, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪

admin admin

নবী (সাঃ) এর কবর থেকে আটক চোরের হৃদয় ছোয়া কাহিনী।

প্রকাশ: ২০২২-০৮-২১ ১৬:১৭:৫৭ || আপডেট: ২০২২-০৮-২১ ১৬:১৭:৫৯

Spread the love

ইসলামী শিক্ষাঃ চারজন পুলিশ এক যুবককে আটক করলো নবি করিম সা.-এর কবরের পাশ থেকে।

পুলিশ কোনো কথা নাবলেই সাথে সাথে যুবকের পিঠের পেছনে দড়ি দিয়ে তার হাত বেঁধে ফেললো। যুবক পুলিশদের বলতে লাগলো: তোমাদের কি হয়েছে!? আমিতো চোরও নই, ডাকাতও নই, তবে কেন আমার সাথে এই আচরণ!?

দূর থেকে এক বৃদ্ধমুরব্বি এই অবস্থা অবলোকন করছিলেন। মুরব্বি কাছে এসে পুলিশদের বললেন: আমি এই যুবককে চিনি।
পুলিশরা মুরব্বিকে বললো: আপনি তাকে কীভাবে চিনেন?
মুরব্বি বললেন: আমি তাকে দেখি সে সবসময় রসুলুল্লাহ সা.- এর রওজার সামনে দাঁড়িয়ে, বসে দোরূদ পড়ে, সালাম দেয়, কান্নাকাটি করে। তোমরা তাকে আটোক করেছ কেন? সে কি চোর?

যুবকটি ছিলো আলবেনিয়ার, বয়স ৩৫ অথবা ৩৬ হবে, ঘন বাবরি চুল, মুখে হালকা দাড়ি।

পুলিশ বললো: না, সে চোর নয়। এই যুবক আলবেনিয়ার অধিবাসী, সে মদিনায় ৬ বছর ধরে বসবাস করছে এবং এখানে তার কোনো বসবাসের কাগজপত্র নেই। আমরা তাকে ধরে আলবেনিয়ায় পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছি ৬ বছর যাবৎ কিন্তু প্রতিবারই তাকে ধরার পর, সে আমাদের থেকে পালিয়ে যায়। আমরা তাকে প্রতিবারই রসুল সা. এর মসজিদ থেকে ধরি। এবারও তাই হলো। তাকে এবার পাওয়া মাত্রই সাথে সাথে দড়ি দিয়ে বাঁধা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় ছিলনা!

মুরব্বি পুলিশদের বললেন: এখন তোমরা তাকে নিয়ে কি করবে?
তারা বললো: রাষ্ট্রিয় আইন প্রয়োগ করবো। আমরা তাকে এখন ধরে নিয়ে প্লেনে উঠিয়ে দিবো এবং তারপর সে আলবেনিয়ায় …..

যুবকটি তখন কাঁদছিল আর ভাবছিল এবার মনেহয় তাকে সত্যি সত্যিই রসুল সা. -এর মসজিদ ছেড়ে যেতে হবে! রসুল সা.- এর স্মৃতি বিজড়িত মদিনার শহর ছেড়ে যেতে হবে! কিছুক্ষণ ভেবে যুবকটি পুলিশদের বলতে লাগলো: দেখুন ভাই, আমি এখানে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও কারো সাথে প্রতারণা করি না। আমি এখানে এসেছি আল্লাহর রসুল সা. -এর ভালোবাসার টানে, এ ছাড়া অন্য কোনো দুনিয়াবি উদ্দেশ্য আমার নেই!

পুলিশরা বললো: না, এটা গ্রহণযোগ্য কথা নয়, আপনাকে অবশ্যই দেশে ফিরে যেতে হবে।বহিরাগতদের রাষ্ট্রীয় আইন এখানে থাকার সুযোগ নেই।

পুলিশরা যুবককে নিয়ে মসজিদে নববি থেকে বের হয়ে গেলো। যুবক পথিমধ্যে তাদের বললেন: আমার একটি শেষ অনুরোধ রাখবেন? পুলিশরা তার অনুরোধ শুনলেন এবং সুযোগ দিলেন।

যুবকটি তখন সবুজ গম্বুজের দিকে তাকিয়ে আবেগতাড়িত কণ্ঠে বললো:
هل هكذا كان الإتفاق بيننا ؟!
“ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমাদের মধ্যে চুক্তিটা কি এমন হয়েছিল!”
হে রসুল সা. ! আপনার প্রতিবেশী হবো, তাই আমি আমার দোকান, ব্যবসা, মা-বাবাকে ছেড়ে এখানে এসেছি! কিন্তু তারা আমাকে আর থাকতে দিচ্ছে না! এই কথা বলতে বলতে যুবক মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।

পুলিশরা বলেছে: আমরা ভাবলাম, যুবক ইচ্ছাকৃতভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে, সে জ্ঞান হারানোর ভান করছে, হয়তো আবার পালানোর পাঁয়তারা।

পুলিশ সদস্যরা কিছুক্ষণ পর যুবককে মাটি থেকে টেনে উঠালো, দেখল সে সত্যিই অচেতন! মুখে পানি ঢেলে দিলেও যুবক আর নড়ছে না!

তাদের একজন বললো: তার হয়তো স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে, এক্ষুনি অ্যাম্বুলেন্স আনো।

অ্যাম্বুলেন্স এসেছিল এবং যুবককে হাসপাতালেও নেয়া হয়েছিল, ডাক্তার তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর বললেন: আরো দেড় ঘণ্টা আগে যুবক এই পৃথিবী থেকে চলে গেছে! সে বেঁচে নেই।

পুলিশ সদস্যরা তখন কান্নায় ভেঙে পড়েছিল এবং বলছিল: আল্লাহর শপথ! আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন কালে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি তাঁর গভীর ভালোবাসার নমুনা অনুভব করতে পারিনি!

এরপর, গোসল ও জানাযা শেষে যুবককে অ্যাম্বুলেন্সে করে জান্নাতুল বাকিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে দাফন করা হয়।

আলবেনিয়ার পথে রওনা দেয়া যুবক, জান্নাতুল বাকিতে চলে গেলেন। রেখে গেলেন পৃথিবীবাসীর জন্যে রসুল সা.-এর প্রতি মহব্বতের অনন্য দৃষ্টান্ত!

|। রসুলুল্লাহ সা. -এর মহব্বত।|

ইতিহাসটি লিখেছেন: درر_النابلسي
অনুবাদ: মুহাম্মদ ইউনুস
#সংগৃহীত সোশ্যাল মিডিয়া থেকে।

Logo-orginal