, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Avatar Arfat

ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি কার্যকর

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-৩০ ০৯:৫২:৫৩ || আপডেট: ২০১৫-০৭-৩০ ০৯:৫২:৫৩

Spread the love

85665_supreme-court-yakub-memon-650_650x400_61438210267

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ইন্টা: ডেস্কঃ   মুম্বাই বোমা হামলায় অভিযুক্ত ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি কার্যকর করেছে ভারত। নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে তার এই দণ্ড কার্যকর করা হয়।

১৯৯৩ সালের ওই ধারাবাহিক হামলায় ২৫৭ জন নিহত হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতি বুধবার রাতে তার প্রাণভিক্ষার দ্বিতীয় আবেদনও খারিজ করে দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালেই ইয়াকুব মেমনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

এর আগে ভারতে প্রায় সাড়ে বাইশ বছর আগেকার ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ইয়াকুব মেমনের প্রাণভিক্ষার শেষ আবেদনও বুধবার সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দেয়।

ভারতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা খুবই দুর্লভ। ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে।

ওই হামলার অর্থায়ন ও জঙ্গীদের প্রশিক্ষণের খরচ বহন করার জন্য ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির সাজা দিয়েছিল টাডা কোর্ট, এবং সুপ্রিম কোর্টও তা বহাল রাখে।

ভারতে ১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত ইয়াকুব মেমনের ৫৩তম জন্মদিন বৃহস্পতিবার। আর এদিন সকালেই নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে তার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

তার মৃত্যু পরোয়ানাকে বেআইনি বলে দাবি করে ফাঁসি রদ করার জন্য ইয়াকুব যে আবেদন করেছিলেন, বুধবার বিকেল চারটা নাগাদ তিনজন বিচারপতির বেঞ্চ তা নাকচ করে দেয়।

মহারাষ্ট্রের সরকারি কৌঁসুলি উজ্জ্বল নিকম জানান, যে সব যুক্তিতে ইয়াকুব মেমন তার মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন তার প্রতিটিই শীর্ষ আদালত খারিজ করে দিয়েছে। হামলার ষড়যন্ত্রে তার তেমন বড় ভূমিকা ছিল না এবং সে কারণে তাকে কঠোর সাজা থেকে রেহাই দেওয়া উচিত – ইয়াকুব মেমনের এই যুক্তিও সুপ্রিম কোর্ট মানেনি।

কিন্তু ইয়াকুব মেমনের প্রাণভিক্ষার প্রশ্নে গত বেশ কদিন ধরে ভারতে যে তুমুল বিতর্ক চলছে, তা প্রায় নজিরবিহীন বলা যেতে পারে।

দেশের বেশ কয়েকশো বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, আইন বিশেষজ্ঞ এবং সিপিএম-এনসিপি-বিজেপিসহ বিভিন্ন দলের এমপি-রা সরাসরি রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি লিখে বলেছেন, তার ফাঁসির সাজা মওকুফ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া যেতে পারে।

ওই পিটিশনে অন্যতম স্বাক্ষরকারী কে টি এস তুলসী বলছিলেন, ‘ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলার ষড়যন্ত্রে ইয়াকুব মেমন জড়িত ছিল তাতে কোনও সন্দেহ নেই, কিন্তু এটাও ঠিক যে তদন্তে সে ভারতকে খুবই সাহায্য করেছে, পাকিস্তানের মিথ্যে ধরিয়ে দিতে তার বিরাট ভূমিকা ছিল। আমরা বলছি, শুধু এ কারণেই তার মৃত্যুদণ্ড লাঘব করা যেতে পারে।’

ইয়াকুবের স্ত্রী রাহিন মেমনও সুপ্রিম কোর্ট ও দেশের রাষ্ট্রপতির কাছে তার স্বামীর প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন। রাহিনের যুক্তি ছিল, গত ২১ বছর ধরে ইয়াকুব ও তার পরিবার চরম দুর্দশার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছে, অনেক কষ্ট করেছে।

তাই সরকারের কাছে তাঁর আবেদন, দীর্ঘ কারাবাসের পর আরও অনেকেরই যেমন ফাঁসি মকুব করা হয়েছে তেমনটা করা হোক ইয়াকুবের ক্ষেত্রেও।

কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সব আবেদন-নিবেদনে কোনও ফল হয়নি।

ওদিকে মুম্বাইতে ৯৩ সালের সিরিয়াল বিস্ফোরণে যারা প্রিয়জনদের হারিয়েছেন, তারাও ইয়াকুবের ফাঁসি বহাল রাখার জন্য জোরালো প্রচার শুরু করেছিলেন। এমনই একজন হলেন তুষার দেশমুখ, যিনি ওই জঙ্গী হামলায় নিজের মাকে হারান।

বুধবার মহারাষ্ট্রর মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাডনবিশের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি বলেছেন, ‘যেদিন আমি বোমায় মায়ের ছিন্নভিন্ন দেহটা দেখেছিলাম – সেটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে কালো দিন। যারা ফাঁসি মওকুব করার কথা বলছেন তারা তো দেশের আইনবিরোধী কথা বলছেন। আর কজন সই করেছেন ওই আবেদনে? আমি তো মাত্র দুঘণ্টায় ফাঁসির পক্ষে ষোলোশো সই পেয়েছি।’

ফলে ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির পক্ষে আর বিপক্ষে, দুরকম যুক্তি নিয়েই চলছে তুমুল বাদানুবাদের মধ্যেই বৃহস্পতিবার ভোরে নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে মুম্বাই বিস্ফোরণে প্রথম কোনও অভিযুক্তের ফাঁসি কার্যকর করা হলো।

যদিও ওই হামলায় অভিযুক্ত টাইগার মেমন বা দায়ুদ ইব্রাহিমের মতো মূল ষড়যন্ত্রীরা এখনও রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরেই।- বিবিসি

 

 

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এ এইচ বি

Logo-orginal