admin
প্রকাশ: ২০১৭-০৭-০৮ ২২:৫১:০০ || আপডেট: ২০১৭-০৭-০৮ ২২:৫১:০০
বাংলাদেশের জনশক্তি রফতানিতে মন্দা অবস্থা দেখা দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইনের শ্রমবাজারের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হওয়ার পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় প্রফেশনাল ও স্টুডেন্ট ভিসায় পাড়ি জমানো শ্রমিকদের জন্যও সংকট দেখা দিয়েছে।
ওদিকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমছে বলে সরকার এবং অর্থনীতিবিদরাও উদ্বিগ্ন। আন্তর্জাতিক মূদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ইতোমধ্যে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছে যে, এ বছর বাংলাদেশে রেমিটেন্স থেকে আয় কম হবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ ২০ হাজার ৪৯০ জন বাংলাদেশি শ্রমিক বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এর মধ্যে সৌদি আরবে সর্বোচ্চ এক লাখ ছয় হাজার ৫০১ জন শ্রমিক গিয়েছেন মার্চ মাসে।
পরিসংখ্যান আনুযায়ী জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত গড়ে প্রতি মাসে ৮৩ হাজার শ্রমিক গেলেও জুনে গেছে মাত্র ৬৮ হাজার শ্রমিক।
সৌদি সরকার এর আগে অবৈধ শ্রমিকদের জন্য তিন মাসের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার পর স্বেচ্ছায় বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় এরকম ৩৬ হাজার শ্রমিক বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আউট পাস নিয়েছেন। আরো অবৈধ শ্রমিক থাকতে পারে এমন সন্দেহ করে সৌদি সরকার আরো এক মাসের সময় বাড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে আরো বেশ কিছু শ্রমিক আউট পাসে দেশে ফিরে যেতে পারে।
জানা গেছে সৌদি আরবে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কিছু বড় কোম্পানি বন্ধ হয়ে গেছে। সেখানে বেকার শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। তাছাড়া, কাতারের ওপর সৌদি আরবসহ প্রতিবেশী ছয়টি রাষ্ট্র অবরোধ আরোপের ফলে কাতারে চাকুরীরত কয়েক লক্ষ বাংলাদেশি শ্রমিক এখন চাকরি হারানোর শঙ্কায় দিন গুনছেন।
একই রকম অবস্থা দেখা যাচ্ছে আরেক বৃহৎ শ্রমবাজার মালয়েশিয়ায়। গত কয়েক বছরে দেশটির সরকারের ইচ্ছায় লাখ লাখ শ্রমিক প্রফেশনাল ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান। কিন্তু মালয়েশিয়া সরকার হঠাৎ করেই এ সব ভিসার নবায়ন বন্ধ করে দিয়ে ২ জুলাই শুক্রবার মধ্য রাত থেকে ধরপাকড় শুরু করেছে। এ নিয়ে বাংলাদেশী শ্রমিকদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে।
বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মন্দা অবস্থা সম্পর্কে ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট আব ইকোনোমিকস এন্ড পিস (আই ই পি)- এর সভাপতি ড: আরিফুর রহমান রেডিও তেহরানকে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সংকটের কারনে সেখানে শ্রমবাজারে সমস্যা দেখা দিয়েছে তবে মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে বিশেষ সতর্ক হতে হবে যাতে বাজারটা হাত ছাড়া না হয়। এ ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সির প্রতারণা বন্ধ করতে হবে। তাছাড়া, অভিবাসনকামী শ্রমিকদেরও বিদেশ পাড়ি দেবার আগে সব কিছু ভালোভাবে যেনে শুনে যাওয়া উচিত।
এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জাবেদ আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, সৌদি আরব, কাতার ও মালয়েশিয়ায় এই মুহূর্তে শ্রমবাজারে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তারপরও সব কিছু ঠিক থাকলে আমরা আমাদের টার্গেট মোতাবেক এ বছর ১০ লাখ শ্রমিক পাঠাতে পারব বলে আশা করছি।
তবে তিনিও আশঙ্কা করছেন, কাতারের অবরোধ যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে আমাদের অনেক শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যের চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হবে।# পার্সটুডে ।