, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

জিদ্দা থেকে ছেলের মরদেহ দেশে আনতে ভিক্ষা করছেন হতভাগা মা”

প্রকাশ: ২০১৮-০৭-২৪ ১৯:১৯:৩৫ || আপডেট: ২০১৮-০৭-২৪ ১৯:১৯:৩৫

Spread the love

জিদ্দা থেকে ছেলের মরদেহ দেশে আনতে ভিক্ষা করছেন হতভাগা মা”
গত ৪ জুলাই সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন মাগুরার সন্তান শাহ আলম। এরপর ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও টাকার অভাবে তার লাশ দেশে আসেনি। খবর দৈনিক যুগান্তরের।

শাহ আলম মহম্মদপুর উপজেলার দেউলি গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সায়েন উদ্দিন মোল্যার ছেলে। তার মায়ের নাম হুরিয়া বেগম। তারা শুনেছেন- সৌদির জেদ্দা থেকে ছেলের লাশ দেশে আনতে হলে তাদের গুনতে হবে আড়াই লাখ টাকা।

কিন্তু এত টাকা কোথায় পাবে তা ভেবে কূলকিনারা করতে পারছে না নদীভাঙনে ভিটেমাটিসহ সর্বস্ব হারানো শাহ আলমের পরিবার। উপায় না পেয়ে সন্তানের লাশ আনার টাকা জোগাড় করতে দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা শুরু করেছেন মা হুরিয়া বেগম।

গত কয়েক দিনে ২১ হাজার টাকার মতো জোগাড় হয়েছে। তবে আর কত দিন ভিক্ষা করলে বাকি টাকা জোগাড় হবে তার হিসাব মিলছে না।

এ অবস্থায় মৃত সন্তানের মুখ শেষবারের মতো দেখার বিষয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছেন বলে জানান হুরিয়া বেগম। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে পাঁচ হাজার ৮০০ টাকা সাহায্য পেয়েছেন।

সব মিলিয়ে গত কয়েক দিনে ২১ হাজার টাকার মতো জোগাড় হয়েছে। কিন্তু যে হারে সাহায্য পাচ্ছেন তাতে লাশ আনার আড়াই লাখ টাকা জোগাড় করতে অনেক দিন লেগে যাবে বলে হতাশ কণ্ঠে জানান হুরিয়া বেগম।

দিনমজুর সায়েন উদ্দিন জানান, দারিদ্র্যতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে ছেলে শাহ আলমকে গত বছরের ৯ আগস্ট সৌদি আরবে পাঠান।

এ জন্য এনজিও থেকে ঋণ নেয়ার পাশাপাশি আত্মীয়স্বজনদের কাছ থেকেও শাহ আলমের পরিবার অনেক টাকা ধারদেনা করেছে।

তবে সৌদি পৌঁছে ১০ মাস নির্মাণশ্রমিকের কাজ করলেও তিনি পরিবারের কাছে কোনো টাকা পাঠাতে পারেননি।এরই মধ্যে শাহ আলম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ায় তার লাশ আনার খরচ জোগাড় করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে জানান সায়েন উদ্দিন।

তিনি বলেন, উপায় না পেয়ে আমার স্ত্রী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাজারঘাটে গিয়ে আর্থিক সাহায্যের জন্য মানুষের কাছে হাত পাতছে।

মঙ্গলবার দুপুরে মহম্মদপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাহায্য সংগ্রহকালে শাহ আলমের মা হুরিয়া বেগমের সঙ্গে যুগান্তরের এ প্রতিনিধির কথা হয়।

এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, কলিজার টুকরার লাশের মুখখানা শেষ দেখার জন্য সরকারের কাছে ও সমাজের বিক্তবানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছি।

‘আমার মনিরে একটু শেষবারের মতো দেখতে দেন আপনারা’ বলেই কাঁদতে থাকেন হুরিয়া বেগম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহম্মদপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, নিহত শাহ আলমের মা হুরিয়া বেগম আমার কাছে আজ সকালে এসেছিলেন। আমি বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। সরকারিভাবে যতটুকু সহযোগিতা আছে সেটি করা হবে।

Logo-orginal