, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

ভবন সংকট: প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস চলছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-৩০ ১২:২২:৩৫ || আপডেট: ২০১৫-০৭-৩০ ১২:২২:৩৫

Spread the love

mail.google.com
এম মাঈন উদ্দিন,আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, মিরসরাই:  ভবন সংকটের কারণে চরম বিপাকে পড়েছে উপজেলা এসএম সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চারলেন প্রকল্পের কাজের জন্য বিদ্যালয়টির ৩টি ভবনের মধ্যে দুই ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। দুই কক্ষের আরেকটি ভবন থাকলেও তাতে রাখা হয়েছে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় জিনিস।

 

২০১৪ সালে এপ্রিল মাস থেকে ভবন সংটকের কারণে পাশের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে চলছে এসএম সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্লাস।

 

অন্য বিদ্যালয়ের ভবন ব্যবহার করে ক্লাস করাতে গিয়ে শিক্ষার মানও ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ফলাফলের দিক থেকে এগিয়ে থাকা এ বিদ্যালয়ের প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দিয়েছে।

 

এসএম সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মজহারুল ইসলাম জানান, ১৯৪৯ সালে তৎকালীন দক্ষিণ তালবাড়িয়া অবৈতনিক মক্তবকে এসএম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বিদ্যালয়ে বাড়তে থাকে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ৫শতাধিক শিক্ষার্থী ও ১২জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে।

 

১৯৭৬ সাল থেকে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার কারণে ১৯৮৫ সালে সরকার বিদ্যালয়টিকে উপজেলার মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেব স্বীকৃতি দেন। ২০০৮ সালে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগে এসএম সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩য় স্থান অর্জন করে।

 

২০১৩ সালেও এ বিদ্যালয় থেকে ১৬জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পায় । কিন্তু ভবন সংকটের কারণে পাঠদান কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায় ২০১৪ সালে বৃত্তি পায় মাত্র ৬ জন শিক্ষার্থী। যা গত একযুগের মধ্যে হতাশাজনক ফলাফল বলে জানান তিনি।

 

মজহারুল ইসলাম আরো জানান, বিদ্যালয়ের জন্য ৮০ দশকে সরকারি ভাবে দুই কক্ষের একটি ভবন নির্মান করা হয়। এরপর ২০০২-০৩ অর্থ বছরে ৪ কক্ষের একটি এবং ২০০৩-০৪ অর্থ বছরে দুই কক্ষের আরেকটি ভবন নির্মান করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চারলেন প্রকল্পের কাজ শুরু হলে ৪ কক্ষের ভবন ও দুই কক্ষের দুইটি ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়।

 

অন্য ভবনটিতে বিদ্যালয়ের আসবাবপত্র রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে পাশ্ববর্তী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ তাদের ভবনে সকাল ৭টা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস করা সুযোগ করে দেন। সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্লাস শেষ করতে হয়।

 

এখন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে তাদের বিদ্যালয় খালি করে দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছে।

 

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা নিলীমা ভৌমিক জানান, অন্যান্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী যখন বিদ্যালয়ে আসে আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তখন ছুটি দিয়ে দিতে হয়। সকালে ক্লাস করতে এসে অনেক শিক্ষার্থী ভালো ভাবে পড়া বুঝে নিতে পারে না।

 

বর্তমানে ৮৭জন শিক্ষার্থী প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা দিবে। তাদেরকে ভালো ভাবে ক্লাস করানো যাচ্ছে না। অন্য বিদ্যালয়ে কতদিন শিক্ষা কার্যক্রম চালানো যায়। এদিকে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করানো জন্য যেমন কোন জায়গা নেই তেমনি শিক্ষক শিক্ষিকাদের বসারও কোন স্থান নেই। ভবন সংকটের কারণে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে। এর সমাধান না হলে পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়টি বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশংকা করেন।

 

এস এম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী কানিজ ফাতেমা জানান, গত এক বছর ধরে অনেক কষ্টে তাদের ক্লাস করতে হচ্ছে। সামনে সমাপনী পরীক্ষা হলেও শ্রেনী সংকটের কারণে ভালো ভাবে বিদ্যালয়ে পাঠদান করাতে পারছেন না শিক্ষকরা। অন্য শ্রেনীগুলোর অবস্থাও একই। উপজেলার মডেল এ বিদ্যালয়টি চলমান সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন এ ছাত্রী।

 

মিরসরাই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গোলাম রহমান চৌধুরী এস. এম সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার অসুবিধার হচ্ছে স্বীকার করে বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিদ্যালয়টির জন্য ভবনের বরাদ্দ দিতে আমরা চিঠি দিয়েছি।

 

বিদ্যালয়টির জায়গা নিয়েও কিছু সমস্যা রয়েছে। শীঘ্রই ভবনের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এ এইচ বি

Logo-orginal