, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Avatar rtm

তারা মুখের ফুঁৎকারে কোরআনের আলো নিভিয়ে দিতে চায়: এম. হাসিবুর রহমান

প্রকাশ: ২০১৯-০২-২৩ ০৮:১৬:৩১ || আপডেট: ২০১৯-০২-২৩ ১০:০২:৪৭

Spread the love

বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক মাওলানা এম. হাসিবুর রহমান বলেছেন, ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে অমুসলিম-নাস্তিক-মুরতাদরা ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা (অমুসলিম-নাস্তিক-মুরতাদরা) মুখের ফুঁৎকারে কোরআনের আলো নিভিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। যতই চেষ্টা করুক, আল্লাহ কোরআনের আলো নিভিয়ে দিতে দেবেন না। আগামী দিনে কোরআনের আলো সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে তিনি যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।

শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাতে সাতকানিয়া উপজেলার উত্তর ছদাহা ভেদেল্লা পাড়া তৌহিদী জনতার উদ্যোগে আয়োজিত ৫ম তম তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান বক্তার আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

এম. হাসিবুর রহমান বলেন, আলো ও অন্ধকারের প্রতিযোগিতা বা দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে হযরত আদম (আ.)-এর সন্তান হাবীল ও কাবীলের যুগ হতে। কালের আবর্তনে এই দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। হযরত ইবরাহীম (আ.)-কে আগুনে নিক্ষেপ করে নমরূদ ইসলামের “জ্যোতি বা আলোকে” নিভিয়ে দিতে চেয়ে ছিলো; কিন্তু মহান আল্লাহ তায়ালা বাতিলের অন্ধকার হতে ইবরাহীম (আ.)- কে নিরাপদে রাখলেন, তাঁর মাধ্যমে বিশ্বময় বিকশিত হলো, আল্লাহর আলো, কেননা তাঁর বংশ হতে পৃথিবীতে আগমন করেছেন নাম জানা অজানা অসংখ্য নবী ও রাসূল।

তিনি বলেন, তেমনিভাবে ফেরাউনও তার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বলে হযরত মূছা (আ.)-কে পৃথিবীর আলো দেখার পূর্বেই হত্যা করার নিমিত্তে তৎকালীন জ্যোতিষী বা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শে পুত্র সন্তানদের হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা হলো মূছা (আ.)-এর মাধ্যমে বনী ইসরাইলদের মাঝে ইসলামের আলো বিকশিত করা। তাই তিনি ফেরাউনকে তার এই হীন চক্রান্তে সফল করেননি। মূছা (আ.) তার ঘরেই লালিত পালিত হলেন। ঘটনা সকলেরই জানা, ফেরাউনকে মহা শক্তিধর আল্লাহ তায়ালা সমুদ্রে ডুবিয়ে, চুবিয়ে চুবিয়ে মারলেন। ইতিাহস সাক্ষী যে কাফের বা ইসলামের শত্রুরা যখনই ইসলামকে মুছে ফেলতে চেয়েছে, মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর দ্বীনকে হিফাযত করেছেন। এবং ইসলামের শত্রুদের কী পরিণতি হয়েছে, ফেরাউনের লাশ সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি আরো বলেন, ইসলামের শত্রুরা বিশ্বশান্তির অগ্রদূত মুহাম্মাদ (সা.)কেও হত্যা করে পৃথিবীর মানচিত্র হতে চিরতরে ইসলামের নাম-নিশানা মিটিয়ে দিতে চক্রান্ত করেছিলো। কিন্তু মহাকৌশলী আল্লাহ জাল্লা শানুহু, তাঁর প্রিয়বন্ধুকে শত্রুদের কবল হতে হিফাযতের মাধ্যমে ইসলামের “আলোক রশ্মিকে” বিশ্বময় বিকশিত করেছেন। সম্মানিত উলামায়ে কেরাম! সত্য এবং মিথ্যার লড়াই চিরন্তন।

বিশিষ্ট এ ইসলামী চিন্তাবিদ ও গবেষক বলেন, যুগে-যুগে একদিকে ছিল নবী-রাসূল ও তার সঙ্গী- সাথীরা, অন্যদিকে ছিল বাতিলপন্থী তথা আল্লাহদ্রোহীরা। সত্যপন্থীদের আহ্বান ছিল অত্যন্ত সত্য, শান্তিপূর্ণ ও যুক্তিসঙ্গত। অপরদিকে ছিল অসত্য, যুক্তির পরিবর্তে অন্ধ আবেগ, উন্মত্ততা, হিংস্রতা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যতা। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় আজো তার ব্যতিক্রম নয়। সত্যপন্থীদের পথ কখনো ফুল বিছানো ছিল না, এখনো নেই। ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ, ঠাট্টা, উপহাস, গালিগালাজ ও অশালীন উপাধি ছিল সত্যপন্থীদের নিত্যদিনের সঙ্গী। এভাবে সত্যপন্থীদেরকে তারা দ্বীন প্রচারের কাজ হতে দূরে রাখতে চায়। কিন্তু আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কিয়ামত পর্যন্ত একদল সৈনিককে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত রাখবেন।

হাফেজ মাওলানা এহসানুল হকের পরিচালনায় উক্ত তাফসীরুল কোরআন মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতকানিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং সাপ্তাহিক চাঁটগার সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আবছার চৌধুরী ও ছদাহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ হোসাইন চৌধুরী।

আলহাজ্ব মোজাফ্ফর আহমদের সভাপতিত্বে উক্ত মাহফিলে তাকরীর পেশ করেন জামেয়া দারুল হেদায়ার মহাপরিচালক আল্লামা আজিজুল হক আল মাদানি, আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মুফাস্সিরে কোরআন মাওলানা ক্বারী ইলিয়াছ জিয়া আল-হেলালী, হাফেজ মোঃ মহসিন বিন রফিক, মাওলানা মোঃ আনিসুল হক ও হাফেজ মোঃ হারুন।

মাহফিলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন আলহাজ্ব আব্দুশ শুক্কুর।

Logo-orginal