, শনিবার, ৪ মে ২০২৪

admin admin

মানিকগঞ্জে আলোচিত স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার নেপথ্যে

প্রকাশ: ২০২২-০৫-১১ ১৬:৩০:২৩ || আপডেট: ২০২২-০৫-১১ ১৬:৩০:২৫

Spread the love

মানিকগঞ্জের ঘিওরে আলোচিত স্ত্রী ও দুই মেয়েকে জবাই করে হত্যার পর স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টার নেপথ্যে কী ছিল এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও স্থানীয়দের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে চায়ের দোকানের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুই হচ্ছে তিন মার্ডার নিয়ে। মার্ডারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় প্রধান আলোচনার ঝড় বইছে দন্ত চিকিৎসক অর্থাৎ ঘাতক আসাদুর রহমান রুবেলের ভুল চিকিৎসায় দেড় লাখ টাকা জরিমানার বিষয়টি। পাশাপাশি ধার-দেনায় জর্জরিত এবং পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়ে পড়ায় মানসিক বিকারগ্রস্ততা এই তিনটি বিষয় উঠে এসেছে হত্যার নেপথ্যে। কিন্তু প্রশ্ন- ওই সব ঘটনার সঙ্গে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যা কেন? অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ২০০০ সালে আসাদুর রহমান রুবেল ভালোবেসে একই গ্রামের লাভলী আক্তারকে বিয়ে করে। ভালোবেসে বিয়ের বিষয়টাকে মেনে নেয়নি রুবেলের পরিবার। এরপর কার্যত বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে পড়ে রুবেল। সেখানেই প্রথম ধাক্কা খায় রুবেল। দন্ত চিকিৎসক হিসেবে পার্শ্ববর্তী বানিয়াজুরী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দোকান নিয়ে কাজ করতে থাকে। বাড়িতে বাবা-মা ও ভাইদের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় কয়েক বছর পরিবার নিয়ে বানিয়াজুরী এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকে;

পরে শ্বশুরবাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হলে স্ত্রী-মেয়েদের নিয়ে সেখানে উঠে পড়ে। এরই মধ্যে একাধিক ব্যবসায় নিজেকে জড়ানোর পর কোনো ব্যবসাতেই লাভবান হতে পারেনি। উল্টো ধার-দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ে রুবেল। পাশাপাশি দন্ত চিকিৎসাতেও তেমন ভালো কিছু করতে পারছিলো না। সর্বশেষ সম্প্রতি ঈদুল ফেতরের কয়েকদিন আগে রুবেলের দন্ত চিকিৎসার চেম্বারে এক নারীর দাঁতের ভুল চিকিৎসার ঘটনা ঘটে। এতে ওই নারীর পক্ষে তার দুলাভাই বেলায়েত হোসেন, বানিয়াজুরী ৩ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন প্রভাবশালী দন্ত চিকিৎসক রুবেলের বিরুদ্ধে সালিশ বসায়। রুবেলকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করে এবং ব্যবসা গুটিয়ে নেয়ার জন্য হুমকি দেয় বেলায়েত ও আবুল কালামসহ আরও কয়েকজন। গত রোববার স্ত্রী ও দুই মেয়েকে হত্যার ঘটনার দিন জরিমানার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

মঙ্গলবার সকালে মুঠো ফোনে জরিমানা বোর্ডের বেলায়েত বলেন, আমার শালির ভুল চিকিৎসা করেছে, ওকে তো জরিমানা দিতেই হবে।

নিহত লাভলী আক্তারের মা হালিমা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, জরিমানার টাকা এবং যাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা ধার-দেনা করেছে, তাদের চাপের কারণেই আমার মেয়ে ও দুই নাতনিকে রুবেল হত্যা করেছে। হত্যাকাণ্ডের বিচারের সঙ্গে যারা জরিমানা করেছে তাদেরও বিচার চাই।
ঘিওর থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। হত্যাকাণ্ডের আগে-পরের সব ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।

Logo-orginal