, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বেগম খালেদা জিয়া জেলের ভিতরে অনেক বেশি শক্তিশালী: খসরু

প্রকাশ: ২০১৮-০২-২৪ ১০:২৩:৫০ || আপডেট: ২০১৮-০২-২৪ ১০:২৩:৫০

Spread the love

বেগম খালেদা জিয়া জেলের ভিতরে অনেক বেশি শক্তিশালী: খসরু
ফাইল ছবি, চট্টগ্রামঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ আছে মহাবিপদে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, আমাদের নেত্রীকে জেলের ভিতর রাখলেও বিপদ, বাইরে রাখলেও বিপদ। কারণ আওয়ামী লীগ শেষ কার্ড খেলে ফেলেছে। তাদের কাছে আর কিছুই নেই। যা আছে দেশের মানুষের কাছে, বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে। দেশের মানুষ গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করেছে।’

গতকাল শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালত ভবনস্থ আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যে পথে হাঁটছে সেটা একদলীয়, স্বৈরতন্ত্র, ফ্যাসিস্ট ও নিপীড়ন-নির্যাতনের পথ। তারা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস অথবা অন্য শক্তির উপর নির্ভরশীল। বিএনপি জনগণের উপর নির্ভরশীল। বিএনপি চলছে গণতন্ত্রের পথে।’

তিনি বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম জিয়ার মুক্তি আসবে আইনের শাসনের মাধ্যমে, বাকস্বাধীনতার মাধ্যমে। দেশনেত্রী যে পথ দেখিয়েছেন, সেটি শান্তির পথ।’

খসরু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দেয়ার পর অনেক সাংবাদিক আমার কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চান। আমি তাদের বলি, আমি কী প্রতিক্রিয়া দেব? কারণ উনি তো কোনো বক্তব্য রাখেন না, উনি শুধু গালাগালি করেন, তাই তার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন মানে এ নয় যে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা এখন গ্রেফতারের ভয় করে না। মনে রাখবেন বেগম খালেদা জিয়া জেলের ভিতরে অনেক বেশি শক্তিশালী।’

সভায় সভাপতির বক্তব্যে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক ও আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি, শিক্ষানীতি দুটোই ধ্বংস হয়ে গেছে। ফারমার্স ব্যাংকের মালিক মহিউদ্দিন খান আলমগীর ব্যাংক লুটপাট করে শেষ করেছেন। দুদকের মামলায় তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তারপরও তিনি এমপি রয়ে গেছেন, মন্ত্রীও হয়েছেন। এ হচ্ছে বাংলাদেশের আইনের স্বাধীনতা।

জনগণের টাকা লুট করার অধিকার তাদেরকে কে দিয়েছে। বেসিক ব্যাংক, জনতা ব্যাংক থেকে টাকা লুটপাট হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের টাকার কোনো খোঁজ নেই। শেয়ারবাজার থেকে টাকা লুটপাট করেছে দরবেশ এবং তার সহযোগীরা। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আওয়ামী লীগের নেতারা বাড়ি করেছেন, যোগ করেন তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চায় না, আমি চাই উনি আইনের মাধ্যমে মুক্তি পাক, কারো দয়ায় নয়। বিচারপতিদের বিবেক থাকলে তাকে মুক্তি দেবেন। এ মামলা যে হাস্যকর, সেটি হাসিনাও জানেন। আসলে মামলাটি হয়েছে ভারতের প্রেসক্রিপসনে।

তিনি বলেন, আপনাদের এখন দুটো দায়িত্ব। খালেদার মুক্তি আর সুশাসন ফিরে আনা। আওয়ামী লীগ ভারতের দয়া চাচ্ছে, ভারত সবসময় কম দিয়ে বেশি জিনিস নিয়ে যায়। আমাদের দেশে গণতন্ত্রের বড় বাধা ভারত।

ডা. জাফরুল্লাহ প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্যকে উদ্ভট আখ্যা দিয়ে বলেন, তিনি আগেই বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচন করার ব্যাপারে কিভাবে বক্তব্য রাখলেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়ার বক্তব্য নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন।
ম্যাডাম এতিমের কোনো টাকা আত্মসাৎ করেননি। ১/১১-এর সময় শেখ হাসিনার নামে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের টাকা নিয়ে একটি মামলা হয়েছে। আর তখন মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়নের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার নামে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের একটি মামলা করা হয়। পরে কোনো প্রমাণ না পাওয়ায় বেগম জিয়ার মামলাটির ফাইনাল রিপোর্ট দেয়া হয় আর শেখ হাসিনার মামলাটির চার্জশিট দেয়া হয়। কিন্তু পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে খালেদা জিয়ার মামলার ফাইনাল রিপোর্টটি আদালতে না পাঠিয়ে তাদের অনুগত ডবল প্রমোশনধারী একজন অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। পরে এটির চার্জশিট দেয়া হয়।

তিনি বলেন, আদালত নাকি স্বাধীন? কোনো প্রাইভেট ট্রাস্টির বিরুদ্ধে মামলা চলতে পারে না বলে যুক্তি দেখিয়ে শেখ হাসিনাকে অব্যাহতি দেয়া হয় আর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয়া হয়।

পেশাজীবী নেতা ডা. খুরশিদ জামিলের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন ড্যাবের সভাপতি ও পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব ডা. এ. জেড. এম জাহিদ হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ড্যাব কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া, অ্যাব সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড্যাব নেতা ডা. ফাওয়াজ হোসেন শুভ, ইঞ্জিনিয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব হাসান জাফরী তুহিন, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব শাকিল ওয়াহিদ, কৃষিবিদ শামিমুর রহমান, সুপ্রিমকোর্ট বার কাউন্সিলের সাবেক সদস্য অ্যাডভোকেট কবীর চৌধুরী, বিশিষ্ট সাংবাদিক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর নসরুল কাদির, চট্টগ্রাম জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের
সভাপতি অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল আলম, অ্যাব চট্টগ্রাম সভাপতি কাজী সুফিয়ান, শিক্ষক নেতা মাহমুদুর রহমান সাকাসহ পেশাজীবী নেতারা।

এছাড়াও দর্শক সারিতে বসে পেশাজীবী নেতাদের বক্তব্য শুনেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আলহাজ আবু সুফিয়ান ও মহানগর বিএনপির নেতারা।

Logo-orginal