, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় জেলা প্রতিনিধিদের ক্ষোভ

প্রকাশ: ২০১৯-০৫-১২ ১৭:৫২:১৮ || আপডেট: ২০১৯-০৫-১২ ১৭:৫৬:১২

Spread the love

চট্টগ্রাম বিভাগের সাত জেলার উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে সম্মেলন শুরম্ন করার বার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তৃণমূলের সম্মেলন শেষ করতে বলেছেন তিনি। রমজান মাস থেকে তৃণমূলে সম্মেলন শুরম্ন করতে নেতৃবৃন্দকে তাগাদা দেন।

গতকাল নগরীর কাজীর দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত চট্টগ্রামের সাত জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ বিশেষ বর্ধিত সভায় তিনি এ নির্দেশনা দেন। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দড়্গিণ জেলা, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি এবং খাগড়াছড়ি জেলা নিয়ে যৌথ এ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।

তৃণমূল নেতাদের মনের কথা শুনতে এ বর্ধিত সভার আয়োজন করা হলেও উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের কোনো নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দিতে পারেননি। কেবল সাত জেলা থেকে সাতজন নেতাকে সভায় বক্তব্য রাখতে দেওয়া হয়। জেলা নেতৃবৃন্দের অনেকে সাংগঠনিক কর্মকা- নিয়ে তাদের বক্তব্যে ড়্গোভ প্রকাশ করেন।

চট্টগ্রাম দড়্গিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ তাঁর বক্তব্য সংসদ সদস্যদের বিরম্নদ্ধে ড়্গোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এমপিরা সংগঠনের কতটুকু দায়িত্ব পালন করছেন ? তারা আদৌ সংগঠনকে মানছেন কিনা ? তাদের কাছে তো সংগঠন ছোট। সংগঠনের নেতারা তো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। কিন’ এমপি-মন্ত্রীরা তো প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিং করেন।’

তিনি বলেন, ‘উপজেলার সাংগঠনিক কর্মকা- এমপি সাহেবের হুকুমের ওপর নির্ভর করে। তাই যদি হয়, তাহলে এমপিদেরকে উপজেলার সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়ে দেওয়া উচিত।’

নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনও ড়্গোভ ঝাড়েন তাঁর বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘অনেকে সংগঠনের পদে থেকেও দলের কোনো কর্মকা-ে অংশ নেন না। অথচ তারা তাদের ব্যক্তিগত কিংবা ব্যবসায়িক কাজকর্ম ঠিকই করে থাকেন। দলের পদ ব্যবহার করে সকল সুযোগ-সুবিধা তারা নেন। কিন’ দলের কর্মসূচিতে আমরা তাদেরকে পাই না। এরচেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না।’

কিছু নেতাকর্মী ফেসবুকে দলের বিরম্নদ্ধে সমালোচনা করে নানা রকম পোস্ট দিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে আমাদের নেতাকর্মীরা দলের অপর নেতাকর্মীদের বিরম্নদ্ধে নানা রকম মনত্মব্য করছেন, সমালোচনা করছেন। কিন’ তারা আমাদের প্রতিপড়্গ দলের বিরম্নদ্ধে কোনো সমালোচনা করেন না।’

চকরিয়ার সংসদ সদস্য জাফর আলম বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচনে নৌকার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল নৌকা। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন তারাই উপজেলা নির্বাচনে নৌকাকে ফুটো করেছে। উপজেলা নির্বাচনে যারা সংগঠনের বিরম্নদ্ধে অবস’ান নিয়েছিল তাদের বিরম্নদ্ধে কেন্দ্র থেকে যদি ব্যবস’া নেওয়া না হয় তাহলে ভবিষ্যতে এ সংগঠন ঠিকে থাকা কঠিন হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ নেতাদের এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন,উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যেসব সংসদ সদস্য দলীয় প্রতীক নৌকার প্রার্থীদের বিরোধিতা করেছেন তারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হবেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা নিশ্চয় এর ফল পাবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।

দলীয় সংসদ সদস্যদের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘যত দ্রম্নত নেতাকর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব কমিয়ে ফেলবেন ততো আপনাদের জন্য মঙ্গল। এলাকায় উন্নয়ন কর্মকা-ে নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ত করম্নন।’

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরম্ন বলেন, ‘সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হলে দলের প্রবীণ নেতাদের মূল্যায়ন করতে হবে। আর তরম্নণ-নতুন নেতাকর্মীদের দলে সুযোগ দিতে হবে। এই দুইয়ের সমন্বয়ে সংগঠন শক্তিশালী হবে।’

তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করতে হলে নিরহঙ্কার হতে হবে আর মানুষকে আপন করে নিতে হবে। একজন রাজনৈতিক নেতা পরোপকারী হয়। নিজের স্বার্থকে বিসর্জন দিয়ে পরের স্বার্থের জন্য কাজ করে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ড়্গমতায় থাকলে বিনয়ী হতে হয়। বিনয় মানুষকে মহান করে, বিনয়ী মানুষকে মানুষ ভালোবাসে। উদ্ধত্য মানুষ পছন্দ করেন না। অনেক উন্নয়ন করেও অনেক নেতা জনপ্রিয় হতে পারেননি। তাই আপনাদের বিনয়ী হতে হবে।’

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও শিড়্গা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী উপজেলা, থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের কমিটিতে দলের পরীড়্গিত ও প্রবীণ নেতাদের উপদেষ্টা হিসেবে রাখা যায়। এতে সংগঠনের ভিত্তি মজবুত হবে।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের সঞ্চালনায় বর্ধিত সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম, দড়্গিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী, এম এ লতিফ ও ওয়াসিকা আয়েশা খান, খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্য শৈ হ্লা, রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা, কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান। উৎসঃ সুপ্রভাত ।

Logo-orginal