, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ফাইজুল্লাহ পুলিশকে বিভ্রান্ত করছে

প্রকাশ: ২০১৬-০৬-১৭ ২২:০৪:০৫ || আপডেট: ২০১৬-০৬-১৭ ২২:০৪:০৫

Spread the love
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম,  মাদারীপুরঃ  মাদারীপুর সরকারি নাজিমুদ্দিন কলেজের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর ওপর হামলাকারী গোলাম ফাইজুল্লাহ ফাহিম পুলিশকে বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছে।

এছাড়া নিজেকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-আইএসের ধ্যান-ধারণায় উদ্বুদ্ধ দেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সদস্য বলে দাবি করেছে ফাইজুল্লাহ।

পুলিশ জানায়, ফাইজুল্লাহর দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট মাদারীপুর, ঢাকা, বরিশাল ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও তা পুলিশকে বিভ্রান্ত করা ছাড়া আর কিছুই ছিল না।

সদর থানা পুলিশ সুত্র জানায়, বুধবার হামলার সময় একটি চাপাতি ও একটি গ্লভস উদ্ধার করা হয় ফাইজুল্লাহর কাছ থেকে। তবে তার কাছে থাকা একটি ব্যাগ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

জিজ্ঞাসাবাদে ফাইজুল্লাহ জানায়, হামলার দিন বুধবার সকাল ১০টায় তারা মাদারীপুরের রাজৈরের টেকেরহাট পৌঁছায়। সেখানে পৌঁছে তারা তাদের ব্যবহৃত মোবাইলফোনগুলো ফেলে দেয়।

পরে সেখান থেকে মাদারীপুরে এক আইনজীবীর চেম্বারে আসে। ওই আইনজীবীর চেম্বারে বসেই হামলার ব্যপারে আলোচনা হয় এবং বিকালে শিক্ষকের ওপর হামলা চালানো হয়।

ফাইজুল্লাহ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা বললেও এখন পর্যন্ত তার কাছ থেকে অন্য কারও তথ্য আদায় করতে পারেনি পুলিশ। তাকে নিয়ে বুধবার রাত ৩টায় অভিযানে বের হয় সদর থানা পুলিশ।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি দল ফাইজুল্লাহকে নিয়ে ঢাকায় তার বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে যায়। অভিযান শেষে বৃহস্পতিবার রাতে তাকে নিয়ে মাদারীপুরে ফিরে আসে তদন্তকারী দল।

বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১১টায় ফাইজুল্লাহকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তাকে চিকিৎসা দেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম রাজীব।

জরুরি বিভাগের রেজিস্ট্রি খাতায় নাম- ফাইজুলস্নাহ ফাহিম, পিতা- গোলাম ফারুক ও ‘পাবলিক অ্যাসাল্ট’ হিসাবে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কথা লেখা হয়।

এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত সংশিষ্ট পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা জানান, ফাইজুল্লাহ যে একজন জঙ্গি তা নিশ্চিত হলেও তার কাছ থেকে জঙ্গি নেটওয়ার্কের আর কোনো তথ্য আদায় সম্ভব হয়নি।

তাদের মতে, দেশে এই প্রথম জঙ্গি হামলার সময় সরাসরি জনতার হাতে আটক হওয়া ফাইজুল্লাহ শক্ত মানসিকতার, যে কারণে পুলিশ এখনও তার কাছ থেকে গুরত্বপূর্ণ তেমন কোনো তথ্য বের করতে পারেনি।

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফাইজুল্লাহ জানায়, ‘সরকারকে বিব্রত করতেই’ তাদের এ হামলা। ওই শিক্ষকের সঙ্গে তাদের ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই, এমনকি ওই শিক্ষককে তারা চিনতোও না।

ওপরের নির্দেশ অনুযায়ী তারা তা বাস্তবায়ন করতে এসেছিল। তবে ওপর-ওয়ালা বা কারা নির্দেশদাতা এ ব্যপারে কোনো তথ্য আদায় করতে পারেনি পুলিশ।

তবে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে দেশের জঙ্গি নেটওয়ার্কের ব্যপারে গুরত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশা করছে পুলিশ। শুক্রবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

উল্লেখ্য, মাদারীপুরের সরকারি নাজিমউদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ছাত্রী হোস্টেলের সামনে গত বুধবার কলেজের প্রভাষক রিপন চক্রবর্তীর নিজ ভাড়া বাসায় হামলা চালায় তিন দুর্বৃত্ত।

এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় তারা। তবে ধাওয়া দিয়ে ফায়জুল্লাহ ফাহিম নামের এই দুর্বৃত্তকে স্থানীয়রা আটক করে থানায় সোর্পাদ করে।

তথ্যসুত্রঃ যুগান্তর

Logo-orginal