, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

সোহেল মো. ফখরুদ-দীন’র ভিন্নধর্মী সৃষ্টিকর্ম  “মোহনা (২য় খন্ড)” মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন

প্রকাশ: ২০১৮-১১-১৩ ০১:০৪:০৫ || আপডেট: ২০১৮-১১-১৩ ০১:০৪:০৫

Spread the love

সোহেল মো. ফখরুদ-দীন'র ভিন্নধর্মী সৃষ্টিকর্ম  "মোহনা (২য় খন্ড)" মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন
চট্টগ্রাম ইতিহাস চর্চা কেন্দ্র এর সভাপতি  ইতিহাস-ঐতিহ্য সংগ্রাহক এবং  বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক সোহেল মো. ফখরুদ-দীন’র সম্পাদিত বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল এর কবি সাহিত্যিকদের কবিতা ও প্রবন্ধ সংকলন  “মোহনা (২য় খন্ড)” গ্রন্থটি মন ছুঁয়ে যাওয়ার মত একটি গ্রন্থ। এই গ্রন্থটিতে দেশত্ববোধক, মাতৃভাষা বাংলা, বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গকৃত, প্রিয়জন মা,দুঃখ-কষ্ট, প্রেম ভালোবাসা, প্রকৃতি সৌন্দর্য, চট্টগ্রামকে নিয়ে কবিতা সহ আরো কবিতা স্থান পেয়েছে। যা কবিতা প্রেমীদের জন্য ভালো লাগার মত সত্যি অসাধারণ গ্রন্থ। তাছাড়া এই বইটিতে মা’কে নিয়ে স্মৃতিচারণ সহ অসংখ্য প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে।

গ্রন্থ: মোহনা (২য় খন্ড)

লেখক : সোহেল মো. ফখরুদ-দীন

প্রকাশক: সামসুদ্দীন রাজু

প্রকাশনী: সাজিদ আলী প্রকাশন

প্রকাশকাল: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

পৃষ্টা: ৪৮

শুভেচ্ছা মূল্য: ২২০ টাকা মাত্র।

সম্পাদক সোহেল মোঃ ফখরুদ-দীন তার মোহনা (২য় খন্ড) গ্রন্থে প্রিয় মাতৃভাষা নিয়ে  দীপালী ভট্টাচার্য’র “বাংলা ভাষা” ও বাবুল কান্ত দাশ’র “বাংলা আমার” স্থান দিয়েছেন। দীপালী ভট্টাচার্য তার “বাংলা ভাষা” কবিতায় লিখেছেন-

“বাংলা আমার মায়ের ভাষা

মোদের লক্ষ আশা,

বায়ান্নেতে রক্ত ঢেলে

এনেছি এই ভাষা।

একুশ আসে একুশ যায়

ভাষার খেয়া বেয়ে

আসবে কবে সত্যি ভেলায়

বাংলা মায়ের মেয়ে।”

বাবুল কান্ত দাশ তার “বাংলা আমার” কবিতায় লিখেছেন-

“ভাষা নিয়ে মায়া কান্না

এই মাসে সীমাবদ্ধ,

এরপর যেন আর না

শুধুই নিধর জলাবদ্ধ।

বাংলা আমার ধুঁকে মরছে

সাইনবোর্ড আর ব্যানারে,

শিশু কিশোর তরুণ বৃদ্ধ

দীর্ঘ শ্বাসেবলে উঠে আহা’রে।”

প্রাণের শহর চট্টগ্রাম নিয়ে বলগা চরণ ভট্টাচার্য’র চাটগাঁর বিপ্লবী দল ও দীপালী ভট্টাচার্য’র চট্টগ্রাম কবিতা স্থান পেয়েছে।কবি বলগা চরণ ভট্টাচার্য তার “চাটগাঁর বিপ্লবী দল” কবিতায় লিখেছেন-

“কাঁপাইয়া তুলেছিল ব্রিটিশ শাসন

ঝড় ঝরিয়া বটতলায়

জালালাবাদ পাহাড়ে-

ব্রিটিশ বাহিনী সনে করেছিল রণ।

সাবাস সাবাস ওরে

এই চাটগাঁর বিপ্লবী দল

ইতিহাসে তোমাদের নাম

স্বর্ণাক্ষরে রবে সমুজ্জ্বল।

ধন্য এই চাটগাঁর বিপ্লবী দল

ছিল না তাদের অস্ত্র শস্ত্র

অর্থ বা লোকবল

ছিল শুধু দুর্জয় সাহস মনোবল।”

আর দীপালী ভট্টাচার্য তার “চট্টগ্রাম” কবিতায় লিখেছেন-

“কর্ণফুলী সাগর পাহাড়

এসব নিয়ে আছি

চট্টগ্রামে জন্ম নিয়ে

মানুষ নামেই বাঁচি। ”

কবি  আরো লিখেছেন-

“বার আউলিয়ার পুণ্যভূমি

শহর চট্টগ্রাম

মানুষগুলো যায় চেনা যায়

দিয়ে মনের দাম

প্রকৃতির এক লীলাভূমি

সাগর ধোয়া গ্রাম

চাট্টিখানি কথা তো নয়

তাই তো চট্টগ্রাম। ”

এই বইয়ে তারকনাথ দত্ত’র  “রূপসী বাংলা” এবং মেহেরুননেসা রশিদ’র  দু’টি কবিতা “বাঙালির এ দেশ” ও “বাংলার প্রদীপ” দেশত্ববোধক কবিতাগুলি স্থান পেয়েছে।

সংকলক সোহেল মোঃ ফখরুদ-দীন তার মোহনা (২য় খন্ড) এ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর প্রতি উৎসর্গকৃত শান্তিদেব ভট্টাচার্য্য’র “পেতে চাই নির্জনে” কবিতটি স্থান দিয়েছেন।

কবি লিখেছেন-

“তোমাকে পেতে চাই নিভৃতক্ষণে

জন্ম তোমার হোক এ বঙ্গে

সূর্য হয়ে তুমি এসো কিম্বা চাঁদ হয়ে

কৃষ্ণা দ্বাদশীর তিথি লগ্নে

এই বঙ্গ হৃদয়ে।”

শিহাব ইকবাল’র “হিজরী নববর্ষ” কবিতায় শুহাদায়ে কারবালার শিক্ষা ফুটিয়ে তুলেছেন।

এই বইয়ে স্থান পাওয়া কিছু কবিতা পড়ে মনে হয়েছে কবির মনে দুঃখ কষ্ট ফুঠে উঠেছে। ড.আশিস কুমার নন্দীরতা’র “কষ্টসুখে আমি” কবিতায় লিখেছেন-

“চলমান কষ্টের সিড়িঁ

পা রাখছি পরের পর

কতজাল দেখি নি

তৃপ্তি তোমাকে।”

বরুণ চক্রবর্তী’র “এসো বিপন্ন মানুষের দুঃখের কবিতা শোনাই” কবিতাও স্থান পেয়েছে।

বর্ষার দিনে প্রকৃতি সৌন্দর্য এবং মানুষের দুঃখ কষ্ট নিয়ে আমার (মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন) দু’টি কবিতা স্থান পেয়েছে। 

সম্পাদক সোহেল মোঃ ফখরুদ-দীনকে নিয়ে মাসুদ আহমেদ রানা’র “স্বর্ণালী বাতিঘরে” সহ “হে সুগন্ধ নদী” কবিতাও স্থান পেয়েছে। কবি “স্বর্ণালী বাতিঘরে” কবিতায় লিখেছেন-

“আমি এখন চট্টগ্রাম যাবো

যেখানে পরম বন্ধু সোহেলরা কবিতার জাল বুনে,

কবি সম্মেলনে স্মৃতির পাতা উল্টিয়ে

ভালোবাসায় প্রীতিডোরে নির্মল রং মেখে।”

কবি আরো লিখেছেন-

“চেতনার উর্বর মশাল জ্বালাতে আমি রানা

ছুটে যাই সোহেলের ভালবাসার ফুলবাগিচায়”

এই বইয়ে জয়ন্ত রসিক’র দু’টি “মানুষের কথা” ও “ঈর্ষাকাতর ওরা”  আনোয়ার হোসেন’র দু’টি “খোঁজ” ও “বৃষ্টি” অমর কুমার দাস’র “সেই পথিক” মতিয়ার রহমান’র “অতিথি নাকি” শংকর হালদার’র দু’টি “খুকি ও মেঘ” ও “ছেলে’টা” শামীম সাথী’র দু’টি “বিবাহ” ও “কে বলেছে আপন আছে তোর এই জগতেরে?” সহ আরো অসংখ্য কবিতা স্থান পেয়েছে।

 এই গ্রন্থে কবিতা ছাড়াও অসংখ্য প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। করুণা আচার্য এর লেখা “মা আমার-পৃথিবী” শিরোনামে স্মৃতিচারণ ও মা’কে নিয়ে কবি নাছির বিন ইব্রহীম’র “কেমন আছিস” কবিতাও স্থান পেয়েছে।

সাফাত বিন ছানাউল্লাহর আলোকিত মনীষী “হযরত সৈয়দ ক্বারি মাওলানা আব্দুল মান্নান শাহ (রাহ) এর জীবন কর্ম সম্পর্কে গুরুত্ব পেয়েছে।

পাশ্ববর্তী দেশ মায়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর নির্যাতন নিয়ে লায়ন এ. কে জাহেদ চৌধুরীর “বিপন্ন মানবতা,কিছু বিবেক জাগ্রত  হও” এবং শিশু অধিকার নিয়ে “শিশু অধিকার সংরক্ষণ ও করণীয়” দু’টি লেখা গুরুত্ব সহকারে স্থান পেয়েছে।

এই গ্রন্থে আব্দুল সেলিম উদ্দিন খান মুহাম্মদ মুহিউল ইসলাম চিশতি (সাত বার পি.এইচ.ডি, ডাবল মাগিষ্টার, পাঁচ বার গোল্ড মেডেলিস্ট)’র “আন্তর্জাতিক ইসলামিক বুদ্ধিজীবী,দার্শনিক মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী” এর সম্পর্কে  লেখাসহ আরো কিছু গুণী ব্যক্তিদের লেখা স্থান পেয়েছে।

তাছাড়া মোহনা’র সম্পাদক  সোহেল মোঃ ফখরুদ-দীন তার বইয়ে  আগস্ট ২০১৮ ইং ভারত  ভ্রমণকালের খন্ডচিত্র তুলে ধরেছেন।

এই গ্রন্থটি সব মিলিয়ে একটি ভিন্নধর্মী সৃষ্টিকর্ম যা বলার অপেক্ষা রাখে না। দীপ্তময় পথচলায় তার প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা ও শুভ কামনা জ্ঞাপন করছি।

আলোচক : কলামিস্ট। 

প্রেরণ : মোহাম্মদ ইমাদ উদ্দীন।  

 C/O, মাওলানা মন্জিল, চন্দনাইশ পৌরসভা, ওয়ার্ড নং ০২, পূর্ব জোয়ারা (৪৩৮০),  চন্দনাইশ, চট্টগ্রাম,বাংলাদেশ। মোবাইল: ০১৮২৫৮৬৬৪০৫

Logo-orginal