, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Avatar rtm

২০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘হঠাৎ পরিদর্শনের’ নির্দেশ

প্রকাশ: ২০১৯-০২-১৫ ১১:৩৩:২০ || আপডেট: ২০১৯-০২-১৫ ১১:৩৩:২০

Spread the love
দেশের প্রায় ২০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘হঠাৎ পরিদর্শনের’ নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। জানা গেছে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিনের পর দিন ক্লাস হয় না। ক্লাসের সময় অধিকাংশ বিদ্যালয় তালাবদ্ধ থাকে। কিছু বিদ্যালয়ে স্বল্প বেতনে ‘প্রক্সি শিক্ষক’ বা ‘প্যারা শিক্ষক’ দিয়ে ক্লাস করানো হয়।

শিক্ষকরা মাসে দু-এক দিন বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে হাজিরা খাতায় সই করে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে হাওয়া হয়ে যান। আর এসব বিষয়ে খোঁজখবর রাখে না সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিও (এসএমসি)। এমনকি এসব স্কুলে পরিদর্শনেও যান না সংশ্লিষ্ট সহকারী উপজেলা অফিসার (এটিও), উপজেলা শিক্ষা অফিসার (টিও) বা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও)।

ফলে সরকারের বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে। বলছি, দেশের চরাঞ্চল ও হাওরপ্রবণ দুর্গম পাহাড়ি এলাকার প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল দশার কথা। যেখানে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে দুর্গম চরাঞ্চলের প্রায় ৩৬ লাখ শিশু-কিশোর।

আর এ ঘটনার সত্যতা স্বীকারও করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন। তিনি বলেছেন, দেশের দুর্গম পাহাড়ি ও চরাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস হয় না বললেই চলে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের বিদ্যালয়গুলো ‘হঠাৎ পরিদর্শনের’ নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মার চরের সাতটি স্কুল পরিদর্শন করি। সাতটির মধ্যে ছয়টিই বন্ধ পাই। ২৩ শিক্ষকের মধ্যে ২০ জন অনুপস্থিত ছিলেন। দুটি স্কুলে প্রকৃত শিক্ষকের বদলে ‘প্রক্সি শিক্ষক’ পেয়েছি। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে দিনের পর দিন স্কুলগুলো বন্ধ থাকে। পরিচালনা কমিটিও কোনো খোঁজখবর রাখে না। এসব দেখে তাজ্জব বনে গেছি।

সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে আকরাম আল হোসেন বলেন, অনুপস্থিত ২০ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে নতুন ২০ শিক্ষককে প্রেষণে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। টিওকে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায়, এটিওকে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে এবং ডিপিওকে ময়মনসিংহের ন্যাপে বদলি করা হয়েছে।

সরকারি হিসাব মতে- দেশের চরাঞ্চল, হাওরপ্রবণ ও দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে ২০ হাজার ৫২টি স্কুলে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৭৯ শিক্ষক রয়েছেন। আর শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৬৭০।

সরকার মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণসহ উপবৃত্তি দেয়। এসব স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারী শতভাগ সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেন অথচ বিদ্যালয়গুলোতে তাদের উপস্থিতি অতি নগণ্য।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু নজরদারি না থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত উপস্থিত না হয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে শিক্ষা অফিসার ও সহকারী শিক্ষা অফিসারদের সঙ্গে আঁতাত করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি স্বাক্ষর করে নিচ্ছেন।

বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক অনিয়মিত হওয়ায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও খোশগল্প করে বাড়ি ফিরছে। কোনো কোনো স্কুল দিনের পর দিন বন্ধ থাকছে। এতে করে চরাঞ্চলের মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা ভেস্তে যেতে বসেছে বলে ওই সব এলাকার অভিভাবকদের অভিযোগ।

বাংলাদেশ জার্নাল

Logo-orginal