, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

admin admin

সোনামসজিদ বন্দরে আগুন: ট্রাকে ব্লিচিং পাউডারের নামে কী আসছিল?

প্রকাশ: ২০২২-০৭-১৪ ২২:৫৬:০৮ || আপডেট: ২০২২-০৭-১৪ ২২:৫৬:৩২

Spread the love

(ছবি: সমকাল)
ভারত থেকে খাতা-কলমে আনা হচ্ছিল ব্লিচিং পাউডার! তিনটি ট্রাকে সাড়ে ৪১ টন করে মোট ১২৪ দশমিক ৫ টন জীবাণুনাশক এই রাসায়নিক আসার কথা। ট্রাকগুলো চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ঢুকতেই ঘটল ভয়াবহ কাণ্ড। দফায় দফায় দুটি ট্রাকে আগুন জ্বলে ওঠে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকা লেলিহান শিখা ২৫ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছে।

ধোঁয়ার কুণ্ডুলিতে ছেয়ে যায় চারপাশ। আগুন লেগে যায় কাছের শস্যবাহী দুটি যানেও। বন্দরে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসার আগেই পুড়ে যায় ট্রাক দুটি। এতে জনমনে ভীতি সৃষ্টির সঙ্গে জাগছে নানা প্রশ্ন। আসলে সেগুলো কী ছিল; ব্লিচিং না অতি দাহ্য গান পাউডার? নাকি বিস্ম্ফোরক? এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে নমুনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থাসহ সরকারের দায়িত্বশীল দপ্তরগুলো।

ভারতের মহদিপুর স্থলবন্দর থেকে বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিনটি ট্রাক সোনামসজিদ বন্দরে প্রবেশ করে। পরে বন্দরের পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের বাইরে বিকেলে এবং রাত ৮টার দিকে দু’দফায় ভারতীয় দুটি ট্রাকে আগুন ধরে যায়। অপরটি নিরাপদ আছে, তবে অন্যত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে। অনেকেই বলছেন, ব্লিচিং পাউডারে আগুন লাগার সুযোগ নেই। রাসায়নিকগুলো গান পাউডার অথবা বিস্ফোরব হতে পারে।

বন্দর ব্যবস্থাপক মাইনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার জানান, গাজীপুরের আল মদিনা ট্রেডিং কেমিক্যালের নামে একটি ট্রাকে সাড়ে ৪১ টন, জামান এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট নামে একই পরিমাণের আরেকটি ট্রাক এবং নাফিজ করপোরেশন নামে আরেকটি ট্রাকে একই পরিমাণ রাসায়নিক আনা হচ্ছিল। খাতা-কলমে বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, এগুলো ব্লিচিং পাউডার। তবে বন্দরে ঢোকার আধা ঘণ্টার মধ্যে আল মদিনার কেমিক্যালবাহী ট্রাকে আগুন ধরে যায়। রাত ১১টার দিকে বন্দরের পাশে রাখা জামান এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ট্রাকেও আগুন ধরে। অপর ট্রাকটিতে আগুন ধরেনি। ট্রাকগুলো দেশে ঢোকার আগে ভারতের বন্দরে ১৪ দিন আটকে ছিল বলে জানানো হয়।

কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার বলেন, রাসায়নিকগুলো আসলে কী ছিল, তা পরীক্ষার আগে বলা যাচ্ছে না। তাই বিজিবি, শুল্ক গোয়েন্দা, কাস্টমস ও পানামা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এটা ল্যাবে পরীক্ষার পর জানা যাবে- কী ছিল। এরপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাসায়নিক গবেষকরা বলছেন, ব্লিচিং পাউডারে এভাবে আগুন ধরার সুযোগ নেই। এটা পানি পরিষ্কারসহ ঘরবাড়ি জীবাণুমুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়। সরাসরি এতে আগুন ধরে না। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক কুদরত ই জাহান বলেন, ব্লিচিং পাউডার পানি অথবা কার্বন ডাই-অক্সাইডের সঙ্গে মিলে গেলে ক্লোরিন গ্যাস উৎপন্ন হতে পারে। এ থেকে আগুন ধরতে পারে। তবে ক্লোরিন গ্যাস থেকে আগুন ধরলে মানুষের শ্বাসকষ্ট হতো। আশপাশের বহু মানুষ এতে সমস্যায় পড়তেন। গান পাউডারে আগুন লাগলে পোড়া ডিমের গন্ধ বের হয়। ব্লিচিং পাউডার হলে ক্লোরিনের গন্ধ হয়। তবে ট্রাকটি তির্পাল দিয়ে ঢাকা ছিল, তাই সেখানে পানি বা কার্বন যাওয়ার কথা নয়।
সুত্রঃ সমকাল।

Logo-orginal