, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

শিবিরের প্রতিবাদ:গ্রেপ্তারের পর ১৭ দিন আটক রেখে রাতের আঁধারে হত্যা

প্রকাশ: ২০১৬-০৭-০১ ২০:৩৩:২৯ || আপডেট: ২০১৬-০৭-০১ ২০:৩৩:২৯

Spread the love

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাঃ পুলিশ কর্তৃক গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার ও বেআইনি ভাবে ১৭ দিন আটক রেখে ঝিনাইদহের দুই শিবির নেতা শহিদ আল মাহমুদ ও আনিসুর রহমানকে পরিকল্পিত ভাবে রাতের আঁধারে গুলি চালিয়ে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, পবিত্র রমজান মাসেও বর্বরতার নিকৃষ্ট নজির স্থাপন করেছে পুলিশ। গত ১৩ই জুন ঝিনাইদহ শহরের বদনপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ছাত্রশিবির নেতা শহিদ আল মাহমুদকে। পুলিশ সাদা পোষাকে গ্রেপ্তার করতে গেলে উপস্থিত জনতা তাদের মধ্য থেকে এসআই আমিনুর ও এসআই উজ্জলকে চিনতে পারে। অন্যদিকে ১৬ জুন রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মোহাম্মদীয়া হাউজিং সোসাইটির ৯ নাম্বার রোডের ১১  নাম্বার বাসার ৬ তলা থেকে ছাত্রশিবির ঝিনাইদহ শহর শাখার সাবেক সভাপতি ইবনুল ইসলাম পারভেজ, একই শাখার ছাত্রকল্যাণ ও আইন সম্পাদক এনামুল হক, ঝিনাইদহ পলিটেকনিকের সাবেক ছাত্র আনিসুর রহমানকে সাদা পোষাকদারী পুলিশ গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাদের গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে পুলিশ। তাদের সন্ধানের দাবীতে সংগঠন ও পরিবারের পক্ষ থেকে বিবৃতি প্রদান করা হয়। এদের মধ্য থেকে গত ২১শে জুন স্বীকারোক্তির নাটক সাজিয়ে শিবির নেতা এনামুলকে গোপনে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

 

বাকি তিন জনের সন্ধানের দাবীতে পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে একাধিকবার বিবৃতি এবং সংবাদ সম্মেলন করা হয়। একই দাবীতে ২১শে জুন ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এত কিছুর পরও পুলিশ তাদের বর্বরতার  অবস্থান থেকে ফিরে আসতে পারেনি। গ্রেপ্তারের ১৭ দিন পর আজ রাত ২টার দিকে শিবির নেতা শহিদ আল মাহমুদ ও আনিসুর রহমানকে ঝিনাইদহে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজিয়ে হত্যা করা হয়। আমরা এই পুলিশি হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। মুলত পুলিশ তাদের দীর্ঘদিন আটক রেখে পুরোহিত হত্যার স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দী আদায়ের জন্য নির্মম নির্যাতন চালায়। শত নির্যাতনের পরেও মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করলে তাদেরকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে পুলিশ। আমরা মনে করি, সরকার সারাদেশে পরিকল্পিত ভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হত্যা করে এর দায়ভার ছাত্রশিবিরের উপর চাপিয়ে দমন নিপীড়নের ক্ষেত্র তৈরি করতে চাইছে। এইসব হত্যার সাথে সরকার সরাসরি জড়িত।

 

নেতৃবৃন্দ বলেন, নূন্যতম দায়িত্ববোধ থাকলে পুলিশ পবিত্র রমজান মাসে নিরীহ ছাত্রদের নৃশংসভাবে হত্যা করতে পারত না। এ বর্বরতা কোন পুলিশের কাজ হতে পারেনা বরং তা গুপ্তঘাতকের কাজ। একের পর এক নৃশংস হত্যাকান্ডের কারণে পুলিশ তার স্বকীয়তা হারিয়ে জনগণের কাছে অবৈধ সরকারের গুপ্তঘাতক বাহিনী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আমরা মনে করি, পুলিশ কর্তৃক প্রতিটি হত্যাকান্ডের দায় সরকার এড়াতে পারে না। প্রতিটি হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত পুলিশ সদস্যরা জগণের কাছে চিহ্নিত। সুতরাং জনগণের টাকায় লালিত আইনের পোষাকে গুপ্তঘাতকরা রেহাই পাবেনা। প্রতিটি হত্যাকান্ডের হিসাব জনগণ কড়ায় গন্ডায় আদায় করবে। সময়ের ব্যবধানে অবৈধ সরকারের সাথে সাথে পুলিশ নামধারী ঘাতকদেরকেও কঠোর বিচারের সম্মুখ্যিন হতে হবে।

 

অবিলম্বে এই পরিকল্পিত গণহত্যা বন্ধ করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দুই শিবির নেতা হত্যাকারী পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে আমরা দেশের বুদ্ধিজীবী, মানবাধিকার সংস্থা, সাংবাদিকসহ সর্বস্তরের সচেতন নাগরিকদের এই রাষ্ট্রীয় হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। সেই সাথে জাতিসংঘসহ সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনকে এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করার আহবান জানাচ্ছি।

বিজ্ঞপ্তি/একে

Logo-orginal