, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

বাংলাদেশী মধু ভারত যেভাবে ফের বাংলাদেশে রফতানী করে

প্রকাশ: ২০১৮-১১-২৭ ০৯:৫০:১৪ || আপডেট: ২০১৮-১১-২৭ ০৯:৫০:১৪

Spread the love

বাংলাদেশী মধু ভারত যেভাবে ফের বাংলাদেশে রফতানী করে বাংলাদেশী মধু ব্র্যান্ডিং নিয়ে এক নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের চূড়ান্ত কর্মশালায় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধুবিষয়ক একজন গবেষক মিস মাতেজা ডামেস্টিয়া তার কেস স্টাডিতে বলেছেন, স্লোভেনিয়া বাংলাদেশ থেকে মধু আমদানি করে তা পরিশোধন করে মেড ইন স্লোভেনিয়া নামে মধু বাজারজাত করে যা ইউরোপে বেশ জনপ্রিয়। ভারতও বাংলাদেশ থেকে মধু আমদানি করে নতুন মোড়কে তা আবার বাংলাদেশেই রফতানি করে।

মাতেজা ডামেস্টিয়া বলেন, মধু উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণে দক্ষতা বৃদ্ধি করা গেলে এবং ভালো মানের মধু উৎপাদন করা গেলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পর তা বিদেশে রফতানি করা সম্ভব হবে। মৌ চাষিদের এলাকা ও ক্লাস্টারভিত্তিক সংগঠিত করে প্রয়োজনীয় আর্থিক এবং নীতিগত সহায়তা দেয়ার সুপারিশ করেন তিনি। এ ছাড়া, মধু আন্তর্জাতিক বাজারে পরিচিত করাতে আলাদা আলাদা ব্র্যান্ডিং না করে বাংলাদেশী মধু বা মেড ইন বাংলাদেশ নামে ব্র্যান্ডিং করার পরামর্শ দেন। ্ন

গতকাল রাজধানীর এসএমই ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) আয়োজিত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রিজম প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশী মধু ব্র্যান্ডিং নিয়ে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিল্প মন্ত্রণালয়, বিএসটিআই, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বন বিভাগ, মধু প্রক্রিয়াজাতকারক-রফতানিকারক, বিসিক, এসএমই ফাউন্ডেশন, গবেষক, বিশেষজ্ঞ, বিভিন্ন অধিদফতর, মৌচাষি এবং মৌচাষিদের সংগঠনগুলো অংশগ্রহণ করে। প্রিজম প্রকল্পের সিনিয়র এক্সপার্ট মিস মাতেজা ডামেস্টিয়া, যিনি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রিজম প্রকল্পের আওতায় ৮ মাসের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে মধু ব্র্যান্ডিং নিয়ে কাজ করছেন।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধে প্রিজম প্রকল্পের সিনিয়র এক্সপার্ট মিস মাতেজা ডামেস্টিয়া বলেন, মধুর বৈশ্বিক উৎপাদন-বাজার, বাংলাদেশে মধু চাষ এবং উৎপাদনের চিত্র তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, চীন বছরে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন করে। তুরস্কে ১ লাখ টন, যুক্তরাষ্ট্রে ৮০ হাজার এবং ভারতে ৬০ হাজার টন মধু উৎপাদিত হয়। উৎপাদনের পাশাপাশি মধু রফতানিতেও শীর্ষে আছে চীন। দেশটি প্রতি বছর প্রায় ৩১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধু রফতানি করে। এ ছাড়া, নিউজিল্যান্ড ২২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, জার্মানি ১৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, স্পেন ১১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর্জেন্টিনা ১৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ও ইউক্রেন ১৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধু রফতানি করে। অন্য দিকে সবচেয়ে বেশি মধু আমদানি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এ দেশটি বছরে প্রায় ৫৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধু আমদানি করে। এ ছাড়া, জার্মানি ২৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, স্পেন ১৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যুক্তরাজ্য ১৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ফ্রান্স ১৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধু আমদানি করে। এ দিকে বাংলাদেশে আনুমানিক ২৫ হাজার মৌচাষি আছে যা দিয়ে বছরে মাত্র ৩ হাজার টন মধু উৎপাদিত হয়। এ কারণে চাহিদার প্রায় ৭০ ভাগ মধু আমদানি করা হয়। এই মৌচাষি দিয়ে বছরে ২৫ হাজার টন থেকে ১ লাখ টন পর্যন্ত মধু উৎপাদন করা সম্ভব।

বিসিকের চেয়ারম্যন মুশতাক হাসান মুহ: ইফতিখারের সভাপতিত্বে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, দেশে যে পরিমাণ মৌচাষি আছে তা দিয়ে মধুর উৎপাদন দ্বিগুণ করা সম্ভব। এ জন্য মধু উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি কার্যকরী ফোরাম তৈরি করে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া মধুর মানের দিকেও নজর দিতে হবে।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব, বিসিকের নকশা ও বিপণন বিভাগ এবং প্রিজম প্রকল্পের পরিচালক মাহবুবুর রহমান, বিসিকের পরিচালক (উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ) জীবন কুমার চৌধুরী, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, প্রিজম প্রকল্পের টিম লিডার আলী সাবেত, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের পরিচালক মালা খান, বিসিকের মৌচাষ প্রকল্পের পরিচালক মো: আমিনুজ্জামান প্রমুখ। উৎসঃ নয়া দিগন্ত।

Logo-orginal