, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

রাঙ্গুনিয়ার হাটগুলোতে গরু আছে, কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা নেই

প্রকাশ: ২০২০-০৭-২৮ ১১:০২:৫৮ || আপডেট: ২০২০-০৭-২৮ ১১:০৩:০০

Spread the love

ইসমাঈল হোসেন নয়ন, রাঙ্গুনিয়াঃ ঈদের সময় ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে রাঙ্গুনিয়ার সাপ্তাহিক হাট-বাজার সহ বিভিন্ন স্থানে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। তবে হাটে বিপুল সংখ্যক গরু ও বিক্রেতা থাকলেও নেই কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা। সারি সারি গরু। পরম যত্নে লালিত গৃহপালিত পশু বিক্রির জন্য হাটে নিয়ে এসেছেন খামারিরা। কাঙ্ক্ষিত ক্রেতা না থাকায় লোকশানের আশঙ্কায় এসকল খামারির। হাটগুলোতে পশুর কোনও কমতি নেই। বিকেলে সামান্য সংখ্যক ক্রেতা দেখা গেলেও সকালে একেবারের বাজার খালি। আবার কোনও কোনও হাটে ক্রেতা ও পশু উভয়ই কমেছে। গত দুইদিন উপজেলার বেশ কয়েকটি হাট থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তবে অন্যান্য বছর এ সময়েই জমজমাট হয়ে উঠত কোরবানির পশুর হাট। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের আয় কমে যাওয়ায় কোরবানির পশুর চাহিদাও আগের চেয়ে কমে এসেছে। অনেকে আবার স্বাস্থ্যবিধির কারনে বাজার থেকে গরু কেনা থেকে বিরত থাকছেন। এতে হাটে ক্রেতা নেই বললেই চলে। এ বছর রাঙ্গুনিয়ায় সরকারিভাবে পাঁচটি গরুর হাটের নিলাম হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকে আরো দুইটি পশুর বাজারের নিলাম হয়। সব মিলিয়ে সাতটি পশুর হাট বসেছে রাঙ্গুনিয়ায়। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ীভাবে অনেকগুলো পশুর হাট বসেছে। কিন্তু কোনটাতেই তেমন ক্রেতার দেখা নেই।

রবিবার(২৬জুলাই) সকালে উপজেলার মরিয়মনগর, শান্তিনিকেতন, রাণীরহাট সহ বেশ কয়েকটি অস্থায়ী গরুর হাটে গিয়ে দেখা গেছে, হাটভর্তি পশু। নির্ধারিত এলাকা অতিক্রম করে আশপাশের খোলা জায়গায় পর্যন্ত হাট ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু যে পরিমাণ পশু রয়েছে, সে পরিমাণ ক্রেতা চোখে পড়েনি। সকাল পেরিয়ে বিকালের দিকেও একই চিত্র বিরাজ করে। বিক্রেতারা পশু নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

আবার আজ সোমবার(২৭জুলাই) ধামাইরহাট বাজারের দৃশ্য ভিন্ন। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় যথেষ্ট গরু বিক্রি হচ্ছে এই হাটে। পারুয়া থেকে গরু কিনতে এসেছেন গোলাম রহমান। তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধুসহ এই হাটে গত বৃহস্পতিবারও এসেছি। তখন দাম বেশি মনে হয়েছিল। কিন্তু আজ দাম তুলনামূলক কম। আজ গরু কিনে বাড়ি ফেরার ইচ্ছা আছে।

গরু কিনে বাড়ি ফেরার পথে দেখা হয় শামসুল আলমের সাথে। তিনি বলেন, দুইটা গরু দেখেছি তার মধ্যে একটা কিনে নিলাম। দামও বেশি বলে মনে হয়নি।

গরু বিক্রি করতে আসা হাফিজুল ইসলাম জানান, তিনি সকালে সোনারগাঁও থেকে ৩টি গরু নিয়ে এসেছেন। এর মধ্যে এখনও একটিও বিক্রি হয়নি। তিনি বলেন, যেসব ক্রেতা আসছেন, তারা দাম বলছেন কম।

রোয়াজারহাট গরুর বাজারে রাইখালী থেকে ৯টা গরু নিয়ে আসা দেলোয়ার বলেন, “৫ বছর ধরে কোরবানিতে এই বাজারে গরু নিয়ে আসি। এবারের মতো অবস্থা কোনো সময় দেখি নাই। গত দুই বাজারে ৩টা গরু বেচা হইছে। আরও ৬টা আছে। সকাল ১২টা পর্যন্ত কোন ক্রেতা আসেনি।

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে দুইটি ষাঁড় লালন পালন করেছেন কৃষক ইউনুস মিয়া। বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন রোয়াজারহাট গরুর হাটে। গরু দু’টি পিকআপে হাটে আনতে খরচ হয়েছে এক হাজার টাকা। তবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত গরু দু’টির কাছে আসেনি কোনো ক্রেতা। বিক্রি করতে না পারলে ফের গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই বলে জানান ইউনুস মিয়া।

উপজেলার প্রায় হাট গুলোতে দেখা গেছে গরুর বেপারি ও রাখালরা অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। দর্শক থাকলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। তাদের আশা শেষের দিকে বাড়বে ক্রেতার সংখ্যা। তবে এসব বাজারে সামাজিক দুরত্ব নেই বললেই চলে। ক্রেতারা কোনো সামাজিক দূরত্ব না মেনেই গায়ের সঙ্গে গা লাগিয়ে দরাদরি করছেন। অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতারই মুখে মাস্ক নেই। বেশ কিছু ক্রেতার সঙ্গে এসেছে তাঁদের শিশুসন্তানেরাও। এসব শিশুর মুখেও মাস্ক নাই। কারও মাস্ক পকেটে আর বাকিদের থুতনিতে।

Logo-orginal