rtm
প্রকাশ: ২০১৮-০৭-১৮ ১২:০৫:৩৮ || আপডেট: ২০১৮-০৭-১৮ ১২:০৬:৫২
মোঃ জাহেদুল ইসলাম, আরটিএমনিউজ২৪ডটকম: কিশোর অপরাধীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। চুরি, ছিনতাইসহ চাকু মারামারি, এমনকি খুন করতেও দ্বিধা করছে না তারা। তাদের এমন ভয়ঙ্কর উত্থানে শঙ্কিত সাতকানিয়াবাসী। চিন্তিত পুলিশ প্রশাসনও।
থানা সূত্রে জানা যায়, সাতকানিয়ায় যে অপরাধ সংঘটিত হয়, তার সিংহভাগ ঘটায় কিশোর বা উঠতি যুবকরা। চুরি-ছিনতাই, মাদকদ্রব্য কেনা-বেচা, নারী উত্ত্যক্ত ও নৃশংস খুনসহ সব ধরনের অপরাধে তারা জড়িয়ে পড়েছে।
গত ১৬ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে পেশায় রাজমিস্ত্রি আব্দুল হামিদ (৩৪) প্রতিদিনের ন্যায় কাজ শেষে সাতকানিয়া রাস্তার মাথা ধরে পায়ে হেটে আসছিলেন দক্ষিণ ঢেমশা হাজারখীল এলাকায় তার নিজস্ব বাড়িতে। নাপিতের চর নামক স্থানে ৫-বিএম ব্রিকস ফিল্ড সংলগ্ন উত্তর পাশে ব্রীজের উপর পৌঁছামাত্র কয়েকজন কিশোর অপরাধী তার পেটে ছুরি ঠেকিয়ে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে ছিনিয়ে নেয় টাকা ও মোবাইল সেট।
আব্দুল হামিদ পরের দিন মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) বিষয়টি এলাকার লোকজনকে অবহিত করেন। ওই দিনই রাত ৮টার দিকে আব্দুল হামিদ কাজ শেষে প্রতিদিনের ন্যায় বাড়িতে ফেরার পথে সাতকানিয়া রাস্তার মাথা এলাকায় কিশোর অপরাধী সাকিবকে (১২) দেখে চিনতে পারেন এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাকে আটক করেন। কিশোর অপরাধী সাকিবের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় লোকজন ও থানা পুলিশ ওই কিশোর গ্যাংয়ের অপর সদস্য ছদাহা আজিমপুর এলাকার মোক্তার আহমদের ছেলে মোঃ রায়হান (১৬) ও চন্দনাইশের কসাইপাড়া এলাকার মোঃ মিয়ার ছেলে মোঃ হোসেনকে (১৭) গ্রেফতার করতে সক্ষম হলেও রায়হান (১৫) ও তাদের নেতৃত্বদানকারী সাতকানিয়া থানার ৫নং তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী কেঁওচিয়া ব্যবসায়ী পাড়া এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে মোঃ রিদোয়ান (২৫) এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে রয়েছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ রফিকুল হোসেন গ্রেফতারকৃত কিশোর অপরাধীরা ওই ঘটনায় জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে জানিয়ে বলেন, শুধু এই ঘটনা নয়, একাধিক নানা ঘটনায় কিশোর গ্রুপ জড়িত তদন্তে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। কিশোর ও উঠতি বয়সী যুবকরা চুরি-ছিনতাই ও চাকু মারামারির ঘটনা বেশি ঘটাচ্ছে। গ্রেফতারকৃতদের বুধবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।
উল্লেখ্য, পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব ও পারিবারিক অবক্ষয়ের কারণে কিশোররা অপরাধের দিকে পা বাড়াচ্ছে। এখন আর মা-বাবা সন্তানদের শাসন করতে চান না। শাসন করলেই কিশোর-তরুণরা বেপরোয়া হয়ে ওঠে, কেউ কেউ আত্মহত্যার হুমকি দেয়। মা-বাবা এক রকম উঠতি বয়সী সন্তানদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
সুষ্ঠু বিনোদনের অভাবসহ পারিবারিক বন্ধন না থাকায় কিশোররা বিপথগামী হচ্ছে। কিশোরদের মধ্যে অনুসরণ করার প্রবণতা বেশি থাকে। এই বয়সে তাদের মনে একটা অ্যাডভেঞ্চার কাজ করে। যে কাজ করে আনন্দ পায়, তারা সেই কাজটিই দ্রুত করে। সামাজিক ও পারিবারিক জায়গা দুর্বল হলে তা কিশোরদের অপরাধী বানায়।