Ismail hossain
প্রকাশ: ২০২০-০৬-১৭ ১১:৫৭:৫৮ || আপডেট: ২০২০-০৬-১৭ ১১:৫৮:০১
ইসমাঈল হোসেন নয়ন,রাঙ্গুনিয়া প্রতিনিধিঃ “অতিরিক্ত শ্বাসকষ্ট আব্বু অক্সিজেন বলে বলে চিল্লাছিলো, আমি কোথাও খুঁজে পেলাম না অক্সিজেন। কলিজটা ফেটে যাচ্ছিলো চোখের সামনে এমন মৃত্যু দেখে- শ্বাসকষ্টে মারা যাওয়া প্রয়াত শিক্ষকের ছেলে”। গত পাঁচ দিন আগে এই প্রতিবেদকের দেওয়া এমন স্টাটাস দেখে রাঙ্গুনিয়াতে ফ্রি অক্সিজেন সেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ইসতিয়াক হোসাইন জিসান নামে এক যুবক। আগামী শুক্রবার(১৯ জুন) থেকে রাঙ্গুনিয়াবাসীকে এই সহায়তা দেবেন তিনি।
করোনাভাইরাস যতোই মাথাচাড়া দিচ্ছে শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যাও ততো বাড়ছে। শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে অক্সিজেন। তবে অক্সিজেন সংকটে চট্টগ্রামে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে কেউ না কেউ। এছাড়া চট্টগ্রাম সহ রাঙ্গুনিয়াতে হঠাৎ করেই বেড়েছে শ্বাসকষ্টের রোগী। রাঙ্গুনিয়াতে অক্সিজেন সেবা নেই বললেই চলে। বিষয়টি ভাবালো ২৮বছর বয়সী এই যুবককে। অক্সিজেন নিয়ে রোগীদের সেবায় এগিয়ে আসার উদ্যোগ তিনি বললেন, পরিস্থিতি দেখে চিন্তা করলাম এসব মানুষের জন্য কিছু করি। এক মুহূর্তের জন্য দেরি না করে অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করতে থাকি। শেষে চট্টগ্রাম শহর গিয়ে অক্সিজেনের দুইটি সিলিন্ডার কিনে নিয়ে আসি। অক্সিমিটার কালকের মধ্যে হাতে আসবে আশা করছি পরশু থেকেই এই সেবা চালু করতে পারব। তবে এ সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কিছু শর্ত উল্লেখ করেছেন,
১) ডাক্তারের পরামর্শের ভিত্তিতে রোগীর আত্মীয় বিনামূল্যে এই সেবার নির্ধারিত ফরম পূরণ করে জাতীয় পরিচয়পত্র কিংবা পাসপোর্টের ফটোকপি জমা দিয়ে এই সেবা গ্রহণ করতে পারবে। ফরম পূরণের সময় অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্টের অরিজিনাল কপিও সাথে আনতে হবে।
২) এই অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ চিকিৎসা সেবার একটি অংশমাত্র, পূর্ণ চিকিৎসা নয়। যা কেবলমাত্র রোগীর সাময়িক শ্বাসকষ্ট লাঘবের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবেন। রোগীর পরিবারকে নিজ দায়িত্বে এটির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ভুলত্রুটি ব্যবহারে দূর্ঘটনায় কতৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।
৩) এই অক্সিজেন সিলিন্ডার সর্বোচ্চ ৪৮ ঘন্টার জন্য সরবরাহ করা হবে। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সেবাগ্রহীতাকে সিলিন্ডার নিজ দায়িত্বে কতৃপক্ষকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
৪) অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যাবহারের সময় সিলিন্ডারের কোনো প্রকার ক্ষতি সাধন হলে সেবাগ্রহীতাকে ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব নিতে হবে।
৫) এই সেবা যদিও ফ্রি দেওয়া হবে এরপরেও এই সেবাকে সচল রাখতে সেবাগ্রহীতা যদি সামর্থ্যবান হয় তাহলে রিফিলের জন্য আর্থিকভাবে সহযোগিতা করতে পারবেন।
৬)এই সেবাটা চন্দ্রঘোনা থেকে নিজ দায়িত্বে এসে নিয়ে যেতে হবে। যদি সেচ্ছাসেবী পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই সেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে পাঠানো হবে। যোগাযোগঃ ০১৮১৯৩৬২২৪৫
তিনি বলেন, সাত মাস ধরে বেকার। ইনকাম নেই তারপরেও ধার করে টাকা নিয়ে এই সিলিন্ডার গুলো কিনেছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বড় ভাই পাঁচ হাজার টাকা দিয়েছেন। সমাজের বৃত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন তিনি একটা গ্যাস সিলিন্ডার রাঙ্গুনিয়া মডেল থানায় দিতে চান।