admin
প্রকাশ: ২০২০-০২-২৫ ০৯:২৮:৩৮ || আপডেট: ২০২০-০২-২৫ ১১:৫৫:৩৫
আবুল কাশেম ( প্রবাসী কলামিস্ট)ঃ কুয়েত নামক ছোট্ট দেশটির জন্য লেখার শুরুতে আল্লাহর নিকট করুণা কামনা করছি কারণ, আমি যখন লেখাটা শুরু করেছি, তখন কুয়েতে ৩ ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়ার খবরে তোলপাড় চলছে । আল্লাহ তায়ালা দেশটিকে হেফাজত করুন-আমিন ।
বিশ্বের আলোচিত দেশ তেল সমৃদ্ধ দৌলতুল আল কুয়েত, যে দেশে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয় দুই দিন, তথা ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী।
আগামী ২০৩৫ সালকে টার্গেট করে NEW KUWAIT নাম ধারণ করে বিভিন্ন মেঘা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন ও দেশটির সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ চলছে ।
বিশ্বের ইতিহাসে দুইবার জোরেশোরে কুয়েত নামক দেশটির নাম আলোচনায় আসে, ১মবার আশির দশকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ধনী দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়ে, ২য়বার পার্শ্ববর্তী দেশ ইরাকের প্রেসিডেন্ট লৌহমানব সাদ্দাম কতৃক ১৯৯০ সালে কুয়েত দখল করলে।
সাদ্দাম হোসেনের কুয়েত দখল ছিল চরম বিশ্বাসঘাতকা, কারণ কুয়েতের মরহুম আমীর শেখ জাবের আল সাবাহ ইরান ইরাক যুদ্ধে ইরাককে সর্বাত্নক সহযোগিতা করেছিল, অথচ আব্দালি সীমান্তে একটি তৈল কূপের বিষয় নিয়ে সাদ্দামের ভুল সিদ্ধান্ত তাকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হতে হয়েছে ।
আরব সাগরের তীরে অবস্থিত দেশ কুয়েতের মুল ভূখন্ডে দেশ হিসেবে ১৫২১ সালে পতুর্গীজ ব্যবসায়ীদের অধীনে ছিল ষোল শতক পর্যন্ত ।
কুয়েত প্রতিষ্ঠার ইতিহাসে আল সাবাহ, আল সালেম, আল জাবের, আল সৌদ, ওছমান, খলিফা প্রমুখ পরিবারের বিভিন্ন অবদান রয়েছে, তবে আমার লেখার উদ্দেশ্য ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী নিয়ে।
১৬১৩ সালে বর্তমান কুয়েতের রাজধানী বা আল আসিমা জেলার উপর ভিত্তি করে কুয়েত প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
মোট আয়তন ১৭৮১৮ কিলোমিটার ও ২০১৭ সালের হিসেবে মোট জনসংখ্যা ৪.১৩৭ মিলিয়ন।
কুয়েত প্রথমে বনি খালিদ বংশের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল, যারা বর্তমান কুয়েত উপসাগরে একটি মৎস্য গ্রাম নির্মাণ করেছিলেন।
১৯৬১ সালে কুয়েতের প্রতিষ্ঠাতা শেখ আব্দুল্লাহ আলসালিম আল সাবাহ আমির হয়েছিলেন শেখ আব্দুল্লাহ ব্রিটেনের সাথে চুক্তি করে বৃটিশ শাসন থেকে কুয়েতকে মুক্ত করেন ।
আজ ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২০ সাল, কুয়েতে ২দিন ব্যাপি জাতীয় দিবস পালিত হচ্ছে, অর্থাৎ ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি, যদিও করোনা আতঙ্কে স্বাধীনতা দিবসের সব অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে ।
কুয়েতের স্বাধীনতা দিবসের আসল দিন কোনটা?
জুন ১৯, ১৯৬১ এ ‘ব্রিটিশদের নিরাপত্তা দান চুক্তি’ বাতিল হয়ে যায় আর কুয়েতের স্বাধীনতা ঘোষিত হয়। চুক্তিটি ২৩ জানুয়ারি ১৮৯৯ এ স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
তাহলে লোকে কেন জাতীয় স্বাধীনতা দিবস ২৫ ফেব্রুয়ারি পালন করে?
কারন ১৯৫০ সালের এই দিনে শেখ আব্দুল্লাহ আল সালিম আল সাবাহ আমির হয়েছিলেন (শেখ আব্দুল্লাহ ব্রিটেনের সাথে চুক্তি বাতিল করে সংবিধান ঘোষণা করেছিলেন, আর তখন প্রথম বার নতুন এক (বর্তমানের) জাতীয় সংগীত ব্যবহার করা হয়েছিল।
আর ২৬শে ফেব্রুয়ারির বিশেষত্ব কি কুয়েতের জন্য?
২৬ ফেব্রুয়ারি কুয়েত ইরাকি আগ্রাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল যা অগাস্ট ২, ১৯৯০ তে শুরু হয়েছিল আর সাত মাস ধরে চলেছিল। জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের আওতায় আমেরিকার নেতৃত্বে ৩০টির বেশী দেশ কুয়েতকে স্বাধীন করতে সাহায্য করেছিল।
এবং আমার বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করেছে ১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধে ।
তথ্যসুত্রঃ কুয়েত উইকিপিডিয়া, কুয়েতের ইতিহাস, সাংবাদিক আব্দুল লতিফ আল মারজানের লেখা থেকে সংগৃহীত ।
লেখক কুয়েত প্রবাসী ।