, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

admin admin

সদরঘাট থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে

প্রকাশ: ২০১৮-১০-১৫ ১১:৪৩:৪৮ || আপডেট: ২০১৮-১০-১৫ ১১:৪৩:৪৮

Spread the love

সদরঘাট থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছেচট্টগ্রামঃ নিত্য যানজটে প্রায় দিশেহারা বিমানযাত্রীসহ নগরবাসীকে রক্ষায় সদরঘাট থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে উক্ত সার্ভিস চালুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আগামী মাস দু’য়েকের মধ্যে বিশেষ এই সার্ভিসের কার্যক্রম শুরু হবে। বহুদিন ধরে ওয়াটার বাস চালুর দাবি জানানো হলেও চট্টগ্রামের ইতিহাসে প্রথম বারের মতো সার্ভিসটি চালু করা হচ্ছে। নগর ট্রাফিক পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, নানা চেষ্টা করেও বন্দরকেন্দ্রিক যানজটের সুরাহা করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিনই বারিক বিল্ডিং থেকে ইপিজেড এবং সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত এলাকাটি যানজটে স্থবির হয়ে থাকে। ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট চলতে থাকে।

এ অবস্থায় প্রতিদিন মানুষের ভোগান্তি চরমে উঠে। পতেঙ্গা থেকে দক্ষিণ হালিশহর পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকার কয়েক লাখ মানুষকে এই যানজট মোকাবেলা করে প্রতিদিন প্রয়োজনীয় কাজ করতে হয়। স্কুল কলেজ অফিস এবং হাসপাতালের প্রয়োজন সারতে মানুষকে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। অপরদিকে বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নগরীতে আসা যাওয়া করেন। এই বিপুল সংখ্যক মানুষকেও নিত্য দুর্ভোগ সহ্য করতে হচ্ছে।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার সারোয়ার ই আজম দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে বলেন, এই বিমানবন্দর অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় বর্তমানে অনেক বেশি যাত্রী এবং ফ্লাইট হ্যান্ডলিং করছে। বর্তমানে প্রতিদিন সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে এগারটা পর্যন্ত এই বিমানবন্দরে ১৩/১৪টি ইন্টারন্যাশনাল এবং ১৩/১৪টি ডোমেস্টিক ফ্লাইট অপারেট করা হয়। গড়ে ২৮টি ফ্লাইটে সাড়ে চার হাজারের মতো যাত্রী থাকে। গত বছর এই বিমানবন্দর দিয়ে ১৫ লাখ যাত্রী আসা-যাওয়া করেছে বলেও তিনি জানান।
চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে দৈনিক সাড়ে চার হাজার যাত্রীর সাথে আরো অন্তত সাড়ে ৬ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীদের বিদায় জানাতে এবং তাদের রিসিভ করতে বহু মানুষ বিমানবন্দরে যান। ডোমেস্টিক রুটের যাত্রীদের অনেককেই রিসিভ করা হয়। ভিআইপি যাত্রীদের সাথেও লোকজন থাকে। প্রতিদিন এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে বন্দরকেন্দ্রিক যানজট মোকাবেলা করে বিমানবন্দরে যাতায়াত করতে হয়। বছরের পর বছর এভাবে ভোগান্তি সহ্য করতে হচ্ছে মানুষকে। প্রায় প্রতিদিনই কোন কোন মানুষকে ফ্লাইট মিস করার মতো দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতিরও শিকার হতে হয়।

বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ গতকাল দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে বলেন, বিপুল সংখ্যক মানুষকে নিত্য যানজট মোকাবেলা করতে হচ্ছে। এই দুর্ভোগ লাঘবে আমরা বহুভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু বন্দর চালু রাখার স্বার্থে রাস্তার উপর গাড়ির চাপ কমানো যাচ্ছে না । বে টার্মিনাল চালু না হওয়া পর্যন্ত এই রাস্তাকে পুরোপুরি ফ্রি করা অসম্ভব। এ অবস্থায় বিকল্প হিসেবে আমরা ওয়াটার বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। আমরাই অবকাঠামোগত সব সুযোগ সুবিধা করে দিচ্ছি। বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণেই কর্ণফুলী নদীর সদরঘাট থেকে পতেঙ্গা এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হবে। আমরা ড্রাইডককে কাজটি দিচ্ছি। ড্রাইডক ইতোমধ্যে ওয়েস্টার্ন মেরিনের সাথে বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে। আগামী মাস দু’য়েকের মধ্যে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে ওয়াটার বাস সার্ভিস পুরোদমে চালু করা হবে। সদরঘাটে একটি টার্মিনাল এবং পতেঙ্গায় পল্টুন স্থাপনের কাজ বন্দর কর্তৃপক্ষ শুরু করেছে।

তিনি বলেন, শুরুতে একটি বা দুইটি ভ্যাসেল দিয়ে উক্ত সার্ভিস চালু করা হবে। চাহিদার সাথে সাথে সার্ভিস বাড়ানোর ব্যবস্থা থাকবে। ফ্লাইটের সময়সূচির সাথে সমন্বয় করে এই ওয়াটার বাস সার্ভিস চলবে। তিনি বলেন, সদরঘাট থেকে যাত্রীরা লাগেজসহ ওয়াটার বাসে চড়বেন। পতেঙ্গায় এয়ারপোর্টের কাছে নদীতে পল্টুন স্থাপন করা হবে। ওখানেই বিমান যাত্রীদের চেকইন করা হবে। যাত্রীদের লাগেজ সংশ্লিষ্ট ফ্লাইট কোম্পানির ভ্যানে চলে যাবে। যাত্রীদেরকে ওখান থেকে মিনিবাসের মাধ্যমে বিমানবন্দরে নেয়ার ব্যবস্থা করবে সংশ্লিষ্ট ফ্লাইট অপারেটররা। এতে করে যাত্রীদেরকে ঘাট থেকে লাগেজ নিয়ে টানাটানি করতে হবে না।

ওয়েস্টার্ণ মেরিনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, একেবারে নতুন একটি ধারণা নিয়ে কাজটি শুরু করা হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগের সুফল চট্টগ্রামের মানুষ পাবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সর্বসাকুল্যে ত্রিশ মিনিটের মধ্যে যাত্রীদের এয়ারপোর্টে পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা দ্রুতগতি সম্পন্ন চারটি ওয়াটার বাস নির্মাণ করছি। ত্রিশ জন ধারণক্ষমতার এই চারটি বাস দিয়ে সার্ভিসটি শুরু করতে চাই। উৎসঃ আজাদী।

Logo-orginal