, সোমবার, ৬ মে ২০২৪

admin admin

প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম মোস্তফা আনোয়ারও ছেড়ে গেলেন ইসলামী ব্যাংক।

প্রকাশ: ২০২২-১২-০১ ১৪:২৩:৪০ || আপডেট: ২০২২-১২-০১ ১৪:৩৩:১৪

Spread the love

দেশের সবচেয়ে বড় বেসরকারি ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান মুস্তাফা আনোয়ার ব্যাংকটির প্রায় সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। মালিকানা পরিবর্তনের ৬ বছর পর এসে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে তিনি তার হাতে থাকা প্রায় সব শেয়ার বিক্রি করে দেন।

ঢাকার বেশ কটি দৈনিক ও টিভি নিউজে প্রকাশিত সংবাদে জানা যায় যে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মুস্তাফা আনোয়ারের কাছে ইসলামী ব্যাংকের ২ লাখ ২৬ হাজার ৩৩২টি শেয়ার ছিল। গত ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে ২ লাখ ২৬ হাজার শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেন। ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে এসব শেয়ার বিক্রি করার কথা ছিল। তবে পরবর্তী ১০ দিনেই তা বিক্রি হয়ে যায়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর ডিএসইর প্রকাশিত এক সংবাদে জানানো হয়, মুস্তাফা আনোয়ার ওই শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করেছেন। বর্তমানে তার কাছে মাত্র ৩৩২টি শেয়ার রয়েছে। ১৯৮৩ সালে যাত্রা শুরু করা ইসলামী ব্যাংক শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৮৫ সালে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল ব্যাংকটির শেয়ারের দাম ছিল ৩৩ টাকা। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারি ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আসে। তখন ইবনে সিনা ট্রাস্টের প্রতিনিধি হিসেবে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ছিলেন মুস্তাফা আনোয়ার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন আবদুল মান্নান। মুস্তাফা আনোয়ার ব্যাংকটির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ২০১৭ সালে দেশের একটি বড় শিল্পগোষ্ঠী ব্যাংকটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর ব্যাংকটিতে বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারিসহ নানা অনিয়ম শুরু হয় বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। অভিযোগ অনুসারে, কাগুজে কোম্পানি খুলে ও নানা কৌশলে ওই গ্রুপটি ঋণের নামে ব্যাংকটি থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছে।

এদিকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড থেকে বিভিন্ন সময়ে দেওয়া বড় অঙ্কের প্রকৃত সুবিধাভুগী কারা, সে বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ উদ্দেশ্যে মাঠে নেমেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি তদন্ত দল। এছাড়া ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে ডেকে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। এছাড়া ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি পরিদর্শন দল ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করে। তারা ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মুনিরুল মওলার সাথে বৈঠক করেন। একই দিন সন্ধ্যায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বাংলাদেশ ব্যাংকে ডেকে পাঠানো হয়। দেশের একটি বড় শিল্পগোষ্ঠী ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের কর্তৃত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই ব্যাংকটিতে ঋণ নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম শুরু হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই শিল্পগোষ্ঠীর কর্ণধাররা বিভিন্ন কাগুজে কোম্পানি খুলে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেয়ার মাধ্যমে অর্থ সরিয়ে নেয়। এছাড়া বিদ্যমান বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি আকারের কোম্পানিকে সীমার অতিরিক্ত ঋণ দেয়া হয়। এসব ঋণ অনুমোদনে মানা হয়নি যথাযথ প্রক্রিয়া। রাখা হয়নি পর্যাপ্ত জামানত। ওই শিল্পগোষ্ঠী এসব ঋণের বড় অংশের প্রকৃত সুবিধাভোগী বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি নাবিল গ্রুপ নামে অখ্যাত একটি গ্রুপকে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসে ইসলামী ব্যাংক ও এর কর্তৃত্বে থাকা শিল্পগোষ্ঠীটি। একাধিক সংবাদপত্র বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। গত রোববার ২৭ নভেম্বর সচিবদের সাথে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ইসলামী ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির অভিযোগের

বিস্তারিত তথ্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এসব ঋণের কোনো অর্থ পাচার হয়েছে কি না, হুন্ডি কারবারে ব্যবহার হয়েছে কি না, তা যাচাই করা হবে।
#সংগৃহীত।

Logo-orginal