Ziaul Hoque
প্রকাশ: ২০১৫-১১-০৭ ১১:৪১:৫৩ || আপডেট: ২০১৫-১১-০৭ ১১:৪১:৫৩
আরটিএমনিউজ২৪ডটকমঃ সম্প্রতি মা হয়েছেন ভারতের নয়াদিল্লীর লক্ষ্মী। কিন্তু তার মা হওয়ার গল্পটা ঠিক আর দশটা সাধারণ মায়ের মত নয়। ষোল বছর বয়সে জীবন বদলে যাওয়া লক্ষ্মী এখন মেয়ের জন্য স্বপ্ন দেখেন ঘৃণাহীন পৃথিবীর।
মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া লক্ষ্মী ২০০৫ সালে ছিলেন নবম শ্রেণির ছাত্রী। দ্বিগুণ বয়সের এক ব্যক্তির প্রেমের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় এসিড আক্রমণের শিকার হন তিনি।
মাঝখানের দশ বছরে অবশ্য অনেকটা বদলে গেছে লক্ষ্মীর জীবন। এর মধ্যে এসিড আক্রান্তদের নিয়ে কাজ করা শুরু করেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে। আর সেখানে কাজের সুবাদে পরিচয় হয় আলোক দীক্ষিতের সঙ্গে। শেষ কয়েক বছর ধরে একসঙ্গে থাকলেও বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
এর মধ্যে লক্ষ্মী পেয়েছেন বেশ কিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কারও। খোদ মার্কিন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার হাত থেকে সাহসিকতার পুরস্কার নিয়েছেন তিনি। অংশ নিয়েছেন ফ্যাশন শো’তেও। এসিড বিরোধী নানা প্রচারণায় এখন লক্ষ্মী পরিচিত মুখ।
সাত মাসে আগে জন্ম নিয়েছে লক্ষ্মী-আলোকের মেয়ে পিহু। লক্ষ্মী চান, ‘তাঁর মতো মেয়েরও পদবি থাকবে না’।
‘পিহুর জন্মের প্রশংসাপত্র তৈরির সময় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন সব ঠিকই আছে।’
সাত মাস পরে সংবাদমাধ্যমে সন্তানের জন্মের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান, ‘সম্প্রতি লক্ষ্মীর বাবা আর এক ছোট ভাই মারা গিয়েছেন। তাই হইচই করতে চাইনি। নিজেদের কাজ নিয়েও আমরা খুব ব্যস্ত থাকি। মেয়ে জন্মানোর পর থেকেই প্রচারের আলোয় থাকুক, তা-ও আমরা চাইনি। তবে এখন মনে হল, সময় এসেছে সবাইকে সুখবরটা জানানোর।’
পিহুর জন্মানোর পরে যে তাঁদের সম্পর্কটা বদলাবে না তা স্পষ্ট জানান। একসঙ্গে থাকার জন্য বিয়ে নয়, দু’জনের মধ্যে ভালোবাসাটাই দরকার বলে মনে করেন তাঁরা। তিনি আরো বলেন, ‘আমার পরিবার খুব রক্ষণশীল। সম্পর্কটা মানতে বাবা-মায়ের খুব অসুবিধে হয়েছিল। পরে অবশ্য ভালোবাসারই জয় হয়েছে।’
শুক্রবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মা হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন লক্ষ্মী। বলেছেন, ‘অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় খুব দুর্বল ছিলাম। ক্ষত সারাতে অস্ত্রোপচার করতে হয়। চিকিৎসকরা বলেছিলেন নিজের আর সন্তানের খুব যত্ন নিতে।’
‘‘মা হওয়ার পর একটা আতঙ্ক কুড়েকুড়ে খেত। ‘পিহু আমার পুড়ে যাওয়া মুখটা দেখে ভয় পাবে না তো?
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/জেড এইচ