলতে ডিএনএ টেস্ট ছাড়া যে তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। আর এই পথেই এগুনোর কথা জানিয়েছে সিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ৪ টার দিকে গোয়েন্দা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে লাশ সনাক্তে ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন উপ-কমিশনার (ডিবি) কুসুম দেওয়ান।
হেলাল মন্ডল কেন লাশটি তার ছেলে রাব্বির বলে দাবি করল আর রাব্বি যদি খুনই না হয় তবে সে এখন কোথায়-এই রহস্যও ভেদ করতে হবে পুলিশকে। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ নিজের ছেলেকে বাঁচাতে হেলাল মন্ডল এই কাজ করে থাকতে পারেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ মে বিকাল সাড়ে চারটায় খুলশী থানাধীন লালখান বাজারস্থ পোড়া কলোনীর মুখে গ্রিণ ডেল্টা হাউজিং এর নির্মাণাধীন ভবনের এক কোণে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয় । এরপর জনৈক হেলাল মন্ডল মর্গে গিয়ে অজ্ঞাতনামা লাশটি তার নিজের ছেলে রাব্বির (২১) বলে সনাক্ত করেন এবং নিজে বাদী হয়ে খুলশী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে লাশ বগুড়া নিজ বাড়ীতে নিয়ে দাফন করেন তিনি।
এদিকে মামলা দায়ের করার পর থানা পুলিশের পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি টিম ঘটনার মোটিভ উদঘাটনে কাজ শুরু করে। মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের উপ- পুলিশ কমিশনার কুসুম দেওয়ান এর তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার এসএম তানভীর আরাফাতের নেতৃত্বে পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লালখান বাজার এলাকা হতে রাজু নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে।
পরবর্তীতে সদরঘাট শাহজাহান হোটেলের সামনে থেকে টেম্পু শরিফ, সুন্দরী শরিফ এবং সোহাগ নামে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
তাদেরকে গ্রেফতারের পর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে আসল ঘটনা। এসময় তারা পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে তারা ঘটনায় জড়িত ছিল। এছাড়া মৃত ব্যক্তিটি রাব্বি নয় তার নাম খোকন। রাজু, টেম্পু শরিফ, সুন্দরী শরিফ, সোহাগ, রাব্বি, আলী, বাবুল ড্রাইভার এবং খোকন পরস্পর বন্ধু ছিল। এরা সবাই মিলে খুন করে খোকনকে।
তারা প্রতিদিন ডেল্টা বিল্ডিং আড্ডা দিত এবং নেশা করত। গত ২৮ মে সাড়ে এগারটার সময় আড্ডারত অবস্থায় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে খোকন এবং টেম্পু শরিফের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে খোকন তার হাতে থাকা ছুরি নিয়ে টেম্পু শরিফকে মারতে উদ্যত হয়। তখন সুন্দরী শরিফ একটি ইট দিয়ে খোকনের মাথার পিছন দিকে আঘাত করে। এসময় খোকন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এর পর অন্যরা একসাথে পাশে লুকিয়ে রাখা ছুরি নিয়ে খোকনের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশ টেনে এক কোণায় নিয়ে ব্যানার, বস্তা, ইট দিয়ে চাপা দিয়ে রাখে।

বৃহস্পতিবার বিকালে সিএমপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে খুনের ঘটনার তথ্য তুলে ধরেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার কুসুম দেওয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় , গ্রেপ্তারকৃতরা হল মোঃ শরিফ আহম্মেদ প্রকাশ টেম্পু শরিফ (২৩), মোঃ শরিফ রহমান প্রকাশ সুন্দরী শরিফ (২৩), মোঃ সোহাগ (২৯) ,মোঃ রেজাউল করিম প্রকাশ রাজু (২৫)। এ ঘটনার সাথে আরো বেশ কয়েকজন জড়িত বলে পুলিশ জানায়।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার কুসুম দেওয়ান জানান, প্রকৃত পক্ষে লাশটি কার তা নিশ্চিত করতে আদালতের অনুমতি নিয়ে লাশের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। এ ছাড়া হেলাল মন্ডল লাশটি তার ছেলের বলে কেন সনাক্ত করলো , লাশটি যদি খোকনের হয় তাহলে রাব্বি কোথায় তা তদন্ত করে দেখা হবে।
সুত্র: সিটিজি নিউজ কম

Logo-orginal