, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

ইসরাইলি কারাগার থেকে হুঁশহীন হয়ে বের হচ্ছে ফিলিস্তানিরা’

প্রকাশ: ২০২১-০৪-০৯ ১৮:৩৪:১৩ || আপডেট: ২০২১-০৪-০৯ ১৮:৩৭:২৪

Spread the love

(ছবিঃ মনসুর শাহায়েত ও তার পরিবার )
আবুল কাশেম (প্রবাসী কলামিস্ট)ঃ ইহুদীদের কর্মযজ্ঞের শপথ হল মুসলিম জাতি সত্তাকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়।
ফিলিস্তিন ভূখণ্ড দখলের পর থেকে সে পরিকল্পনা নিয়ে আরবদের জাতিগতভাবে নিশ্চিহ্নকরণের বা নিধনের সত্যটি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ৮৫% সফল ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল ।

ফিলিস্তিনের গাজা থেকে দুই মাইল উত্তরে কিবুটস এলাকা। এখানে ১৯৩০’র দশকে পোল্যান্ড থেকে আসা ইহুদীরা কৃষি খামার গড়ে তুলেছিল।

ইহুদিদের পাশেই ছিল ফিলিস্তিনী আরবদের বসবাস। সেখানে আরবদের কৃষি খামার ছিল। তারা কয়েক শতাব্দী ধরে সেখানে বসবাস করছিল।

সে সময় মুসলমান এবং ইহুদীদের মধ্যে সম্পর্ক মোটামুটি বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল।

কিন্তু ১৯৩০’র দশকে ফিলিস্তিনীরা বুঝতে পারলো যে তারা ধীরে-ধীরে জমি হারাচ্ছে। ইহুদিরা দলে-দলে সেখানে আসে এবং জমি ক্রয় করতে থাকে।

এরপর থেকে আস্তে আস্তে শুরু হয় নির্যাতন, হামলা, জবরদখল, কারাগারে বন্ধী, বাড়ি ঘর দখল ইত্যাদি, ইহুদীদের অকথ্য নির্যাতনের প্রতিবাদী কন্ঠসর ফিলিস্তানী নেতা ও মরহুম প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরফাত ।

অভিশপ্ত ইসরায়েলের দখলদারিত্ব থেকে মাতৃভূমি ফিলিস্তিনকে মুক্ত করতে আমৃত্যু সংগ্রাম করে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক ইয়াসির আরাফাত। ফিলিস্তিন মুক্তি সংগ্রামের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও ত্যাগী নেতা ছিলেন তিনি, তাকে ষড়যন্ত্র করে দুনিয়া থেকে বিদায় করে ইহুদী সরকার ।

শুধু ফিলিস্তিনের নয়, সারাবিশ্বের নিপীড়িত জনগণের মুক্তির প্রতীক এ নেতা ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যু নিয়েও নানান প্রশ্ন রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে তার মৃত্যুর পেছনে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সম্পৃক্ততার খবর প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল জাজিরা ।

দুঃখ আর পরিতাপের বিষয় হল ইয়াসির আরফাতের মৃত্যুর পর ফিলিস্তানীরা তার শুন্যস্থান পুরন করতে পারেনি এবং প্রতিবাদী আর বিশ্বে গ্রহণযোগ্য আর কোন নেতা তাদের কপালে জুটেনি ।

তবে মধ্যপ্রাচ্য রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করে, হামাসের বর্তমান নেতারা যদি আরব ও মুসলিম বিশ্বের ৫০% সমর্থন পেত পরিস্থিতি হত ভিন্ন।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, আরবের দেশ সমূহ একুশ শতকে এসে ইসরাইলের সাথে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়ে ফিলিস্তানীদের আরো বিপদে টেলে দিচ্ছে ।

অন্যদিকে ইস্রালি কারাগারে থাকা মেধাবী ফিলিস্তানীদের নির্যাতন করে পরিকল্পিত ভাবে বিকালঙ্ঘ, প্রতিবন্ধী বা হুঁশহীন করে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে, যাতে করে আর কখনো ইহুদী বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ করতে না পারে ।

এমন নির্মমতার মিছিলে নাম উঠল ফিলিস্তানী নাগরিক মনসুর শাহায়েতের, ১৭ বছর পর ইহুদী কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিনতে পারেনি নিজের মা-বাবা ও পরিবার পরিজনকে ।

মনসুর মুক্তি পেয়েছে দখলদার ইহুদীদের কারাগার থেকে, তবে মানুষ হয়ে নয়, জিন্দা লাশ হয়ে ।

বিশ্বব্যাপী চরম মানবিক বিপর্যয়ে থাকা মুসলিম জাতিকে উদ্ধারে দেখা মিলছেনা ইমাম খোমেনি, বাদশাহ ফয়সাল, শেখ জাবের আল সাবাহ, ইয়াসির আরফাত, মোয়াম্মার আল গাদ্দাফি, সাদ্দাম হোসেন, জিয়াউর রহমান, জিয়াউল হক, আনোয়ার সাদতের মত আর কোন নেতা ।

আশির দশকে এসব নেতার হুংকারে ভীত থাকত ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল ।

একুশ শতকে মুসলমানদের ত্রাণকর্তা হতে পারে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি তথা মুসলিম বিশ্বের সোলতান খ্যাত এরদোয়ান, পাকিস্তানের ইমরান খান, কাতারের আমীর শেখ তামিম ।

ইতিহাস সাক্ষী, ফিলিস্তান থেকে কাশ্মীর, মিয়ানমার থেকে সিরিয়া, নির্যাতিত, নিপড়ীত, চরম অবহেলিত মুসলমান জাতিকে উদ্ধারে মুসলিম রাষ্ট্র প্রধানদের নতুন করে ভাবতে হবে, হতে হবে ঐক্যবদ্ধ ।

আরশের মালিকের নিকট সে দোয়া করে বলছি, মাবুদ তাদের বুঝার তৌফিক দিন । আমিন ।

#তথ্যসূত্র;- আল জাজিরা, বিবিসি, আন্দালো এজেন্সি ।

Logo-orginal