, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

admin admin

বিশ্বনবীর জীবনের কষ্ট ও আনন্দের হিজরত’

প্রকাশ: ২০২১-০৮-১৩ ১২:৫৮:৩০ || আপডেট: ২০২১-০৮-১৩ ২০:২৭:৫৬

Spread the love

আবুল কাশেম, আরটিএম ইসলামী ডেস্কঃ আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলেমিন, ওয়াচ্ছালামু আলা রাসুল (সাঃ) করীম ।

বিসমিল্লাহ্‌ হির রাহমানির রাহীম
وَإِذْ يَمْكُرُ بِكَ الَّذِينَ كَفَرُوا لِيُثْبِتُوكَ أَوْ يَقْتُلُوكَ أَوْ يُخْرِجُوكَ وَيَمْكُرُونَ وَيَمْكُرُ اللَّهُ وَاللَّهُ خَيْرُ الْمَاكِرِين
বাংলা অনুবাদ” (৮.৩০) আর যখন কাফিররা তোমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছিল, তোমাকে বন্দী করতে অথবা তোমাকে হত্যা করতে কিংবা তোমাকে বের করে দিতে। আর তারা ষড়যন্ত্র করে এবং আল্লাহও ষড়যন্ত্র করেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্যে উত্তম।

নিজের জন্মভুমি ছেড়ে যাওয়া বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর জন্য ছিল বড়ই কষ্টের, মক্কার কাফের মুশরিক তথা ইসলামের শ্ত্রুদের চরম যন্ত্রণা পাওয়া মোহাম্মদ (সাঃ) যখন মদীনায় পৌঁছলেন, তখন ইয়াসরিব বা মদীনাবাসীর সাদর সম্বর্ধনা, আন্তরিকতা, আতিয়েথা আল্লাহর নবী প্রশান্তি লাভ করেন এবং আল্লাহর নিকট সিজদায় লুটিয়ে পড়েন ।

হিজরত ৬২২ সালের ২১ জুন হতে ২ জুলাইয়ের মধ্যে নবী মুহাম্মাদ ও হযরত আবু বকর, এবং সাহাবায়ে কেরামকে মক্কা থেকে মদীনায় গমন করাকে বোঝানো হয়।

ইসলামের ইতিহাসে হিজরি সনের সঙ্গে মুসলিম উম্মাহর মৌলিক, ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব প্রিয়নবী মুহাম্মদের (সা.) প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ত্যাগ করে মদিনা শরিফে গমনের ঐতিহাসিক ঘটনা।

ইসলামের ইতিহাসে হিজরত যুগান্তকারী ঘটনা। বৈশ্বিক ইতিহাসেও হিজরত সর্বাধিক তাৎপর্যবহ ও সুদূরপ্রসারী ঘটনা।

ইংল্যান্ডের বিশিষ্ট নারী গবেষক সারাহ জোসেফ হেল যথার্থই বলেছেন,(Sarah Joseph Hale, a prominent woman researcher in England, rightly said, ‘Migration creates a new direction in the life and work of the Prophet. Unveils great horizons in the history of Islam) ‘হিজরত বিশ্বনবীর জীবন ও কর্মে নতুন গতিপথ তৈরি করে। ইসলামের ইতিহাসে বৃহৎ দিগন্তের উন্মোচন করে।

মক্কায় থেকে মদীনায় হিজরত ছিল একটি ইসলামী রাষ্ট্রের প্রাথমিক গোড়া পত্তন ।

শিক্ষনীয়ঃ কতবার আপনি হুট করেই অপরিচিত জায়গায় পাড়ি জমিয়েছেন? কোনো নতুন স্কুল, কাজের জায়গা, ক্যারিয়ারের সুবাদে দূর দূরান্তে এমনকি দেশের বাইরেও?
ছেড়ে আসার সেই মুহূর্ত কেমন ছিল? কী অনুভব করছিলেন আপনি? দুশ্চিন্তা, স্নায়ুচাপ, ভয়, নিজের সম্পর্কে অনিশ্চয়তা, জীবনে অন্যতম এক পরিবর্তনের মোড়… সবকিছু মিলিয়ে কী এক অবস্থা!

এখন কল্পনা করুন আপনি ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে যাচ্ছেন না, আপনাকে বাধ্য করা হচ্ছে। যাদেরকে ছেড়ে যেতে হচ্ছে তারা আপনাকে ঘৃণা করে এবং আর কখনোই আপনাকে দেখতে চায় না। আপনার যা ছিল ইতিমধ্যেই তারা সবকিছু দখল করে নিয়েছে৷ সেইসাথে আপনার পরিবার এবং বন্ধুদের জীবনও হুমকির সম্মুখীন!

অনিশ্চিত এক গন্তব্যের পথে আপনার যাত্রা; সেথায় এক অপরিচিত সম্প্রদায় যেখানে আপনার ছেড়ে আসা লোকালয়ের মতো হাজারো সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পারে৷

হযরত মুহাম্মদ (সা) মক্কা থেকে মদীনায় যে যাত্রা করেছিলেন বা আমরা যেটিকে ‘হিজরত’ বলে থাকি এটি তার সামান্য একটু স্বাদ মাত্র!

হিজরত ছিল প্রতিটি নবী তাদের সাহাবাদের জীবনের অবিচ্ছাদ্য অংশ, তেমনি এই যুগের হকপহ্নী আল্লাহ’র বান্দাহ ও মোহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতদের জীবনেও হিজরত আসছে এবং আসবে।

হিজরত আল্লাহ’র রহমত, সুরা বাকারার ২১৮ নং আয়াতে রাব্বুল আলেমিন বলেন,
إِنَّ الَّذِينَ آمَنُوا وَالَّذِينَ هَاجَرُوا وَجَاهَدُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أُولَئِكَ يَرْجُونَ رَحْمَةَ اللَّهِ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيم
বাংলা অনুবাদ ২.২১৮ নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও যারা হিজরত করেছে এবং আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে, তারা আল্লাহর রহমতের আশা করে। আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

লেখক ও সংকলকঃ আবুল কাশেম, কুয়েত।

Logo-orginal