admin
প্রকাশ: ২০২২-০১-০৭ ২২:১৮:০৩ || আপডেট: ২০২২-০১-০৭ ২২:২১:২৭
বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সঙ্গে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুল ইসলামের একটি ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে।
সাংসদ-ওসির কথোপকথনের অডিওটি বুধবার সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে পড়েছে। সংবাদ দৈনিক সমকালের ।
১ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের ফোনালাপটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। ওসি তারিকুল ইসলাম ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে কীভাবে এই ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২১ জুন নির্বাচনে বুড়িরচর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সংসদ সদস্যের আত্মীয় সিদ্দিকুর রহমান ওরফে ভায়রা সিদ্দিক। নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের কাছে হেরে যান।
ওই নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ভোটগ্রহণের আগ পর্যন্ত দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ থানায় অন্তত ১০টি মামলা করে। ভায়রা সিদ্দিকের লোকজন ছয়টি এবং বিজয়ী হুমায়ুন কবীরের লোকজন চারটি মামলা করে। মামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ১২২ জনকে আসামি করা হয়।
চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর বলেন, দুটি মামলার বাদী ও আসামিরা নিজেদের মধ্যে মীমাংসা করেছে। দুই পক্ষ আদালতে গিয়ে দুটি মামলা প্রত্যাহার করে নেয়। অন্য আটটি মামলার মধ্যে ভায়রা সিদ্দিকের ভাইয়ের ছেলে বশির উদ্দিনের করা নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। ভায়রা সিদ্দিকের ভগ্নিপতি ইউনুস মৃধার ঘরে আগুন দেওয়ার মামলাটিরও চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পুলিশ। এই ঘটনার পর ওসির ওপর ক্ষুব্ধ হন সংসদ সদস্য।
হুমায়ুন কবীর আরো বলেন, ‘ভায়রা সিদ্দিকের অনুসারীদের হামলার ঘটনায় আমার নেতাকর্মীরা চারটি মামলা করেছিল। সেই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পুলিশ যাতে আদালতে দাখিল করে, ভায়রা সিদ্দিক সেই চেষ্টা করছিলেন। তাতে কাজ না হওয়ায় সংসদ সদস্য শম্ভুকে দিয়ে ওসিকে বদলির হুমকি দিয়েছেন ভায়রা সিদ্দিক।’
বুড়িরচর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান ওরফে ভায়রা সিদ্দিক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘হুমায়ুন কবির তাঁর ক্যাডার বাহিনী ব্যবহার করে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটে জিতেছেন। আমার নেতাকর্মীদের মারধর করেছেন। তাই আমার আত্মীয় ও দলীয় নেতাকর্মীরা ছয়টি মামলা করেছিল। পুলিশ দুটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল। তার একটিতে আপত্তি দিয়েছি। সেটি ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে।’
সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন, পুলিশকে প্রভাবিত করার প্রশ্নই আসে না। কারণ ওদের দায়ের করা মামলা ভিত্তিহীন।
বরগুনা সদর থানার ওসি কে এম তারিকুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে মুঠোফোনে বলেন, ‘নির্বাচনী ক্যাম্প ও ঘরে অগ্নিসংযোগের মামলার সত্যতা না পাওয়ায় পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে বাদীরা ক্ষুব্ধ হলে করার কিছু নেই।’ তিনি বলেন, ‘মামলাগুলো নিয়ে মাননীয় সাংসদ আমার সঙ্গে মুঠোফোনে যে আচরণ করেছেন, তাতে আমি মর্মাহত।