, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল, দুর্ঘটনার আশংকা

প্রকাশ: ২০১৫-০৮-১৫ ১৬:২২:০৫ || আপডেট: ২০১৫-০৮-১৫ ১৬:২২:০৫

Spread the love

এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই প্রতিনিধি

Mirsarai Baryarhat Rode Photo আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, চট্টগ্রাম: মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে অসংখ্য যাত্রীবাহী ও মালবাহী গাড়ি। বছরের পর বছর ধরে পাল্টানো হচ্ছে না জোড়া তালি দেয়া বেইলি ব্রিজগুলো।

 

 

 

ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশী ভারি যানবাহনগুলো চলছে অবাধ। বিভিন্ন সময় ঘটে যাওয়া ট্র্যাজেডির মতো আবারো যে কোন সময় ঘটবে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। কিন্তু এ নিয়ে যেন মাথা ব্যথা নেই কারো।

 

 

 

বারইয়াহাট থেকে করেরহাট বাজার পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই কয়েকটি বেইলি ব্রিজের উপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। এছাড়া করেরহাট থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত রয়েছে আরো ২৮ টি এমন ব্রিজ।

 

 

কখনো বিভিন্ন অংশ ভেঙে গিয়ে ধসে পড়ছে । আবার জোড়াতালি দিয়ে সংস্কার। কিন্তু ব্রিটিশের নির্মাণ করা এসব বেইলি ব্রিজ পাল্টে পুর্নাঙ্গ ব্রিজ করার প্রস্তাবনা গত এক দশক আগে থেকেই। কিন্তু তা বাস্তবে রূপ পাচ্ছেনা।

 

 

 

কয়েক বছর পূর্বে কয়েকটি দুর্ঘটনার পর ব্রিজগুলোর পাশে টাঙিয়ে দেয়া হয় ‘মালামালসহ ৫ টনের অধিক ওজনের যানবাহন চলাচল নিষেধ’। কিন্তু কেউই মানছেন না এই নিষেধাজ্ঞা। দিনের পর দিন ঝুঁকি বাড়লেও ৫ টনের বেশি মালামাল নিয়েই চলছে গাড়ি। ব্রিজটি ভেঙে পড়লে খাগড়াছড়ির সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাবে মিরসরাইসহ উত্তরাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা।

 

 

 

ঢাকা-ফেনী-খাগড়াছড়ি ও খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রামের সংযোগস্থল মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের পুরাতন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এবং বারইয়ারহাট-খাগড়াছড়ি সড়কে এসব ব্রিজ অবস্থিত।

 

 

 

Mirsarai Baryarhat Rode Photo (1)

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, করেরহাটে দুটি, বালুটিলায় দুটি, তুলাতলীতে একটি, ভাঙা টাওয়ারে একটি, কয়লা বাজারে একটি এবং বাগান বাজারে একটি বেইলি ব্রিজের অবস্থা খুবই নাজুক। এ ছাড়াও অর্ধশত বছর আগে নির্মিত ২০টি নেরো ব্রিজেও (সরুপুল/সেতু) দৈন্যদশা বিরাজ করছে। চালকদের দাবি, নেরো ও বেইলি ব্রিজগুলোর পরিবর্তে শিগগিরই স্থায়ীভাবে ব্রিজ নির্মাণ না করা হলে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এছাড়া মিরসরাই-ছাগলনাইয়া সীমান্তবর্তী ফেনী নদীর ওপর শুভপুর ব্রিজের অবস্থাও খুবই আশঙ্কাজনক। অর্ধশত বছরের বেশি সময় পার করা এই ব্রিজটির মরণফাঁদগুলো সুস্পষ্ট হলেও কোনো সংস্কার কাজের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ভারসাম্য হারিয়ে ব্রিজের মাঝামাঝি ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে।

 

 

 

বারইয়াহাট-খাগড়াছড়ি সড়কের নিয়মিত বাস চালক আবু তাহের জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করছেন কয়েক হাজার যাত্রী। যাত্রীবাহী বাস ছাড়াও এ সড়কে চলাচল করে কাঠ, বাঁশ, বালিসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক-মিনিট্রাক। করেরহাট-রামগড় ট্রাক-মিনিট্রাক চালক সমবায় সমিতির সভাপতি ফিরোজ কোম্পানি জানান, ঢাকা-খাগড়াছড়ি সড়ক ফেনী জেলার সঙ্গেও সহজ যোগাযোগের মাধ্যম। কিন্তু ব্রিজগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও এর সংস্কার বা পুনর্র্নিমাণে নজর নেই সংশিষ্ট বিভাগের। এ ব্রিজগুলো এখন এতোটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে, এর ওপর দিয়ে পায়ে হেঁটে যেতেও আতঙ্কে থাকেন স্থানীয়রা। তিনি আরো বলেন, অযতœ-অবহেলা ও সঠিক সুরক্ষায় অভাবে ব্রিজগুলেঅ হয়ে পড়েছে হুমকির সম্মুখীন। কিছু অসাধু চক্র ব্রিজের রেলিং চুরি করে নিয়ে যায়। এতে করে যে কোনো সময় বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

 

উপজেলার করেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, ব্রিজগুলো আর সংস্কার নয় পুনঃনির্মাণ করাই জরুরি। কারণ, করেরহাট ও বারইয়াহাট এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন অজানা আতঙ্ক নিয়ে পার হয় সড়কের এসব ব্রিজ।

 

 

 

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশেদুল আলম বলেন, এই সড়কের ৩০টি ব্রিজকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এর তালিকা পাঠানো হয়েছে। তবে বরাদ্দ না পাওয়ায় এ মুহূর্তে এসব ব্রিজ নির্মাণ কিংবা সংস্কার করা হচ্ছে না। তবে কিছু দিনের মধ্যে নতুন একটি প্রকল্পের আওতায় এ সড়কের সবগুলো ব্রিজকে সম্পূর্ণ নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

 

 

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

 

 

 

Logo-orginal