, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Avatar Arfat

ইয়াকুব মেমনদের বিচারে ভারতের ‘পক্ষপাত’

প্রকাশ: ২০১৫-০৮-০২ ১৪:৪৫:১৫ || আপডেট: ২০১৫-০৮-০২ ১৪:৪৫:৪৩

Spread the love

 মেনন

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ইন্টা: ডেস্কঃ১৯৯২ সালে ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অন্তত ৯০০ লোক (প্রকৃতপক্ষে ২০০০ এবং তাদের বেশিরভাগই মুসলিম) মারা গিয়েছিল।

এর এক বছর পর ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় ২৫৭ জন লোক।

ভারতেরর ধারাবাহিক সরকারগুলো মুম্বাই বিস্ফোরণের বিচার নিয়ে তোড়জোড় চালালেও ’৯২ সালের দাঙ্গা নিয়ে তাদের মাথাব্যথা নেই বললেই চলে।

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি বিএন শ্রীকৃষ্ণ এমনই মত দিয়েছেন ।

এনডিটিভিকে তিনি বলেন, ওই দুটো ঘটনায় রাষ্ট্র ‘পক্ষপাত’ দেখিয়েছে। মুম্বাই বিস্ফোরণের মত ‘প্রবল উদ্দীপনা’ দেখা যায়নি ’৯২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিচারে।

বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ ’৯২ সালের ওই দাঙ্গার তদন্ত কমিশনের প্রধান ছিলেন।

মুম্বাই বিস্ফোরণে জড়িত থাকার সন্দেহে ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি কার্যকর করার পর ইমেইলে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে শ্রীকৃষ্ণ এসব মন্তব্য করেন।

মেমনের ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে ভারতজুড়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। বহু লোক বলছেন, তাকে ফাঁসিতে ঝোলানো ঠিক হয়নি। মৃত্যুর আগে মেমনও নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছিলেন।

মেমনের বিচারের ক্ষেত্রে ‘নির্বাচিত বিচারের’ অভিযোগ উঠেছে।

বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ বলেন, যে উদ্যম নিয়ে মুম্বাই বিস্ফোরণের বিচার হচ্ছে সেই একই উদ্যম বাবরি মসজিদ কেন্দ্রিক দাঙ্গার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। এমনকি কংগ্রেস সরকারও অভিযুক্ত বিজেপি নেতা এবং তাদের অনুসারীদের বিচারে আগ্রহ দেখায়নি।

তবে বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ মনে করেন ইয়াকুব মেমন আইনি সব সুযোগ পেয়েছেন। তার আশা একদিন ‘৯২ সালের দাঙ্গারও বিচার হবে।

’৯২ এর দাঙ্গার ঘটনায় শ্রীকৃষ্ণ প্রয়াত শিব সেনা নেতা বাল ঠ্যাকারের ভূমিকার মূল্যায়ন করে তাকে ‘কার্যত জেনারেল’ আখ্যা দিয়েছিলেন।

’৯২ সালের দাঙ্গায় ৯০০ লোক নিহতের পর ২২ বছর পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ জনকে সাজা দেয়া হয়েছে।

বিপরীতে মুম্বাই বিস্ফোরণে ২৫৭ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০০ জনকে সাজা দেয়া হয়েছে।

তদন্তে প্রতিবেদনে বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেয়া, ’৯২ সালের দাঙ্গা এবং ’৯৩ সালের মুম্বাই বিস্ফোরণের মধ্যে ‘কার্যকর সম্পর্ক’ রয়েছে বলে মত দিয়েছেন।

অনেক সিনিয়র আইনজীবী যুক্তি দেখাচ্ছেন যে ’৯২ সালের দাঙ্গা আর ’৯৩ সালের বিস্ফোরণের মত সন্ত্রাসবাদী কাজ সমপর্যায়ের নয়। তাদের মতে,  দাঙ্গা পরিকল্পনা করে হয় না।

এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলে বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণ বলেন, ‘দাঙ্গা পরিকল্পনা করে হয় না বলে যে তত্ত্ব দেয়া হচ্ছে তাতে আমি বিশ্বাস করি না। বরং আমার তদন্ত কমিশনের কাছে যে প্রমাণাদি উপস্থাপন করা হয় তাতে ভিন্ন কথাই বলা হয়েছে।’

তার কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি যে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলছেন তা কোথায় নিহিত?

বিচারপতি শ্রীকৃষ্ণের জবাব: ‘যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন তাদের মনের ভেতর পক্ষপাত বিরাজ করছে এবং তা রাষ্ট্রযন্ত্রকে প্রভাবিত করছে।’

 

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/ এ এইচ বি

Logo-orginal