admin
প্রকাশ: ২০১৯-০৭-০৭ ১০:৪৪:৪৯ || আপডেট: ২০১৯-০৭-০৭ ১০:৪৪:৪৯
হাকিমুন বেগম। সত্তরের বেশি বয়স। ন্যুব্জ। লাঠিতে ভর দিয়ে কোনো রকমে হাঁটতে পারেন। অন্যের সহযোগিতা ছাড়া প্রায়-নিরুপায় পথচলা তাঁর। রোগ-শোকে জর্জরিত বৃদ্ধাকে দেখলে মনে হবে যেন শতবর্ষী। অসুস্থ অথচ সামান্য ওষুধ কেনার টাকা নেই তাঁর, তবে ছেলে আনন্দ উল্লাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করছেন তিনতলা বিশিষ্ট অট্টালিকা।
বেতাগী উপজেলা হোসনাবাদ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মৃত আব্দুল হামিদ হাওলাদার এর সন্তান থাকা সত্ত্বেও এমন মানবেতর জীবন যাপন করছেন স্ত্রী সত্তর বছরের বৃদ্ধা হাকিমুন বেগম। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল এক ছেলে ও স্বামীর রেখে যাওয়া বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি থাকা সত্ত্বেও স্বামীহারা এই বৃদ্ধার মাথা গোঁজার জায়গা নেই। রাতে ঘুমানোর জন্য বারন্দায় ঠাঁই হয়েছে। ছেলের অবহেলা আর ছেলের বউয়ের অমানবিক অত্যাচারের মুখে নিস্তব্ধ হাকিমুন।
নিদারুণ কষ্ট আর মানবেতর যন্ত্রণায় বছরের পর বছর মানুষের দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আবার অনেক সময় বাবার বাড়ি গিয়ে ভাইয়ের ছেলেদের কাছে থাকেন। অসুস্থ হলে ওষুধটুকু কিনে দেন না ছেলে আবদুল মন্নান ওরফে রাঙ্গামিয়া।
মানুষের দুয়ার আর হাসপাতালের বারান্দা তাঁর ঠিকানা। বাড়িতে যেখানে রাত্রিযাপন সেখানে আছে ভাঙা একটি চৌকি, চট আর কিছু পানির বোতল। বিদ্যুৎ থাকা সত্ত্বেও নেই বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা। অসহ্য গরম আর মশার কামড় বৃদ্ধার নিত্যসঙ্গী। কোনোরকমে রাত পার হলেই লাঠিতে ভর করে বারান্দার ছাপড়া থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। কখনো রাস্তার পাশে নতুবা হাসপাতালের এসে বসে থাকেন।
এমন কষ্টের দৃশ্য সন্তানের চোখে না পড়লেও গ্রামের মানুষ ঠিকই উপলব্ধি করতে পারেন। স্থানীয়দের সাহায্য-সহযোগিতায় খাবার আর ওষুধ জোটে।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হাকিমুন বেগম বুকভরা কষ্টগুলো চিৎকার করে বলতে চাইলেও বয়সের ভারে আর অত্যাচারের ভয়ে বলতে পারেন না। কথা বললে শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকেন। অনেক কষ্টে কথা বলেন।
গত সোমবার দুপুরে উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিশা বাজারে অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসে কথা বললে জানা যায় এক নিষ্ঠুর কাহিনি। #সংগৃহীত ফেইচবুক থেকে।