, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Ismail hossain Ismail hossain

রাঙ্গুনিয়ার খিলমোগলে বিয়ের দিনে বরের মৃত্যু

প্রকাশ: ২০১৯-০৯-১১ ২২:২৪:৩৩ || আপডেট: ২০১৯-০৯-১১ ২২:২৪:৩৩

Spread the love

ইসমাঈল হোসেন নয়ন, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ মেহেদী রঙ্গে রাঙ্গাতে প্রস্তুত ছিল বাড়ির সবাই। দুই সপ্তাহ আগে থেকেই দাওয়াত নামা ছাপিয়ে মেহেমান দাওয়াত থেকে শুরু করে কয়েক দিন ধরে ঘর সাজানো, বিয়ের প্যান্ডেল, গেইট, লাইটিং সহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। অপেক্ষা শুধু নতুন বউ ঘরে তোলার। কিন্তু যেই সজ্জিত গেইট দিয়ে নতুন বউয়ের হাত ধরে ঘরে প্রবেশ করার কথা ছিল, সেই গেইট দিয়েই লাশের কফিনে চিরস্থায়ী কবরস্থানে যেতে হলো নতুন বরকে।

হৃদয়বিধারক এই ঘটনাটি ঘটেছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের মোগলের হাট নলুয়ারপাড়া এলাকায়। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিয়ের আসরেই মৃত্যু হয় ওই এলাকার মোহাম্মদ জাফর আহম্মদের প্রবাস ফেরত পুত্র মোহাম্মদ সোলাইমানের (৩০)। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) তার মেহেদী রাত ছিল এবং বৃহস্পতিবার ছিল তার বিয়ে অনুষ্ঠান। কিন্তু মেহেদীর দিন সকাল ১০টার দিকে মারা যান তিনি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা সেকান্দর হোসেন।

তিনি বলেন, বিয়ের পাত্রির সাথে তার ১০ দিন আগে সামাজিকভাবে আকদ হয়। বুধবার মেহদী অনুষ্ঠান ও বৃহস্পতিবার বিয়ে অনুষ্ঠান ছিল। এজন্য বিয়ের ক্লাব, ঘর সাজানো, মেহেমান আসা সহ যাবতীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। আগেরদিন রাত থেকেই তার শরীর খারাপ লাগার বিষয়টি বাড়ির লোকদের জানিয়েছিল। সকালেও নতুন বউয়ের সাথে তার ফোনে কথা হচ্ছিল। কিন্তু কথা বলতে বলতেই খারাপ লাগতেছে বলে মাটিতে পড়ে গিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে। স্থানীয়রা তার চোখেমুখে পানি দেওয়ার পরও তার জ্ঞান ফিরছিল না। পরে তাকে চন্দ্রঘোনা মেশন হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চিকিৎসক জানান, হৃদরোগেই মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিয়ে বাড়ির সব আয়োজন শেষ। অপেক্ষা শুধু নতুন বউ ঘরে তোলার। কথা ছিল নব বধু নিয়ে স্টেইজে বসার কিন্তু সব ঠিক থাকলেও বরের নিথর দেহ পড়ে আছে বাড়ীর উঠানে খাটের উপর। সাজানো প্যান্ডেলে বাড়িভর্তী মেহেমান সহ পরিবারের স্বজনরা যেখানে আনন্দ-উৎসব করার কথা ছিল, সেখানে লাশের কফিনকে ঘিরে বাড়িতে সবাই কান্নায় ভেঙে পড়ছে। কে দেবে কাকে সান্তনা। বিয়ে বাড়ির এমন শোকের মাতম ছড়িয়ে পড়েছে পুরা উপজেলায়।

পরিবারের স্বজনরা জানায়, নিহত সোলাইমান পরিবারের সবার বড় সন্তান। দীর্ঘ সময় প্রবাসে ছিল সে। সম্প্রতি দেশে ফিরলে স্বনির্ভর রাঙ্গুনিয়া ইউনিয়নের শান্তিনিকেতন এলাকা থেকে তার বিয়ের পাত্রি ঠিক হয়। গত ১০ দিন আগে তার আকদও সম্পন্ন হয় ওই মেয়ের সাথে। সেই থেকে ফোনে তাদের নিয়মিত কথা হতো। মারা যাওয়ার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত তার সাথে কথা হয়েছিল বর সোলাইমানের। কিন্তু যেদিন তার মেহেদী রাত ছিল সেদিন বিয়ের আসরেই সকাল ৯টার দিকে হঠাৎ হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান তিনি। একই দিন বাদে আ’সর জানাজা নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়।

Logo-orginal