n_carcellar1957
প্রকাশ: ২০১৫-০৭-৩১ ১৫:৫৭:৪৯ || আপডেট: ২০১৫-০৭-৩১ ১৫:৫৭:৪৯
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, কক্সবাজার: ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করায় আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা নিজ ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন। শুক্রবার ভোর থেকেই তাদের ঘরে ফেরা শুরু হয়। কোমেনের আঘাতে কক্সবাজার জেলার টেকনাফের সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
তবে এখনো উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে জোয়ারের পানি রয়ে গেছে। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে জোয়ারের পানি ঢুকে ফের প্লাবিত হয়েছে উপকূলীয় বেশকিছু নিচু এলাকা। সামুদ্রিক নৌযানগুলো এখনো নিরাপদ স্থানে নোঙর করে আছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারি আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমূল হক জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ চট্টগ্রাম হয়ে সন্দ্বীপ উপকূল অতিক্রম করার পর ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে দেওয়া ৭ নম্বর বিপদ সংকেত তুলে নিয়ে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত মাছ ধরার সব ট্রলারকে নিরাপদে থাকতে বলা হয়েছে। শুক্রবার থেকে কক্সবাজারে ভারি বর্ষণ কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় কোমেনের আঘাতে কুতুবদিয়ার উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের বেড়িবাঁধে ক্ষতি হয়েছে। পূর্বাংশেও ক্ষতির চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। এগুলোর সংস্কার দ্রুত করা না হলে জোয়ারের পানি ঢুকে ফের দুর্ভোগে পড়বেন দ্বীপবাসী।
টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইসমাইল জানান, দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে শাহপরীর দ্বীপ। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে দ্বীপের বিশাল একটি অংশ। জোয়ারের পানি ঢুকে বীজতলা, ফসলী জমি, চিংড়ি ঘের ও ঘরবাড়ি তলিয়ে গেছে। দুর্গত এলাকার বাসিন্দারা শুকনো খাবার খেয়ে সময় কাটাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। টেকনাফ সদর থেকে কোনো মালপত্র আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। ফলে অর্থনৈতিকভাবেও চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এখানকার বাসিন্দারা।
সেন্টমার্টিনের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, কোমেনের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেন্টমার্টিনে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় গাছচাপা পড়ে মোহাম্মদ ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। দু’টি ফিশিং ট্রলার, একটি সার্ভিস বোট, ছোটবড় আটটি নৌকা ডুবে গেছে। উড়ে গেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। সব মিলিয়ে অন্তত তিন কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মহেশখালীর সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু বকর জানান, কোমেনের আঘাতে দ্বীপের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক স্থানে ঘরবাড়ি ও গাছপালা উপড়ে গেছে। তবে বড় ধরনের ক্ষতি হয়নি।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা জানান, আশ্রয় কেন্দ্রে তিন লাখ মানুষের মধ্যে শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। আগাম প্রস্তুতি থাকায় ঘূর্ণিঝড় কোমেনের আঘাতে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। যেখানে ক্ষতি হয়েছে সেখানে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এন এ কে