, বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

admin admin

জিয়া ও তামিম কি আটক!

প্রকাশ: ২০১৬-০৮-০৭ ০৯:০৮:৫৭ || আপডেট: ২০১৬-০৮-০৭ ০৯:০৮:৫৭

Spread the love
জিয়া ও তামিম কি আটক!

আরটিএমনিউজ২৪ডটকম, ঢাকাঃ বাংলাদেশে জঙ্গি তত্পরতার মাস্টারমাইন্ড মেজর (চাকরিচ্যুত) সৈয়দ জিয়াউল হক ও কানাডা প্রবাসী তামিম আহমেদ চৌধুরী কি দেশেই আছেন? পুলিশ প্রধানের ইঙ্গিত তারা দেশেই আছেন। তাহলে এদের কেউ কি পুলিশ বা গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়েছে? বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, গত ১২ জুলাই গুলশানের নিকেতনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এক অভিযানে আটক হন মেজর জিয়া। তবে কেউই বিষয়টি নিশ্চিত করছেন না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাদের গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্মক অভিযান চালানো হচ্ছে। আর তামিম চৌধুরীও গোয়েন্দাদের নজরের মধ্যেই আছে। এমন তথ্যও বলছে সূত্রগুলো।

এই দুই মাস্টারমাইন্ডকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য গত ২ আগস্ট পুলিশ সদর দফতর থেকে ২০ লাখ টাকা করে ৪০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের সম্পর্কে কেউ কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোল টেবিল বৈঠকে পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক ইঙ্গিত দেন এই দু’জন দেশেই আছে। তিনি বলেন, তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি এ দু’জন বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের হোতা ও মাস্টারমাইন্ড। তাদের সম্পর্কে আরও তথ্য বের করা হচ্ছে।
ওই অনুষ্ঠানে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত জঙ্গিরা জিজ্ঞাসাদের সময় পুলিশকে বলে, মৃত্যুবরণ করতে তারা প্রস্তুত, কিন্তু কোনো তথ্য তারা দেবে না। জঙ্গিরা ভুল পথে গেছে তাও তারা মানতে নারাজ। তারা গ্রেফতার হওয়ার পর আর বাঁচতে চায় না। তারা শুধু বলে, আমাকে মেরে ফেলেন, জান্নাতে চলে যাব। আপনারা তাগুতি শক্তি, আপনারা মুরতাদ, আপনারা দোজখে যাবেন।’  তিনি আরও বলেন, তরুণ সমাজকে কে বা কারা ধর্মীয় উগ্রতার দিকে টানছে ও মদদ দিচ্ছে  তা আমাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। জঙ্গিদের মদদদাতা, অর্থের যোগানদাতা ও আশ্রয়দাতাদের তথ্য পুলিশকে দিতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তথ্য দাতাদের পরিচয় গোপন রাখা হবে এবং সব রকম নিরাপত্তা দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর মেজর জিয়ার নেতৃত্বে সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থান চালানোর পর একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আটক হন তিনি। ওই সময় মেজর জিয়া সাভার সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। ১৫ দিন আটক থাকার পর তাকে সাভার সেনানিবাসে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে ৫ মাস অবস্থান করার পর কৌশলে তিনি পরিবার নিয়ে সেনানিবাস থেকে বের হয়ে আমিনবাজারে একটি ভাড়া বাসায় ওঠেন। এরপর থেকেই তিনি লাপাত্তা। মেজর জিয়ার পরিবারের অবস্থান জানা গেলেও তাকে খুঁজে পায়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। গত ১ জুলাই গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মেজর জিয়াকে খুঁজতে থাকে। সর্বশেষ গত ১২ জুলাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে গুলশানের নিকেতন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। যদিও তার আটকের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অস্বীকার করে তাকে ধরতে পুরস্কার ঘোষণা করে।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার ঘটনায় রিমান্ডে থাকা কানাডা প্রবাসী তাহমিদ হাসিব খান গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন, কানাডায় তামিমের সঙ্গে তার কয়েকবার দেখা হয়েছে। বাংলাদেশে তার অবস্থান সম্পর্কেও কিছু তথ্য দিয়েছে তাহমিদ। সেই তথ্য ধরেই তামিমকে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। তবে তার আটকের বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।
মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গি তামিম আহমেদ চৌধুররীর জন্ম কানাডায়। সেখানেই বেড়ে ওঠা। পড়ালেখাও করেছেন সেখানকার নামকরা প্রতিষ্ঠানে। তার পিতা শফিকুর রহমান চৌধুরী একসময় চট্টগ্রামে জাহাজে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে পরিবার-পরিজন নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তিনি কানাডায় পাড়ি জমান। তিনি অনেকবার দেশে আসলেও তামিম কিংবা তার মা, ভাই-বোনদের কেউই একবারের জন্যও গ্রামের বাড়ি আসেননি। গত ৭ জুন কানাডার পত্রিকা ন্যাশনাল পোস্টে তামিমকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদে বলা হয়, আইএস’র কথিত ‘বাংলার খিলাফত দলের প্রধান’ শায়খ আবু ইব্রাহিম আল-হানিফ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক। তার প্রকৃত নাম তামিম আহমদ চৌধুরী।

গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘প্রেক্ষিত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন ঃ কমিউিনিটি পুলিশিং ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে আইজিপি বলেন, এই দুই জঙ্গি নেতা এই সমাজেই বসবাস করে, বাংলাদেশেই থাকে। কোনো না কোনো বাসায় বা বাড়িতে থাকে। প্রত্যেকটি লোক যদি সচেতন হয়, তারা যদি জানায়, যে এরা আমাদের বাড়িতে বা এলাকায় আছে তাহলে জাতি উপকৃত হবে।

উৎসঃ ইত্তেফাক

 

Logo-orginal