admin
শীর্ষ সন্ত্রাসী জোসেফও কি প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পেতে যাচ্ছেন?
প্রকাশ: ২০১৬-০৬-২৩ ১৭:৪৪:৫৬ || আপডেট: ২০১৬-০৬-২৪ ১৪:১১:৫১
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাঃ মোহাম্মদপুরের আলোচিত ব্যবসায়ী মোস্তাফিজ হত্যার প্রধান আসামি ও দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফায়েল আহমেদ ওরফে জোসেফের সাজা মওকুফের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। খুনের দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এই শীর্ষ সন্ত্রাসীর সাজা মওকুফের জন্য আবেদন করেছেন তার মা রেনুজা বেগম। অত্যন্ত গোপনে দ্রুত এই প্রক্রিয়াটি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানোর তদবির চলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
জানা গেছে, বহুল আলোচিত এই সন্ত্রাসীর খুনের দায়ে প্রথমে মৃত্যুদণ্ড হয়েছিল। এই রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে আপিল শুনানি শেষে গত বছরের ডিসেম্বরে সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। কারা সূত্রের হিসাব অনুযায়ী, তার সাজা ভোগ করা বাকি আছে আরও ২১ বছর ৭ মাস। জরিমানা না দিলে আরও এক বছর বেশি সাজা খাটতে হবে। কারা সূত্র জানায়, জোসেফের মা রেনুজা বেগম গত ৭ই জুন তার সন্তানের সাজা মওকুফের জন্য আবেদন করেছেন। তাকে অন্যায়ভাবে সাজা খাটানো হচ্ছে বলে তিনি আবেদনে জানিয়েছেন। এখন দ্রুত সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠাতে বিশেষ তদবির চলছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে দু-এক দিনের মধ্যে এই সাজা মওকুফের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে পুরো প্রক্রিয়াটি চলছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
১৯৯৬ সালের ৭ মে মোহাম্মদপুরে ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমানকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি এই জোসেফ। ২০০৪ সালের ২৫ এপ্রিল ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল মামলার অন্যতম আসামি জোসেফ ও মাসুদ জমাদারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন এবং অন্য তিন আসামি আনিস আহমেদ, হারিস আহমেদ ও কাবিল সরকারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন। পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন জোসেফ, মাসুদ ও কাবিল। আসামি আনিস ও হারিস পলাতক থাকায় তাঁরা আপিল করতে পারেননি। ২০০৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ে জোসেফ ও কাবিলের সাজা বহাল থাকে এবং মাসুদ খালাস পান। এ ছাড়া অস্ত্র মামলায় জোসেফসহ অন্য আসামিদের ১২ বছর ও ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
কারা সূত্র জানায়, তৎকালীন সরকার কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করে। ওই তালিকায় সন্ত্রাসী জোসেফকে ধরিয়ে দিতে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এর বছর খানেক পর জোসেফকে নারায়ণগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেই থেকে কারাবন্দি তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদপুর এলাকার ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন জোসেফ। জোসেফের বাবা ওয়াদুদ আহমেদ ছিলেন বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট জোসেফ বড় ভাই হারিস আহমেদের হাত ধরে রাজনীতির মাঠে পদার্পণ করেন। নব্বইয়ের দশকে জাতীয় পার্টি ছেড়ে হারিস যোগ দিয়েছিলেন যুবলীগে। তৎকালীন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও হয়েছিলেন তিনি। জোসেফ তাঁর বড় ভাইয়ের ক্যাডার বাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর থেকে মোহাম্মদপুর-হাজারীবাগসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। যোগ দেন সুব্রত বাইনের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আলোচিত সেভেন স্টার গ্রুপে। পুরো রাজধানী তখন সেভেন স্টার গ্রুপ ও ফাইভ স্টার গ্রুপ নামে দুটি বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করত। এভাবেই শীর্ষ সন্ত্রাসীদের তালিকায় নাম উঠে আসে জোসেফের।
উৎসঃ মানবজমিন