admin
প্রকাশ: ২০১৬-০৬-০৮ ১৮:৩২:২৭ || আপডেট: ২০১৬-০৬-০৮ ১৮:৩২:২৭
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ক্রীড়া ডেস্কঃ ব্যালন ডি’অর জেতা ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার রিভালদোর কথা মনে আছে? ভয়াবহ অভাবে কেটেছে তার শৈশব ও কৈশর। সাওপালোর সমূদ্র সৈকতে তাকে বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে। পু্ষ্টির অভাবে তার চোখ দুটো ভিতরে ঢুকে গিয়েছিল। এই সময়ের আরেক ব্রাজিলিয়ান মহাতারকা নেইমারের জীবন কাহিনীও হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। তারও বেড়ে ওঠা ব্রাজিলের এক বস্তিতে।
বস্তি থেকে বিশ্বখ্যাত হওয়ার ঘটনা ভুরিভুরি। বাংলাদেশের খ্যাতনামা গলফার সিদ্দিকুর রহমানের গল্পটাও সেরকম। চোখে জল আসার মতো। অভাবের তাড়নায় মাদারীপুরের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে পুরো পরিবার নিয়ে ভাগ্যন্বেশনে স্বপ্নের শহর ঢাকায় চলে আসেন দিনমজুর সিদ্দিকুরের বাবা। সিদ্দিকুরের বয়স তখন ২। ওঠেন ঢাকার ধামালকোর্টের বস্তিতে। সেখানেই অভাবের সঙ্গে নিরন্তর সংগ্রাম করে শৈশব কৈশরের কঠিন দিনগুলো কেটেছে তার। ছয়জনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম সিদ্দিকুরের বাবা। তিন বেলা খাবার জোটেনি তাদের। অভাবের কারণে করা হয়নি লেখাপড়া।
সেই সিদ্দিকুর রহমান আজ বড় তারকা। এশিয়ান গলফের অত্যন্ত বড় নাম। দুবারের এশিয়ান ট্যুর চ্যাম্পিয়ন। গত মাসে মাত্র এক শটের কারণে ইউরোপিয়ান ট্যুর জেতা হয়নি। খেলেছেন বিশ্বকাপ। এবারের রিও অলিম্পিকে উড়াবেন বাংলাদেশের পতাকা।
সময় এখন সিদ্দিকুরের। নামধাম, টাকা, গাড়ি, বাড়ি কী নেই তার? এই যে বিখ্যাত হয়ে ওঠা, এর পেছনে প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে ‘অভাব’। ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপকলে সে কথাই জানালেন এশিয়ার অন্যতম সেরা এ গলফার।
তিনি বলেন,‘এখনও চোখের সামনে ভাসছে অভাবের সেই কঠিন দিনগুলোর কথা। ভালো খাবার তো দূরের কথা, তিন বেলা ভাতই জুটতো না। আর এটাই ছিল আমার স্পিরিট। আমাকে কিছু করতেই হবে। আমাকে যে ভাল খেলোয়াড় হতেই হবে। অভাবই আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। আমাকে কঠিন করেছে। দারিদ্রকে আমি স্যালুট জানাই।’
তিন ভাই, মা বাবা এবং স্ত্রী। পুরো পরিবার নিয়ে এখন থাকেন ঢাকার আলিশান এক বাসায়। স্ত্রী এমবিএ করছেন। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে থাকাটা দারুণ উপভোগ করছেন বলে জানালেন সিদ্দিকুর। বলেন,‘এক সময় সবাই কস্ট করেছি। এখন সবাই সুখ করছি। আল্লাহতালাকে ধন্যবাদ। সময়টা দারুণ উপভোগ করছি। সবাই মিলে একসঙ্গে থাকার মজাই আলাদা। আমরা অতীতের সেই কঠিন দিনগুলোর স্মরণ করি। আল্লাহ আমাকে যথেষ্ঠ টাকা পয়সা দিয়েছেন। কিন্তু আমি মোটেও অহঙ্কার করি না। গরিব লোকদের সবসময় শ্রদ্ধা করি। যা পারি সাহায্যও করি। আমি জানি অভাব কতোটা কস্টের।’