, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

এক মাঠেই ২১বছর

প্রকাশ: ২০২০-০৫-১০ ১৪:২৯:৪৪ || আপডেট: ২০২০-০৫-১০ ১৪:২৯:৪৫

Spread the love

ইসমাঈল হোসেন নয়ন, রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ স্মৃতির যে অধ্যায়টি সবচেয়ে সুখের তা হলো আমাদের স্কুল-কলেজের জীবন। এমন শিক্ষার্থী খুব কমই আছে যারা শিক্ষা জীবনের ২১টি বছর একটি মাঠেই কাটিয়েছে। যারা কাটিয়েছে তারাই ভাগ্যবান। লিখছি উত্তর রাঙ্গুনিয়া অঞ্চলের ভাগ্যবানদের কথা। বলছি ঐতিহ্যবাহী উত্তর রাঙ্গুনিয়া ডিগ্রি কলেজ, উত্তর রাঙ্গুনিয়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং উত্তর রাঙ্গুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কথা। তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটিই মাঠ। উত্তর -পশ্চিম পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর-পূর্ব পাশে উচ্চ বিদ্যালয় এবং দক্ষিণ পাশে কলেজ। প্রাইমারি স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিক এরপর কলেজ। হাতেখড়ি হতে শুরু করে ডিগ্রি পর্যন্ত দীর্ঘ ২১বছর পড়াশোনা করার সুযোগ হয় এইখানে। মাঠ ছাড়াও রয়েছে প্রতিষ্ঠানের সাথে লাগানো মসজিদ, ব্যাংক সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। রাঙ্গুনিয়ায় এতো সুন্দর পরিবেশে পড়ালেখার সুযোগ অন্য কোথাও আছে বলে মনে হয়না। চারপাশে বড় বড় দালান মাঝখানে বিশাল মাঠ। এ যেন সাজানো এক শিক্ষার বাগান।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শান্তনু বিশ্বাস বলেন, আমরা এমন একটা জায়গায় শিক্ষকতা করছি যেখানে একজন শিশু, শিশু শ্রেণী হতে শুরু করে ডিগ্রি পর্যন্ত শেষ করার সুযোগ রয়েছে। আসলেই এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা অনেক ভাগ্যবান।

উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, পড়ালেখার পাশাপাশি খেলাধুলা সহ বিভিন্ন দিক থেকে এই প্রতিষ্টানের শিক্ষার্থীরা সুবিধা বেশি পায়। উত্তর রাঙ্গুনিয়া অঞ্চলের খেলাধুলা বিকাশে এই মাঠের ভুমিকা অপরিসীম।

কলেজের অধ্যক্ষ মুহিবুল কবির জাহেদী বলেন, তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটি মাঠ। এবং এক মাঠেই একজন শিক্ষার্থী বেড়ে উঠে। অনেক সময় প্রাইমারী, মাধ্যমিক এবং কলেজ লেভেলে শিক্ষার্থীদের খাপ খেয়ে উঠতে সময় লাগে কিন্তু এই সব প্রতিষ্টান একই স্থানে হওয়ায় তাদের এই সমস্যায় পড়তে হয়না।

স্কুল-কলেজ শৈশব সবকিছুই আবার ফিরে পেতে সবার ইচ্ছে করে। কিন্তু তা তো হওয়ার নয়। সময়ের স্রোত অতীত ফিরিয়ে দেয় না। তাই স্মৃতি আকড়ে বেঁচে থাকতে হয় জীবনভর। যারা এ প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখা শেষ করে শহরে কিংবা দেশের বাইরে অবস্থান করছে তারা যখনি গ্রামে আসে একটি বারের জন্য হলেও এই মাঠে ছুটে আসে। প্রতিদিন বিকেলে দূর দূরান্ত থেকে মাঠে খেলতে আসে অনেকেই। স্কুল-কলেজের যাবতীয় অনুষ্ঠান সহ রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠান সহ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে এই মাঠ। ২মাসের ব্যবধানে মাঠ আজ কতোই না সুন্দর সবুজে সমারোহ। কিন্তু মাঠে নেই কোন প্রাণবন্ততা। অনেকে এই মাঠে আসেনি ১ মাস কেউ হয়তো ২মাস । আসবে কেমনে মানুষ তো আজ ঘরবন্দী। করোনাই তো রাজত্ব করছে পৃথিবীতে। স্কুল- কলেজের প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাজারো স্মৃতি অনুভূতি এই মাঠকে ঘিরে। যারা প্রতিদিন খেলতে আসতো তাদের কথা নাই বা বললাম। কতোই চেনা মাঠ আজ তাদের বড়ই অচেনা। অপ্রাকাশিত এক দূর্বলতা যার কোন প্রতিষেধক ও নেই। এই মাঠের সাথে জড়িত কেউ ভালো নেই হয়তো আপনারাও ভালো নেই। চারদিকে লাশের গন্ধ মৃতের মিচিল। আসলে পুরো বিশ্ব ভালো নেই। ভালো থাকুক এই মাঠে বেড়ে ওঠা সকল মানুষ। পৃথিবী আবারো সুন্দর হোক। মাঠ ফিরে পাক তার প্রাণবন্ততা। বেঁচে থাকলে আবারো এই মাঠে দেখা হবে কোন এক রঙ্গিন সময়ে। মাঠ ও হয়তো বলছে বন্ধুগুলো সুস্থ থাকুক,প্রিয় মানুষরা সুস্থ থাকুক.!

– অনেকদিন কাউকে দেখি না”!

Logo-orginal