, রোববার, ৫ মে ২০২৪

admin admin

টানা তিন ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ’

প্রকাশ: ২০২১-০৮-১০ ০০:১০:৩১ || আপডেট: ২০২১-০৮-১০ ০০:১০:৩২

Spread the love

টানা তিন ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। এই ফলাফল, এক কথায় টাইগারদের ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য অর্জন। রেকর্ড বললেও ভুল হবে না।

কারণ, এর আগে বিশ্ব ক্রিকেটে মোড়ল বলে পরিচিত অজিদের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৩১ ম্যাচে খেলে ছিল শুধু দু’টি জয়। আর সে কারণেই ক্রিকেটবোদ্ধারা শুধু সিরিজ জয়ই বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখছেন।

সেই সঙ্গে এমন সাফল্যের পরও টাইগারদের সতর্কতা বার্তা দিচ্ছেন তারা। তাহলে প্রশ্ন আসছে মোস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিং কি প্রাপ্তি নয়?

এসব নিয়ে দৈনিক মানবজমিনের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেছেন টাইগারদের সাবেক প্রধান কোচ সারওয়ার ইমরান। তার মতে অক্টোবর-নভেম্বরে দুবাইয়ে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বরং এই সাফল্য বুমেরাং হতে পারে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য।

তার সঙ্গে সহমত জানিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার ও শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের একাডেমির কোচ তুষার ইমরানও। অভিজ্ঞ সারওয়ার ইমরান বলেন, ‘আমরা আগে কখনো কোন ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিততে পারিনি। সেই হিসেবে দেখলে এটি আমাদের জন্য বড় অর্জন। তবে আমার ভয়ও হচ্ছে। কারণ, বিশ্বকাপের বেশিদিন বাকি নেই। এই অর্জনে যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে তা সেখানে বুমেরাং হতে পারে। কারণ, বিশ্বের কোথাও এমন উইকেটে টি-টোয়েন্টি খেলা হয় না। আর বিশ্বকাপে এমন উইকেট পাওয়ার কথা ভাবাই যাবে না।

বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মোস্তাফিজ দীর্ঘদিন নিজের ছন্দে ছিলেন না। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে বল হাতে সফরকারীদের সামনে যমদূত হয়ে ওঠেন তিনি। শুরুর চার ম্যাচে ৭ উইকেট নেন তিনি। ১৬ ওভার বল করে খরচ করেছেন মাত্র ৫৭ রান। শুধু তাই নয় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম ফিজের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিয়েছেন সমান ৭ উইকেট। শুরুর চার ম্যাচে স্পিনার নাসুম আহমদ ৬ ও শেখ মেহেদী হাসানের শিকার ৫ উইকেট। বাংলাদেশের পেস ও স্পিন সামলাতে হিমশিম খেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। তবে এমন দারুণ বোলিংটা আসলে এই সিরিজের জন্যই কার্যকর মনে করেন সারওয়ার ইমরান। তিনি বলেন, ‘দেখেন মিরপুরে যে উইকেট বানানো হয়েছে সেখানে মোস্তাফিজের কাটার দারুণভাবে কার্যকর হয়েছে। কারণ, তার বল টার্ন করেছে, আর কাটারও পিচে গ্রিপ করেছে। কিন্তু আপনি যখন এক মাস পরই দুবাইয়ে বিশ্বকাপ খেলতে যাবেন সেখানে এমন উইকেট পাবেন না। বিশেষ করে উইকেটে ঘাস থাকলে ফিজের কাটার ধরবে না। তাহলে তাকে আবারো চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আর শরিফুল তো একেবারেই তরুণ তাকে নিয়ে এখনই কিছু বলা উচিত হবে না। স্পিনাররা উইকেটের সুবিধা নিয়ে বল করেছেন। সব মিলিয়ে এখানে বোলারদের যে যোগ্যতা তার চেয়ে বেশি প্রাপ্তি এসেছে শুধুই উইকেটের কারণে। তাই এখান থেকে বোলারদের যে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে তা সত্যিকার অর্থে কোনো কাজে আসবে না।

অন্যদিকে তুষার ইমরানও বোলারদের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের অবদানকেই বড় করে দেখছেন। শুরুর ৪ ম্যাচে দলের হয়ে একমাত্র ফিফটি আসে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে। একই সমান ম্যাচে কোনো ফিফটি না হাঁকালেও সাকিব আল হাসানের সংগ্রহ ছিল ৪ ইনিংসে ১০০ রান। এ ছাড়াও ব্যাট হাতে ছোট ছোট অবদান রেখেছেন নুরুল হাসান সোহান, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসানরা। দুই ওপেনারের নাঈম শেখ ব্যাট হাতে কিছুটা ভালো করলেও সৌম্য সরকার একেবারেই ব্যর্থ। এরপরও কেন এগিয়ে থাকবে ব্যাটসম্যানরা! এ বিষয়ে তুষার বলেন, ‘উইকেটের যে কন্ডিশন তাতে এই সিরিজে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জ ছিল ব্যাটসম্যানদের। দেখেন অস্ট্রেলিয়ার যে দুর্দান্ত বোলিং তাতে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান যে ছোট ছোট অবদান রেখেছে সেটিই বড় প্রাপ্তি। দেখেন ওদের ব্যাটসম্যানরা কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে বলেই সিরিজ হেরেছে। তবে সামনে যে সিরিজ আছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেখানে আমি অনুরোধ করবো টিম ম্যানেজমেন্ট যেন এমন স্পিন উইকেটে দলকে না খেলায়। এতে করে বিশ্বকাপে গেলে দলের বিপদ বাড়বে।’

অভিজ্ঞ কোচ সারওয়ার ইমরানও ব্যাটসম্যানদের ছোট ছোট অবদানকে এগিয়ে রাখছেন। তার মতে এমন কঠিন উইকেটে আসলে ব্যাটসম্যানরা যে দলকে জয় উপহার দিয়েছে সেটি অনেক বড় প্রাপ্তি। সেই সঙ্গে আসন্ন নিউজিল্যান্ড সিরিজে বিশ্বকাপ প্রস্তুতিকে প্রাধান্য দিয়ে ট্রু উইকেটে ম্যাচ আয়োজনেরও পরামর্শ তার। সারওয়ার ইমরান বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আমাদের প্রস্তুতি নেয়ার শেষ সুযোগ। আমি বলবো যেন ট্রু উইকেট তৈরি করে বিসিবি। হ্যাঁ, এমন উইকেটও আছে যেখানে স্পিনাররা সাহায্য পাবে আবার ব্যাটসম্যানও সুবিধা পাবে। এতটা স্লো উইকেট হবে না। যদি সেটি করা যায় তাহলে মোস্তাফিজরা তো নিজেদের চ্যালেঞ্জটা বুঝতে পারবেন। সেই সঙ্গে ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলে ছন্দে ফিরতে পারবে। তবে এই সিরিজে বলবো ব্যাটসম্যানরা অস্ট্রেলিয়ার পেসারদের মোকাবিলা করে নিজেদের অনেকটাই ঝালিয়ে নিয়েছে। যা সামনে কাজে আসবে। সুত্রঃ মানবজমিন ।

Logo-orginal