, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

admin admin

ছয়দিন ধরে নিখোঁজ আবু ত্ব-হাকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর আকুতি জানিয়েছেন তার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার।

প্রকাশ: ২০২১-০৬-১৬ ২২:৫২:১৮ || আপডেট: ২০২১-০৬-১৬ ২২:৫২:২০

Spread the love

ছয়দিন ধরে নিখোঁজ ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে আকুতি জানিয়েছেন তার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার। আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘তিনি (আবু ত্ব-হা) নিরীহ মানুষ, ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিন, নয়তো আমাকে তার কাছে নিয়ে যান।’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে নিখোঁজ ত্ব-হার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘যদি সত্যিকার অর্থে তিনি কোনো অপরাধে যুক্ত থাকেন তাহলে রাষ্ট্রীয় আইনে তার বিচার হোক। আমি কিছু বলব না। তিনি কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নন। আমি এবং কিছু যুবক ছাড়া তার পাশে কেউ নেই।’

আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ চারজন গত ১০ জুন থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজ হওয়ার আগের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ত্ব-হার স্ত্রী সাবিকুন্নাহার বলেন, ‌‘ঘটনার দিন বিকেল ৩টার দিকে বগুড়ার একটি প্রোগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন ত্ব-হা, তার দুই সহযোগী ও প্রাইভেটকারচালক আমির। উদ্দেশ্য ছিল প্রোগ্রাম শেষে তিনি ঢাকায় আমার কাছে আসবেন। কিন্তু বিকেল ৪টার দিকে আমি তাকে ফোন করে বলি রাতে বাসায় ফিরে কী খাবে, কী রান্না করব? এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি রেগে যান আমার ওপর। রেগে গিয়ে ত্ব-হা বলেন আমাদের প্রাইভেটকারের পেছনে দুটি বাইক ফলো করছে। আমার জন্য দোয়া করো, আমি যেন ঠিকভাবে বাসায় পৌঁছাতে পারি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপর ২০ থেকে ২৪ মিনিট পর তিনি নিজেই আমাকে ফোন করে বলেন বাইক দুটি আর দেখা যাচ্ছে না। তুমি রান্না করো, আমরা চারজন বাসায় এসে ভাত খাব।’

সাবিকুন্নাহার বলেন, ‘তার সঙ্গে যখনই কথা হয় তখনই তিনি লোকেশনসহ আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে স্ক্রিনশট পাঠান। ওইদিনও একাধিকবার আমাকে লোকেশন পাঠিয়েছেন। রাত ২টার দিকে সর্বশেষ আমি তাকে ফোন করি। কিন্তু তিনি ঘুমানোর কারণে আমার ফোন রিসিভ করতে পারেননি। ঘুম ভাঙার পরে রাত ২টা ৩৭ মিনিটে একটা ম্যাপ শেয়ার করেন। তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এরপর তার মেসেজ দেখে ঘুম থেকে উঠে খাবারের ব্যবস্থা করতে যাই। তার ম্যাপে দেখাচ্ছিল বাসায় পৌঁছাতে ১৮ মিনিট লাগবে। এরপর অপেক্ষা করতে করতে রাত ৩টার দিকে তার নম্বরে ফোন করি। কিন্তু তখন থেকেই তার মোবাইল বন্ধ পাই। এরপর প্রাইভেটকারচালক আমিরের নম্বরে ফোন করি। তার মোবাইলও বন্ধ পাই। তখন আমার সন্দেহ হয়। এভাবে অপেক্ষা করতে করতে ভোর ৫টা বেজে যায়।’

সংবাদ সম্মেলনে ত্ব-হার স্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে এখন অনেক কিছু মনে হয়। তিনি জিও পলিটিক্স নিয়ে কথা বলতেন। ইন্টারন্যাশনাল গোয়েন্দাদের বিষয় হতে পারে।’ এর আগে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছিল কি-না সে ব্যাপারে বলেন, ‘এর আগে কখনো এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি কিংবা কখনো বলেনওনি। তবে তিনি মজসিদে খুতবা বা লেকচারের কারণে মাঝে মাঝে কিছু ঝামেলার সম্মুখীন হতেন বলে আমাকে বলতেন। এ বিষয়গুলো তিনি তার লেকচারেও তুলে ধরেছেন।’

তিনি বলেন, ‘কারও প্রতি কোনো ধরনের অভিযোগ নেই। অনেক সময় অনেকে তার প্রতি বিরূপ মন্তব্য করতেন, অনেক রকমের কথা বলতেন। এজন্য কোনো প্রেসার এলো কি না তা বলতে পারছি না। আবার কখনো মনে হয় তিনি জিও পলিটিকস নিয়ে কথা বলতেন, পলিটিক্যাল সায়েন্স নিয়ে আলোচনা করতেন। আন্তর্জাতিক কোনো গোয়েন্দা সংস্থার কাজ কি না তাও বুঝতে পারছি না।’

ত্ব-হা সম্পর্কে তার স্ত্রী বলেন, ‘তিনি ফিলোসফিতে মাস্টার্স করেছেন এবং সানাফি মাদরাসা থেকে আরবিতে অনেক শিক্ষকের থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেন। কিন্তু সানাফি, হাম্বলি, কওমি, দেহবন্দি কিংবা আহালে হাদিসের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। তিনি সংকীর্ণ মনের ছিলেন না। হকটা সব জায়গা থেকে গ্রহণ করতেন এবং প্রচুর পড়াশোনা করতেন। বিশেষ করে ত্বকী উস্মানীর বইগুলো বেশি পড়তেন। এ ছাড়াও বিদেশি লেখকদের বইও তিনি পড়তেন। তার ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল জেনারেল। #সুত্রঃ আমাদের সময় ।

Logo-orginal