admin
প্রকাশ: ২০১৮-১১-০৩ ১১:২৫:৩৪ || আপডেট: ২০১৮-১১-০৩ ১১:২৫:৩৪
বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে প্রথম বলটা করেছিলেন পেসার হাসিবুল হোসেন শান্ত। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক অলক কাপালীর। আর টেস্টে টাইগারদের প্রথম জয়ে ম্যাচসেরা হয়েছিলেন এনামুল হক জুনিয়র। এখানেই শেষ নয়।
পেসার আবুল হাসান রাজু নিজের অভিষেক টেস্ট স্মরণীয় করে রেখেছেন ১০ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়ে। আরও আছে। ২০ বছর ২৯৭ দিন বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে কম বয়সী ওয়ানডে অধিনায়ক হয়েছিলেন রাজিন সালেহ। এ বছর তার সেই রেকর্ড ভেঙেছেন রশিদ খান। হাসিবুল, কাপালী, এনামুল, রাজিন- এক জায়গায় তাদের মিল। তারা সবাই সিলেটের ক্রিকেটার।
অপরূপ সুন্দর শহর সিলেট আজ আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে টেস্ট ভেন্যু হিসেবে। নিজেদের শহরে প্রথম সাদা পোশাক ও লাল বলের ক্রিকেট-রোমাঞ্চে যারপরনাই আপ্লুত তারা। এই মাহেন্দ্রক্ষণে হাসিবুল, রাজিনরা আচ্ছন্ন হয়েছেন স্মৃতিমেদুরতায়। গর্বে তাদের বুক ভরে গেছে। ছুঁয়ে যাচ্ছে খানিকটা আক্ষেপও-
হাসিবুল হোসেন শান্ত
সিলেটে টেস্ট ম্যাচ হচ্ছে। এটা আমাদের গর্ব। ভাবতে ভালো লাগে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টের প্রথম বলটা আমি করেছিলাম। টেস্টে বাংলাদেশের অনেক রেকর্ড হবে, কিন্তু এই একটা ক্ষেত্রে আমার নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। বিশ্বকাপেও প্রথম বলটা আমার করা ছিল। সবকিছু একই সঙ্গে পাওয়া সম্ভব নয়। আগে থেকেই আমাদেরও কল্পনা ছিল সিলেটে একদিন টেস্ট ম্যাচ হবে। সেটা নিজের চোখে দেখে যেতে পারছি- এটাও কম গর্বের নয়। অনেকেই বলেছেন, এশিয়ার অন্যতম সুন্দর স্টেডিয়াম এটি, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে।
সিলেটে এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেট ম্যাচ থাকলেই বাইরের ক্রিকেটাররা এখানে আসতে চাইত। এখন আন্তর্জাতিক ম্যাচের সময়ও হয়তো বিদেশি ক্রিকেটারদের বেশি আকর্ষণ করবে। এর আগে খুলনা, বগুড়ায়ও নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতো। এখন কমে গেছে। আশা করি, সিলেটে এমনটা হবে না। এখন যারা আছেন তারা নিয়মিত এখানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আয়োজন করতে পারবেন। সবচেয়ে বড় কথা, সিলেটের সৌন্দর্যই এখানে ম্যাচ আয়োজনের পক্ষে অন্যতম বড় কারণ।
রাজিন সালেহ
দারুণ একটি মুহূর্তের অপেক্ষা করছি। আমরা যখন জাতীয় দলে খেলতাম, তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে একদিন টেস্ট অভিষেক হবে। অনেক কিছুই ভাবনায় আসত। ভাবতাম, যদি সিলেটে টেস্ট খেলে যেতে পারতাম। আমাদের সময় হয়নি। এখন তো হয়েছে। আফসোস একটু আছেই। আবার ভালোও লাগছে। স্বপ্ন ছিল একদিন নিজের শহরে খেলব। সেটা হলে আরও ভালো লাগত।
অবশ্যই আমি গর্ববোধ করি। সিলেট টেস্ট ভেন্যু হওয়ার যোগ্যতা রাখে। খুবই সুন্দর স্টেডিয়াম। আমরা ক্রিকেটের শেষ সময়ে চলে এসেছি। সিলেটের যে দু’জন খেলোয়াড় আছে টেস্ট দলে, তারা যদি খেলে তাহলে আমরা খুশি হব। তবে একটি টেস্ট হয়েই যেন থেমে না যায়, এখানে প্রতি সিরিজে যেন অন্তত একটি টেস্ট ম্যাচ থাকে।
অলক কাপালী
সিলেটে টেস্ট অভিষেক হচ্ছে। এরচেয়ে দারুণ অনুভূতি আর কি হতে পারে? আমারও ইচ্ছা ছিল সিলেট স্টেডিয়ামে একদিন টেস্ট খেলব। দলে আমি এখন নেই। কিন্তু এই দলটাও ভালো খেলছে। অভিষেক ভেন্যুতে যদি বাংলাদেশ জিততে পারে, সেটাই হবে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। খেলতে পারছি না বলে কোনো আফসোস নেই। দলের জন্য শুভকামনা। দলে সিলেটের খেলোয়াড় রয়েছে। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য বড় সুযোগ সিলেটের মানুষ হিসেবে সব সময় আশা করি, এখানে অনেক বেশি ম্যাচ হোক। সিলেট থেকে অনেক ক্রিকেটার উঠে আসুক।
এনামুল হক জুনিয়র
সিলেটে অভিষেক টেস্টে আমি নেই। আফসোসের চেয়ে গর্ব বেশি হচ্ছে। জিম্বাবুয়ে এখানে প্রথম টেস্ট খেলবে। যাদের সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি। আমরা তাদের হারিয়েই টেস্ট জিততে শিখেছি। এই টেস্টে খেলতে পারলে ভালো হতো। মাঠে থাকব।
এত সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ভেন্যুটি। এমনিতেই এখানে ম্যাচ আয়োজন করতে চাইবে বিসিবি। আশা করছি, নতুন ভেন্যুর পথচলাটা বাংলাদেশের জয় দিয়ে শুরু হবে। সুত্রঃ যুগান্তর।