, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ঢাবিতে যেভাবে সুযোগ পেলেন দ্ররিদ্র বাবার মেধাবী ছেলে জালাল

প্রকাশ: ২০১৮-০৯-২০ ১১:০৪:০৬ || আপডেট: ২০১৮-০৯-২০ ১১:০৪:০৬

Spread the love

ঢাবিতে যেভাবে সুযোগ পেলেন দ্ররিদ্র বাবার মেধাবী ছেলে জালালঢাবিঃ অধ্যবসয় আর মনোবল থাকলে জীবনে যে কোন কঠিন অসম্ভব কে সম্ভব করা যায় । এরি এক বাস্তব উদাহরন পটুয়াখালীর ছেলে শাহ জালাল । জীবনের সকল প্রতিকুলতাকে অতিক্রম করে চড়ান্ত লক্ষে যাওয়া। জানা যায়, পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায় কুয়াকাটার খাজুরা জেলে পল্লীতে জন্ম শাহ জালালের। ২০১৬ সালে সে মহিপুর কো-অপ্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য শাখায় এসএসসিতে জিপিএ-৫ পায়। চলতি বছর কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজে থেকে এইচএসসিতেও জিপিএ-৫ পায় শাহ জালাল। এতে তার মনোবল বেড়ে যায়, স্বপ্ন জাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) পড়ার। ঢাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ব্যাপক পড়াশোনা করে সে।

সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটের (ব্যবসায় শিক্ষা) ফল প্রকাশ হয়েছে। ফলাফলে মেধা তালিকায় ১৪তম অবস্থান শাহ জালালের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়ে বিবিএ-এমবিএ পাস করে ব্যাংকের বড় কর্মকর্তা হওয়ার স্বপ্ন তার।এদিকে, ভর্তি পরীক্ষায় শাহ জালালের উত্তীর্ণের খবরে খাজুরা জেলে পল্লী ও কুয়াকাটা খানাবাদ কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহ জালালের বাবা দুলাল আকন পেশায় জেলে। দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীর মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দিতে দিনরাত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয় দুলাল আকনকে। এজন্য বছরের পুরো সময়ই বঙ্গোপসাগরে থাকতে হয় তাকে। ছেলের পড়াশোনার খবর নেয়ার ফুসরত নেই তার। বছরে ছেলেকে একটি জামা কিনে দিতে পারেননি দরিদ্র বাবা। ছেলের মুখে দুমুঠো ভালো খাবার তুলে দিতে পারেননি। তাই ছোটবেলা থেকেই অন্যের বাড়িতে লজিং থেকে পড়াশোনা করেতে হয় শাহ জালালকে। তবে কোনো বাধাই রুখতে পারেনি জেলে পরিবারের এই সন্তানকে।

অন্যদিকে, ছেলের এমন সাফল্যে আনন্দিত বাবা দুলাল আকন। তিনি জেলে পল্লী, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন।আবেগ আপ্লুত দুলাল আকন বলেন, ‘মুই তো ল্যাহাপড়া বুঝি না। পোলায় (ছেলে) ছোটকাল হইতে পরের বাড়ি লজিং থ্যাকইয়া পড়ালেখা হরচে। তয় সামনে ওরে আরো লেহাপড়া হরামু।’

পরে মেধাবী শিক্ষার্থী শাহ জালাল বলেন, প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকলে মানুষকে কোনো প্রতিকূলতা রুখতে পারে না। ইচ্ছা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ব। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়েছি, সফল হয়েছি। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের লক্ষে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে চান তিনি।

শাহ জালালের এ সাফল্য নিয়ে কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সিএম সাইফুর রহমান খান বলেন, শাহ জালালের এ সাফল্য কলেজের চলমান শিক্ষার্থীদের মনোবল ও অনুপ্রেরণা জোগাবে। যখন কোনো শিক্ষার্থী সফল হয় তখন সত্যিই ভালো লাগে । আসা করব শাহ জালালের মত প্রতি বছর আমাদের কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাবে । আমাদের ছাত্র- ছাত্রীরা ভাল করে পড়াশুনা করবে। #সংগৃহীত।

Logo-orginal