, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিল দক্ষিণ আফ্রিকা

প্রকাশ: ২০১৭-১০-২৯ ২৩:৩০:৫৩ || আপডেট: ২০১৭-১০-২৯ ২৩:৩০:৫৩

Spread the love

বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিল দক্ষিণ আফ্রিকা
বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিল দক্ষিণ আফ্রিকা
আরটিএমনিউজ২৪ডটকম,ক্রীড়া ডেস্কঃ সফরের শেষ ম্যাচ; তাই সুযোগ ছিল এই শেষটা ভালো করার। অন্তত একটা জয় তুলে নিয়ে নিরাশার সিরিজে কিছু নিয়ে ফেরার। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদেরও নিশ্চয় সেই প্রত্যয় ছিল। আগের দিন টি-টুয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান নিজের ফেসবুক পেজে তো বিজয়ের ডাকই দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো কিছুই কাজে এলো না দুর্বার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। শেষটা হলো বরং আরো ভয়ানক সব অভিজ্ঞতা দিয়ে। টাইগার বোলারদের হতাশায় ডুবিয়ে টি-টুয়েন্টি ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি করলেন ‘কিলার’ ডেভিড মিলার। নবাগত সাইফ উদ্দিনকে হাঁকালেন টানা ৫ বলে ৫ ছক্কা।

নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২৪ রানের পাহাড় গড়ে প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত জয় ৮৩ রানের। ১৮.৩ ওভারে বাংলাদেশের আত্মসমর্পণ মাত্র ১৪১ রানেই। টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টয়েন্টি- তিন সিরিজেই বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই সাথে প্রথমবারের মতো সফরকারী কোনো দলকে তিন সংস্করণেই হোয়াইটওয়াশ করার রেকর্ড গড়লো।

রোববার পচেফস্ট্রুমের পুরো ম্যাচটাই আসলে মিলারময়। ইতিহাসের পাতায় যেখানে নিজের নাম তুলেছেন, সেখানে এই গল্পে পার্শ্বনায়কের জায়গা হয় কিভাবে! তাই ৫১ বলে ৮৫ রানের দারুণ ইনিংস খেলেও আড়ালে পড়ে থাকেন ওপেনার হাশিম আমলা। এ ম্যাচে প্রোটিয়াদের রানের রথে ছুটে চলার শুরুটা যার ব্যাটে। সম্মিলিত বোলিং নৈপুণ্যে বাংলাদেশকে মাত্র ১৪১ রানে গুঁড়িয়ে দিয়েও আলোচনায় আসেন না কোন প্রোটিয়া বোলার। বরং ম্যাচসেরার সঙ্গে সিরিজ সেরা হয়েও দুই ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজটাই নিজের করে নেন মিলার।

অথচ শুরুটা এদিন মনের মতোই করেছিল বাংলাদেশ। টস জিতলেন সাকিব আল হাসান। সিদ্ধান্ত নিলেন আগে বোলিংয়ের। বল হাতে অধিনায়ক শুরুতেই তুলে নিলেন ২ উইকেট। ফেরান মাঙ্গালিসো মোসেহলি (৫) ও জেপি ডুমিনিকে (৪)। ৩৭ রানে ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দিন সাকিব প্রতিপক্ষকে ১৮০ রানে বেঁধে রাখার কথা বলেছিলেন। তখন সেই স্বপ্ন বাস্তোবোচিত বলেই মনে হচ্ছিল। এবি ডি ভিলিয়ার্স উইকেটে এসে ঝড় তোলার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ১৫ বলে ২০ রান করে সাইফ উদ্দিনের বলে ফিরে যান ডি ভিলিয়ার্স। ৭৮ রানে ৩ উইকেটে পড়ে প্রোটিয়াদের। গল্পটা ওই পর্যন্তই বাংলাদেশের। এরপরের গল্পটা শুধুই দক্ষিণ আফ্রিকার। অন্যভাবে বললে খুনে মিলারের।

শুরুতে উইকেট হারালেও একপ্রান্তে হাশিম আমলা অবিচল থেকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। কিন্তু ৮৫ রান করে সাইফ উদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ততক্ষণে দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর বোর্ডে জমা পড়েছে ১৫৭ রান। ম্যাচের আসল গল্পটা অবশ্য লেখা হয়নি তখনও। যেটি মিলার লিখলেন ইনিংসের ১৯তম ওভারে। রুবেল হোসেনের বলে শূন্য রানে জীবন পেয়েছিলেন। উইকেটের পিছনে মুশফিকুর রহীম পারেননি ক্যাচ নিতে। জীবন পেয়ে খেললেন ক্যারিয়ারের স্মরণীয় এক ইনিংস। ৫ বলে সাইফ উদ্দিনকে হাঁকালেন ৫ ছক্কা। বাংলাদেশের বোলারদের হতাশার ডুবিয়ে ৩৫ বলে করেন সেঞ্চুরি। ৩৬ বলে ১০১ রান করে অপরাজিত থাকেন শেষ পর্যন্ত।

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই পথহারা বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার আগের দিনের মতোই শুরু করলেন। বাংলাদেশের ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৪ রানও এলো তার ব্যাট থেকে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনের প্রথম পাঁচজনের মধ্যে বাকি চারের ব্যাট থেকে এলো মোট ১৫ রান। ইমরুল কায়েস ৬, সাকিব আল হাসান ২, মুশফিকুর রহীম ২, সাব্বির রহমান ৫ করেন। তাতে ম্যাচটা বাংলাদেশ হেরে যায় নিজেদের ইনিংসের মাঝপথেই। এর পর বলার মতো স্কোর বলতে মাহমুদউল্লাহর ২৪ ও সাইফ উদ্দিনের ২৩ রান। যা টাইগারদের পরাজয়ের ব্যবধান কিছুটা কমাতে সাহায্য করেছে।

দুঃস্বপ্নের সফরে টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩৩৩ রানে হার দিয়ে শুরু বাংলাদেশের। দ্বিতীয় টেস্টে হার ইনিংস ও ২৫৪ রানে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে হার যথাক্রমে ১০ উইকেট, ১০৪ রান ও ২০০ রানে। আর প্রথম টি-টুয়েন্টিতে টাইগাররা হেরেছিল ২০ রানে। ৮৩ রানে শেষ টি-টুয়েন্টিতে হেরে ব্যর্থতার চক্র পূরণ বাংলাদেশের। মুশফিকুর রহীম, মাশরাফি বিন মুর্তজার পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও থাকলেন ব্যর্থ হয়ে। সুত্রঃ পরিবর্তন ডটকম।

Logo-orginal