, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

থমকে থাকুক সারা বাংলাদেশ এই ১৬২ সেকেন্ড”

প্রকাশ: ২০১৮-০৫-১০ ১৮:৪৯:৩৩ || আপডেট: ২০১৮-০৫-১০ ১৮:৪৯:৩৩

Spread the love

থমকে থাকুক সারা বাংলাদেশ এই ১৬২ সেকেন্ড”
১০ মে বিকালে (ফ্লোরিডা সময় ৪টা ১২ মিনিট, বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১২ মিনিটে) ফ্যালকন ৯-এর নয়টা মার্লিন ইঞ্জিন ১৬২ সেকেন্ড ধরে পুড়ে ১৮ লাখ পাউন্ড থ্রাস্ট তৈরি করে মহাকাশে নিয়ে যাবে বাংলাদেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। এই খবরটা একেকজন একেক রকমভাবে দেখবেন।

যারা সবকিছু রাজনীতির চশমা দিয়ে দেখেন তারা কেউ কেউ অতিরঞ্জিত করে ফেলবেন দুভাবেই। কেউ একে মহাকাশ বিজয় বলবেন, আবার কেউ বলবেন এটা টাকা ওড়ানোর বা বানানোর ফন্দি।

আমি রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। আমি শুধু দেখছি বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গিতে। একসময় নাসাতে কাজ করতাম। তখন মিশন কন্ট্রোলরুমে বসে দেখেছি কীভাবে লঞ্চ হয়। ফ্লাইট ডিরেকটর কীভাবে প্রতিটি খুঁটিনাটি দেখে বলতেন, “ইটস আ গো”।

এরপর যখন কাউন্টডাউন হতো, তখন গায়ের সব লোম দাঁড়িয়ে যেত, দু’চোখ ভিজে যেত। লঞ্চ হওয়ার পর থেকে আমরা মুহূর্ত গুনতাম প্রথম স্তরের রকেটগুলো না পোড়া পর্যন্ত। ইস সেই রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলো লিখে বোঝানো যায় না।

এরপর একসময় সবাই দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ দুহাত তুলে “ইয়েস” বলে চিৎকার করে উঠতাম ছোট শিশুদের মতো। একটি ছোট ভুলের জন্য মুহূর্তেই পুড়ে ছাই হয়ে যেতে পারে এই রকেট এবং তার পেলোড।

১০ মে সব রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে ছোট শিশুদের মতো উৎসব করার দিন। থমকে থাকুক সারা বাংলাদেশ এই ১৬২ সেকেন্ড। রাস্তায় সব গাড়ি থেমে থাকুক। সব হর্ন বাজুক (হাসপাতালের সামনে নয়)। সব সাইরেন বেজে উঠুক। আজান হোক প্রতিটি মসজিদে যেমন হয় ঝড়ের সময়। তোপধ্বনি হোক ২১বার থেকে এই ১৬২ সেকেন্ড ধরে। ঢোল বাজুক, ভুভুজেলা বাজুক সবার বাড়ির আঙিনায়, ছাদে।

সব স্কুলে জাতীয় সংগীত গাওয়া হোক তারপর শিক্ষার্থীদের বলা হোক কি অসাধারণ ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। অকারণেই হাসুক বাংলাদেশের সব মানুষ। মুষ্টিবদ্ধ ৩২ কোটি হাত উঠুক বলার জন্য, “হ্যাঁ আমরাও পারি”।

বাংলাদেশের সব মানুষ জানুক মহাকাশে আজ (১০ মে) বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা যাচ্ছে। এই ১৬২ সেকেন্ড হয়ে উঠুক দুনিয়া কাঁপানো ১৬২ সেকেন্ড। এই বিশ্ব জানুক, আমরা আছি।

আমরা যারা প্রযুক্তিবিদ, যারা রাজনীতি বুঝি না, কিন্তু ভালোবাসি বাংলাদেশকে, আমাদের জন্য এক অপার, অসীম সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে আজ (১০ মে) থেকে। আমরা এখন আর স্বপ্ন দেখতে ভয় পাব না।

সেদিন আর বেশি দূরে নেই যেদিন মহাকাশে যাবে বাংলা মায়ের দামাল সন্তানদের তৈরি রকেট, স্পেসশিপ। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে দেখুন দুচোখ মেলে আজ (১০ মে) কীভাবে মহাকাশের বুক চিরে বাংলার পতাকা যায় মহাশূন্যে। সৌজন্য: দৈনিক যুগান্তর।

Logo-orginal