, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় ছেলের হাতে বাবা খুন

প্রকাশ: ২০১৫-০৭-১৬ ১৩:১৬:৪৭ || আপডেট: ২০১৫-০৭-১৬ ১৩:১৭:৩৮

Spread the love

গাজী জয়নাল আবেদীন, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
Murder news-16-07-15 আরটিএমনিউজ২৪ডটকম,চট্টগ্রাম: রাউজানের ডাবুয়ায় নিহত রতন ঘোষের খুনের ঘটনায় জড়িত আপন পুত্র ঘাতক টিসু ঘোষ খুনের দায় স্বীকার করে গত মঙ্গলবার আদালতে জবান বন্দি প্রদান করেছেন। আদালতে গত ১৪ জুলাই সকাল ১১টার সময় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে মাহফুজুল হাসানের আদালতে তাকে হাজির করা হলে দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত জবানন্দি রেকর্ড করা হয়।

 

 

এতে ঘাতক টিসুর জবানবন্দি উদ্ধৃত্তি দিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই খলিলুর রহমান বলেন, পিতার সম্পত্তি নিজ নামে (টিসু ঘোষ) লিখে দিতে গত ৮ জুলাই রাতে শয়ন কক্ষ থেকে নির্মিতব্য পাকা দালানে নিয়ে যায়। এতে বেশ কিছুক্ষন বুঝানোর পর পিতা রতন রাজি না হয়ে উল্টো ছোট পুত্র টিসুর আচরনে ক্ষুুদ্ধ হয়ে পিতা রতন তাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার ধমকি দেন।

 

এরই জের ধরে ব্যাপক বাকবিতন্ডা ও উত্তেজনার এক পর্যায়ে মাটি কাটার কমদা দিয়ে পুত্র টিসু পিতা রতনের মাথার বাম পাশে আঘাত করলে ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়ে পিতা রতন নুয়ে পরে। এতে এক পর্যায়ে মা শয়ন কক্ষ থেকে দৌড়ে এসে বাধা দিতে চাইলে মাকেও মাথায় আঘাত করে টিসু। পরে ঘাতক পুত্র টিসু ঘোষ পিতা রতনের মৃত্যু নিশ্চিত করে তাকে সিড়িঁর নিচে রেখে পাশের বাড়ীর এক সিএনজি চালককে নিয়ে গুরুতর আহত মা আন্না ঘোষকে নিয়ে প্রথমে জে.কে মেমোরিয়াল হাসপাতাল পরে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায়।

 

 

এই ঘটনাকে তিনি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে রূপালী নামে এক আত্মীয়কে পিতা ডাকাতের হাতে নিহত ও মা আহত বলে খবর দিলে তারা এসে দেখে রতন এখনো জীবিত আছে। তাকে ভোর ৪টার সময় চমেক হাসপাতাল ও পরে মেট্রোপলিটন হাসপতালে নিয়ে গেলে ১০ জুলাই তার মৃত্যু ঘটে।

 

এতে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ পিপিএম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই খলিলুর রহমামের নেতৃত্বে একদল পুলিশের ব্যাপক তদন্ত ও দক্ষতায় অবশেষে ঘটনার ৬ দিনের মাথায় ঘটনার উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়।
উলে­খ্য ৮ জুলাই গভীর রাতে ডাবুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মাহজন বাড়ীতে আপন পিতা রতন ঘোষ ও মা আন্না ঘোষকে পুত্র টিসু ঘোষ কুপিযে জখম করার পর চিকিৎসাধিন অবস্থায় ১২ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্য ৬টা দশ মিনিটে পিতা রতন ঘোষ (৬০) চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে মারা যান।

 

 

যে ঘটনার সুত্রধরে ঘরের ইলেক্ট্রিক রতন ঘোষকে আটক করা হয়েছিল।এই ঘটনার পর থেকে নিহত রতন ঘোষের ছেলে টিসু ঘোষের আচার আচরত রহস্যবৃত্ত মনে হলে পুলিশের সন্দেহ সৃষ্টি হয়। পরে বিভিন্ন আলামতের ভিত্তিতে তাকে সোমবার সকালে আটক করা হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করেন।

 

 

এই ঘটনাটি টিসু ঘোষ বাড়ীর কাউকে না জানিয়ে তার মাকে নিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যান। অথচ তার বাবা রতন মাটিতে পরে থাকে। এতে তাকে বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন তার বাবা মারা যাওয়ায় তাকে না নিয়ে মাকেই নিয়ে গেছেন।

 

 

তবে তার মা যে হাসপাতালে ছিল বলেছে সেখানে পুলিশ গিয়েও তার মাকে পাওয়া যায়নি। এতে পুলিশের আরো স্বন্দেহ বাড়তে থাকে। পরে তাকে কেন দুবৃত্তরা আঘাত করে নি পুলিশের এমন প্রশ্নের জবাবে সে বলেন, সে দ্রুত পালিয়ে যায়। কিন্তু তখনও কেন প্রতিবেশিদের জানানো হয়নি।

 

 

এমনকি যে সিএনজি করে মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেও লুকোচুরি করা হয়। এসব সন্দেহের ভিত্তিতে গত সোমাবার সকালে তাকে আটক করার পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সেই এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে জানান। তিনি পুলিশকে আরো বলেছেন, কথিত এক প্রেমিকার ফাঁদে পরে প্রবাসি বড় ভাই বিষু ঘোষ (২৭) কে বঞ্চিত করে সম্পত্তি একাই হাতিয়ে নিতে পিতা রতনকে হত্যার পরিকল্পনা নিয়ে ঘটনাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে অপচেষ্টা করেছিল।

 

 

এই খুনের ঘটনায় ঘরের ইলেকট্রশিয়ান রতন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে জেলে পাঠানো হয়। কিন্তু ঘটনার ৬ দিন পর মূলঘটনার রহস্য উদ্ঘাটিত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে রাউজান থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন,  মঙ্গলবার নিহতের খুনি টিসু আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার পর আটক রতনকে মুক্তি দেওযার ব্যবস্থা করা হবে।

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

 

Logo-orginal