, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Avatar n_carcellar1957

বন্দরনগরী চট্টগ্রামে তীব্র গ্যাস সঙ্কট, জনদুর্ভোগ

প্রকাশ: ২০১৬-০১-১৯ ১০:৫৮:৪১ || আপডেট: ২০১৬-০১-১৯ ১১:০৩:৩৪

Spread the love
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,আরটিএমনিউজ২৪ডটকম

1445941378চট্টগ্রাম: বন্দরনগরী আবার গ্যাস সঙ্কটের কবলে পড়েছে।। গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে গ্যাস সঙ্কটে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছে বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধকোটি মানুষ।

গ্যাসের চাপ কমে গিয়ে দিনের অধিকাংশ সময় জ্বলছে না চুলা। কোনো কোনো এলাকায় গভীর রাতে বাড়ছে চুলার আঁচ। অল্প আঁচে দীর্ঘক্ষণের রান্নায় গৃহিণীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। অনেক এলাকায় সকালের নাস্তা তৈরির আগেই গ্যাস নিবুনিবু পর্যায়ে চলে যায়। বেশিরভাগ এলাকায় দুপুরের খাবার তৈরি করতে বেলা গড়িয়ে বিকাল হয়ে যায়। তবু প্রয়োজনীয় গ্যাস পাওয়া যায় না চুলায়।

রান্নার চুলা জ্বলছে না ঠিক মত, কারখানার চাকা ঘুরছে না, সিএনজি পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও নুন্যতম গ্যাস পাচ্ছে না হাজার হাজার যানবাহন। গ্যাসের চাপ না থাকায় নগরীর অধিকাংশ সিএনজি পাম্প দিনের প্রায় সময় বন্ধই থাকছে।

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (কেজিডিসিএল) সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম অঞ্চলে বর্তমানে ৪৩০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। এর বিপরীতে সরবরাহ মিলছে মাত্র ২৮০ মিলিয়ন ঘনফুট। সর্বশেষ সোমবার জাতীয় সরবরাহ লাইন থেকে চট্টগ্রাম গ্যাস পেয়েছে মাত্র ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। চাহিদার তুলনায় অর্ধেকেরও কম গ্যাস সরবরাহ পাওয়া চট্টগ্রাম মহানগরীতে তীব্র গ্যাস সঙ্কট দেখা দিয়েছে।

কেজিডিসিএল কর্মকর্তারা জানান, গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ভারী শিল্প-কারখানায় দৈনিক মাত্র ১২ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। একইভাবে সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। এরপরও যে সময় সিএনজি ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্যাস পাওয়ার কথা সে সময় গ্যাসের চাপ না থাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে শত শত যানবহনকে।

গ্যাস সঙ্কটের কারণে অনেক যানবাহন মালিক এখন গ্যাসের পরিবর্তে অকটেনে গাড়ি চালাতে বাধ্য হচ্ছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে গ্যাসের এই সঙ্কট আরো তীব্র হয়েছে বলে কেজিডিসিএল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম নাগরিক অধিকার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিদার আশরাফী আরটিএমনিউজ২৪ডটকমকে বলেন, গত প্রায় এক মাসের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ নিয়ে এমন দুরবস্থা চলতে থাকলেও কর্তৃপক্ষ রয়েছে নির্বিকার। প্রায় সাড়ে সাড়ে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট জ্বালানি গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে চট্টগ্রামের গ্রাহকরা গ্যাস পাচ্ছে ২০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস।

দিদার আশরাফী আরও বলেন, গ্যাস সরবরাহ অর্ধেকেরও কম হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রতিদিন গ্যাসের জন্য হাহাকার করছে জনগণ। নগরীর বাকলিয়া, চকবাজার, চাক্তাই, বহদ্দারহাট, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আন্দরকিল্লা এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ না থাকায় জনগণকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

এদিকে নগরীর নাসিরাবাদ, খুলশী, জাকির হোসেন রোড, ষোলশহর, চকবাজার, কাপাসগোলা, বাকলিয়া, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন, বায়েজিদ, হামজারবাগ, আগ্রাবাদ, মাদারবাড়ি, মোমিন রোড, আসকারদীঘির পাড়, আন্দরকিল্লা, আগ্রাবাদ, চান্দগাঁও, বায়েজিদসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বাসিন্দারা। এসব এলাকায় হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোরও একই অবস্থা। গ্যাসের চাপ কম থাকায় দৈনিক রান্না-বান্নার কাজও করতে পারছেন না বলে হোটেল মালিকরা অভিযোগ করেছেন।

চট্টগ্রাম কর্ণফুলী গ্যাস সরবরাহ কর্তৃপক্ষের (কেজিডিসিএল) উপমহাব্যবস্থাপক (বিতরণ) প্রকৌশলী আজিজুল হক আরটিএমনিউজ২৪ডটকমকে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রামে গ্যাসে সঙ্কট চলছে। আমরা রেশনিংয়ের মাধ্যমে সঙ্কট নিরসনের চেষ্টা চালাচ্ছি।

বর্তমানে গ্যাসের সরবরাহ কমার পাশাপাশি চাপ কমে যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে এই কর্মকর্তা বলেন, সোমবার ৪৩০ মিলিয়ন গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ মিলিছে ২০১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। এর ফলে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে।

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম/এন এ কে

Logo-orginal