, রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

admin admin

প্রবাসীর স্ত্রী’র ত্রিভুজ পরকীয়ার বলি হলেন প্রেমিক হাবিব মৃধা’

প্রকাশ: ২০২১-০৮-১১ ১৭:৫১:৩৭ || আপডেট: ২০২১-০৮-১১ ১৭:৫১:৩৯

Spread the love

গৃহবধূর সাথে ত্রিভুজ পরকীয়া প্রেমের বলি হলেন প্রেমিক হাবিব মৃধা (২৭)। গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ফেলে দেয়া হয় পার্শ্ববর্তী গুপ্তের বিলে। এ হত্যাকাণ্ডে ৪ জন অংশ নেয়।

অন্যদিকে খুনের শিকার হাবিরের ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন ও ফাঁস লাগানো রশিটি এনে পরকীয়া প্রেমিকা শিউলী আক্তারের বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেয় প্রধান ঘাতক রুবেল। অতঃপর মোবাইল ফোনে শিউলীর কাছে হাবিবকে শেষ করে ফেলার তথ্য দিয়ে ঢাকায় পালিয়ে যায় প্রধান ঘাতক।

বুধবার দুপুরে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হাবিব মৃধা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনপূর্বক এসব তথ্য জানান। সংবাদ দৈনিক যুগান্তরের ।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) সোহেল মাহমুদ জানান, লাশ উদ্ধারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা খুনের রহস্য উন্মোচন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রধান ঘাতক রুবেল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী নিহত হাবিবের মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ অনেক আলামত জব্দ করা হয়েছে।

লাশ উদ্ধারের দুই দিন পর মঙ্গলবার নিহতের ভাই আকরাম হোসেন বাবুল বাদী হয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এ পর্যন্ত মোট ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এরা হলেন- মো. রুবেল (৩০), সাইফুল ইসলাম (৩৩), সিফাত উল্যা রাসেল (২৭), পারভেজ হোসেন শ্যামল (২৬) এবং শিউলী আক্তার (২০)।

পুলিশ সূত্র জানায়, কুয়েত প্রবাসী ফারুক হোসেনের স্ত্রী ও ফরিদগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের হর্নিদুর্গাপুর গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে শিউলী আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের মৃত মনির মৃধার ছেলে হাবিব মৃধা এবং রূপসা দক্ষিণ ইউনিয়নের সাহেবগঞ্জ গ্রামের আবুল বাসারের ছেলে মো. রুবেল, হেজবুত উল্ল্যার ছেলে সিফাত উল্ল্যা রাসেলসহ বেশ কয়েকজনের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল।

এ পরকীয়া সম্পর্কের কারণে হাবিব মৃধা, রুবেল, রাসেলের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাধে। হাবিব মৃধা রুবেল ও রাসেলকে শিউলীর জীবন থেকে সরে যাওয়ার জন্য হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে রুবেল হাবিবকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

গত ৪ আগস্ট বুধবার রাতে রুবেল হাবিবকে মোবাইল ফোনে পাশের গুপ্তের বিলের ব্রিজের পাশে ডেকে নেয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রুবেলের সহযোগী সাইফুল ইসলাম রশি দিয়ে হাবিবের গলা পেঁচিয়ে ধরে। এ সময় অপর সহযোগী রাসেল ও শ্যামল তার হাত চেপে ধরে এবং রুবেল পা চেপে ধরে। পরে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তাকে গুপ্তের বিলে ফেলে দেয়।

পরে হাবিবের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও লাইলনের রশিটি শিউলী আক্তারের বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেয়। পরে খুনের ঘটনাটি শিউলী আক্তারকে মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করে রুবেল।

পুলিশ আরও জানায়, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সোমবার প্রথমে শিউলী আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে তার তথ্যমতে রুবেলকে ঢাকার উত্তরা থেকে ওই রাতে আটক করে মঙ্গলবার সকালে থানায় নিয়ে আসা হয়।

পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি মতে মঙ্গলবার দিনভর অভিযান করে অপর তিন সহযোগী সিফাত, শ্যামল ও রাসেলকে তাদের এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে মঙ্গলবার রাতে ডুবুরি দিয়ে শিউলী আক্তারের বাড়ির পাশের খাল থেকে হাবিরের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শহীদ হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রুবেল ফরাজী।

উল্লেখ্য, রোববার সন্ধ্যায় ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের গুপ্তের বিল থেকে হাবিব মৃধার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।

নিহত হাবিরের বড়বোন রোকেয়া বেগম জানান, গত ৪ আগস্ট বুধবার দুপুরে হাবিব মৃধা মোবাইল ফোনে কল পেয়ে চাঁদপুরে তার আরেক বোন মরিয়মের বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেনি। পরে বাড়ি থেকে এক দেড় কিলোমিটার দূরের গুপ্তের বিলে লাশ পাওয়ার সংবাদ শুনে এসে তিনি ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন। দুই দিন পর নিহতের ভাই আকরাম হোসেন বাবুল বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।

Logo-orginal