admin
প্রকাশ: ২০২৩-০৫-৩০ ১৪:২৭:২০ || আপডেট: ২০২৩-০৫-৩০ ১৪:২৭:২৫
আবু আবদুল্লাহ, আরটিএম নিউজ: বিশ্বের আলোচিত প্রেসিডেন্ট ও মুসলিম বিশ্বের নেতা এরদোয়ানের এ কে পার্টির মত একটি রাজনৈতিক দল বড়ই প্রয়োজন বাংলাদেশে।
তার যোগ্যতা, প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক অদূরদর্শীতা বিশ্বের মানচিত্রে গৌরবউজ্জল জায়গায় অবস্থান করছে তুরস্ক।
এরদোয়ানকে দুনিয়ার মানুষ চিনে ইসলামী নেতা হিসেবে,তিনি মুসলমানদের বিভিন্ন ইস্যুতে ইসরায়েল, রাশিয়া, আমেরিকা, ফ্রান্স, চীন ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সাথে তীব্র বিরোধিতা থাকা সত্বেও কুটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখে অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
২০১৮ ও ২০২৩ সালের নির্বাচনে এরদোয়ানের বিরোধিতা করেছে তুরস্কের বৃহত্তম ইসলামী দল সাদত পার্টি, দলটি এরদোয়ানকে ইসলামী নেতা বা ব্যক্তিত্ব মানতে নারাজ, অথচ এরদোয়ানের কৌশলী ভূমিকা মুসলিম বিশ্বের সুফল বয়ে এনেছে।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষতার ধারক কামাল আতাতুর্কের দেশ তুরস্ককে একেবারে পাল্টে দিয়েছেন রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান, তবে তুরস্কের বিশাল জনগোষ্ঠীর সমর্থন থাকায় এমন অসাধ্য সাধন করতে পেরেছেন এরদোয়ান।
৪১৫৫ কিলো মিটার ভারতীয় সীমান্ত পরিবেষ্টিত বাংলাদেশে কোন ইসলামী দল মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবেনা, যাহা প্রমাণিত সত্য।
অন্যদিকে, পারিবারিক আধিপত্য থেকে রাজনীতিকে বেরিয়ে আনতে না পারলে, স্বাধীনতার সুফল অধরাই থেকে যাবে।
ইতিহাস সাক্ষী, যে দেশে পেশীশক্তি ও পারিবারিক আধিপত্যে রাষ্ট্র পরিচালিত হয়, সে দেশের আম জনতার মৌলিক অধিকার দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রিলংকা তার জলন্ত উদাহরণ।
বাংলাদেশে বিএনপি আর আওয়ামী লীগের পর যে দলটি সাধারণ মানুষের হৃদয়ে আশা জাগিয়েছিল, সে দল হচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী।
আদর্শিক দল হিসেবে ১ নাম্বারে থাকা জামায়াত ইসলামীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধের ভূমিকা এবং দেশী ও আন্তর্জাতিক চক্রের ষড়যন্ত্রের কারণে দলটি এখন বেকাদায়, তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ণয়ের জন্য আগামী জাতীয় নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
হেফাজতে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সহ অন্যান্য ইসলামী দলগুলোর সুবিধাভোগের রাজনৈতিক তৎপরতা হতাশ করেছে এ দেশের সাধারণ জনগণকে।
ভিপি নুরুল হকের রাজনৈতিক ময়দানে আবির্ভাব খুবই আশাব্যঞ্জক হলেও, তার নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদে আগামীর ভূমিকাই নির্ধারিত হবে তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।
জামায়াত থেকে বহিস্কৃত হয়ে এবি পার্টি প্রতিষ্ঠা করে তুরস্কের মত বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা বলেছিল এক কালের জাদরেল ছাত্রনেতা সাবেক শিবির সভাপতি মুজিবুর রহমান মঞ্জু।
রাজনীতির মাঠে চাঞ্চল্য সৃষ্টি ও মিডিয়া কভারেজ পাওয়া এবি পার্টির নেতা মঞ্জুর সাথে বেশ ক’জন জাদরেল আমলা, ছাত্রনেতা ও উকিল রয়েছে, তবে তাদেরকে রাজনৈতিক ভাবে মূল্যায়ন করার মত কোন কর্মসূচী,সভা-সমাবেশ বা গণদাবী নিয়ে রাস্তায় নামতে পারেনি।
তবে দেশে রাজনৈতিক দলের অভাব নেই, অভাব রয়েছে সৎ ও যোগ্য নেতৃত্বের।
লেখাটি শুরু করা হয়েছিল, তুরস্কের নব নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রসঙ্গ দিয়ে, একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরেপক্ষ নির্বাচন উপহার দিয়ে বিশ্বব্যাপী প্রশংসা কুড়িয়েছেন তুরস্কের ক্ষমতাসীন সরকার জাস্টিস পার্টি তথা প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।
তুরস্কের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন ভাবে দুই দফায় জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করেছে, যা আমাদের দেশ আকাশ কুসুম কল্পনা, যদিও ৯১, ৯৬, ও ২০০১ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ইসির স্বাধীন ভূমিকা আশার আলো জাগিয়েছিল।
অনুরূপ ভাবে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিকাশ ও নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে না পারলে আম-জনতার মৌলিক অধিকারও প্রতিষ্ঠা হবেনা, এবং বাংলাদেশ কখনে উন্নত দেশে পরিণত হবেনা।
তাই,সংবিধানে তত্বাবধায়ক সরকারের বিধান পুনর্বহাল করে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
নিশ্চিত করতে হবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সিভিল প্রশাসনের নিরেপক্ষতা।
আমার প্রত্যাশা বাংলাদেশে আগামীর প্রজন্ম থেকে তৈরী হবে রিসেপ তাইয়েব এরদোয়ান।
লেখক: প্রবাসী কলামিস্ট।